গোটা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের ম্যাচকে কেন্দ্র করে। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই দেখতে মুখিয়ে থাকে পুরো ফুটবল বিশ্ব। গতকাল এমনই এক ম্যাচে ব্রাজিলকে তাদের নিজেদের দূর্গে হারিয়ে জয় উল্লাস করে আর্জেন্টাইন সমর্থকরা। তবে ম্যাচের শুরুতে ঘটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় দিনটি মধুর ছিল না তাদের জন্য।
বুধবার (২২ নভেম্বর) ব্রাজিলের মারাকানা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় দুই দলের রোমাঞ্চকর লড়াই। খেলার উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে সমর্থক গ্যালারিতেও। দুই সমর্থক গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে মারমুখী ভূমিকা পালন করতে দেখা যায় স্থানীয় পুলিশদের। নিজ দেশের সমর্থকদের ওপর হামলায় ক্ষুব্ধ হয়ে লিওনেল মেসি বলেন, ‘মাঠে খেলার চেয়ে এসবেই তাদের বেশি মনোযোগ থাকে। আগেও তারা (ব্রাজিল পুলিশ) এমন কাজ করেছে।’
মেসির এমন বক্তব্যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন (সিবিএফ)। এক বিবৃতিতে সিবিএফ জানায়, ‘এটি স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা দরকার যে ম্যাচ আয়োজন ও পরিকল্পনায় অত্যন্ত সতর্কতা এবং কৌশলের অবলম্বন করেছিল সিবিএফ। মাঠে থাকা দুই দলের প্রতিনিধির সঙ্গে নিয়মিত আমাদের যোগাযোগ ছিল। পুরো ম্যাচের আয়োজন বিশেষ করে নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা প্রশাসন ও নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সভায় নির্ধারণ করেছিলাম।’
নিরাপত্তা রক্ষার বিষয়টি কেবল স্থানীয় পুলিশের, সিবিএফের নয়। এমনটি উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা আরও নিশ্চিত করতে চাই যে নিরাপত্তা-সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রমের জন্য রিও জেনেইরোর সামরিক পুলিশ ও স্থানীয় অন্যান্য প্রশাসন দায়ী।’
এদিন ম্যাচের আগে আর্জেন্টিনার জাতীয় সংগীত চলাকালে ব্রাজিল সমর্থকরা দুয়ো দিতে থাকলে বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি আর্জেন্টাইন সমর্থকরা। এতে করে দুই সমর্থক গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এই সময় সমর্থকদের ওপর লাঠিচার্জ করে নিরাপত্তারক্ষীরা ।
গ্যালারিপানে ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন দু’দলের ফুটবলাররা। তবে প্রাথমিকভাবে ব্যর্থ হয়ে প্রতিবাদ স্বরূপ মাঠ ছেড়ে উঠে লকাররুমে চলে যান আর্জেন্টিনা দলের ফুটবলাররা। পরবর্তীতে ম্যাচ শুরু হয়েছিল নির্ধারিত সময়ের আধা ঘন্টা পর।
গ্যালারির উত্তেজনা ছড়িয়েছিল ফুটবলের মাঠেও। এক লাল কার্ড ও ৪২ ফাউলের ম্যাচে ব্রাজিলকে স্তব্ধ করে ১-০ গোলের ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা। এই জয়ে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে আলবিসেলেস্তেরা।
ম্যাচ শেষে মেসি বলেছিলেন, ‘আমরা দেখেছি পুলিশ কিভাবে মানুষের ওপর চড়াও হচ্ছিল। আমাদের পরিবারেরও বেশ কয়েকজন সদস্যও ছিল ওখানে। এর আগে কোপা লিবার্তাদোরেসের ফাইনালেও একই কাজ করেছে তারা। পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টায় আমরা ফের মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’
আরও পড়ুন: ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিত করতে যা করতে হবে ব্রাজিলকে
ক্রিফোস্পোর্টস/২৩নভেম্বর২৩/এফএস/এজে