সাধারণত ক্রিকেটে দুই দলের রান সংখ্যা সমান হলে ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে৷ ড্র হওয়া ম্যাচে ফলাফল নির্ধারণ করতে ক্রিকেটে চালু হয় সুপার ওভার পদ্ধতি৷ ২০০৮ সালে অকল্যান্ডে নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার ম্যাচে সর্বপ্রথম সুপার ওভারের প্রবর্তন ঘটে৷ এক নজরে দেখে নিন ক্রিকেটে সুপার ওভারের যত নিয়ম।
তবে নানা সময়ে সুপার ওভারে গড়ানো ম্যাচ নিয়ে অনেক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে৷ বিতর্কের মূলে ছিল সুপার ওভারের ক্ষেত্রে আইসিসির বেঁধে দেওয়া নিয়মকানুন৷ ২০১৯ সালে লর্ডসে নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ডের মধ্যকার বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচে সুপার ওভার নিয়ে বিতর্ক আরো জোরালো হয়৷
ম্যাচটিতে উভয় দলের ইনিংস শেষে রান সংখ্যা সমান হয়ে যায়। শুরুতে টসে জিতে ৮ উইকেটে ২৪১ রান করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে নির্ধারিত ওভারে শেষে সবকটি উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডও সংগ্রহ করে ২৪১ রান। তাই ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। সেখানেও নেই ম্যাচের কোনো ফলাফল।
ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে ১৫ রান করে। জবাবে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহও ১৫। এরপর ম্যাচ গড়ায় আরেকটি সুপার ওভারে। তবে টানা দুইটি সুপার ওভারেও ম্যাচের ফলাফল তখনো আসেনি৷ তাই বাউন্ডারি হাঁকানোর সুবাদে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড। আইসিসির এমন নিয়ম নিয়ে ক্রিকেটীয় আলোচনার টেবিলে তখন সমালোচনার ঝড় উঠেছিল।
এরপর সে বছরই আইসিসি তড়িঘড়ি করে নিয়মে নতুনত্ব আনে। নতুন নিয়মে ম্যাচ ড্র হওয়ার কোনো সুযোগ নেই৷ বরং ফলাফল না আসা পর্যন্ত চলতে থাকবে সুপার ওভার৷
তবে এরপরও বিতর্কের ইতি ঘটেনি। সম্প্রতি বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত ভারত-আফগানিস্তান মধ্যকার তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও সুপার ওভারেও সমালোচনা হয়৷ রোমাঞ্চকর এ ম্যাচে ভারত জয়ী হলেও অধিনায়ক রোহিত শর্মার উপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়৷
ভারতের দেওয়া ২১২ রানের লক্ষ্য আফগানিস্তান ৬ উইকেট হারিয়ে পৌঁছে যায়৷ ফলে মূল ম্যাচ ড্র হওয়ার পর ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে৷ প্রথম সুপার ওভারে ফল না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় দ্বিতীয় সুপার ওভারে। এরপর জয় পায় ভারত৷ তবে প্রথম সুপার ওভারে ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা ঠিকমতো দৌঁড়াতে পারছিলেন না৷ তাই তিনি স্বেচ্ছায় বেরিয়ে গিয়ে রিঙ্কু সিংকে ব্যাটিংয়ের সুযোগ করে দেয়৷ রোহিতের এভাবে স্বেচ্ছায় বের হয়ে যাওয়া রিটার্ড আউট নাকি রিটার্ড হার্ট তা নিয়ে দেখা দিয়েছে বিভ্রান্তি।
কারণ আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ব্যাটার আগের সুপার ওভার এ আউট হলে পরের সুপার ওভারে আর ব্যাটিং করতে পারবেন না। সেদিক থেকে রোহিতে স্বেচ্ছায় সরে যাওয়া আউট নাকি নটআউট তা ছিল ধোঁয়াশা৷
সুপার ওভারে রোহিতের এভাবে বেরিয়ে যাওয়া রিটায়ার্ড আউট না রিটায়ার্ড হার্ট নট-আউট হিসেবে গণ্য হচ্ছে তা আইসিসির নিয়মে পরিষ্কার নয়। তাই আবারো বিতর্কের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে আইসিসিকে।
এক নজের ক্রিকেটের সুপার ওভারের নিয়ম
সুপার ওভারে খেলোয়াড় নির্বাচন
প্রতিটি দলে শুধু মাত্র নির্বাচিত ১১ জন খেলোয়াড়ের মধ্য থেকে ৩ জন ব্যাট ও ১ জন বোলিং করতে পারবেন। প্রত্যেক দল এক ওভার পাবে, যে বেশি রান করবে, সেই দলকে জয়ী মেনে নেওয়া হবে।
সুপার ওভারে ব্যাটিং
মূল ম্যাচে যারা পরে ব্যাট করছেন তারা সুপার ওভারের সময় আগে ব্যাট করবেন। যদি কোনো ব্যাটসম্যান আগের সুপার ওভারে আউট হয়ে যায় তো তিনি পরের সুপার ওভারে ব্যাটিং করার জন্য অযোগ্য হবেন।
সুপার ওভারে ফিল্ডিং
সুপার ওভারে মূল ম্যাচের বল শেষ করার পর ফিল্ডিং পরিবর্তন করতে হবে।
ফলাফল
ফল নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত সুপার ওভার চলতে থাকবে৷ যাদের রান বেশি হবে তারাই ম্যাচে জয়ী হবে৷ সুপার ওভারে প্রত্যেক দল এক ওভার পাবে, যে বেশি রান করবে, সেই দলকে জয়ী মেনে নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: বিপিএলে কে কতবার শিরোপা জিতেছে
ক্রিফোস্পোর্টস/২০জানুয়ারি২৪/টিএইচ/এফএএস