একটি দলের ভালো করার মূল ভূমিকা থাকে দল গঠন করা। আর সেই গুরু দায়িত্ব বহন করেন প্রধান নির্বাচক। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে এই দায়িত্বে ছিলেন মিনহাজুল আবেদীন নান্নু ও হাবিবুল বাশার সুমন। কিন্তু এবার সেটা পরিবর্তন হয়েছে। নতুন দায়িত্বে এসেছেন গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। পরিবর্তনের আশায় এরপর নড়েচড়ে বসছেন সবাই।
জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেল নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে অনেক দিন ধরে। সেই সমালোচনার জেরে নান্নু-সুমনের মেয়াদ আর দীর্ঘয়িত হলো না। বরং টাইগার ক্রিকেটের দল সাজানোর গুরুদায়িত্ব এখন লিপু, হান্নান সরকার ও আব্দুর রাজ্জাক।
গত সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বোর্ড সভাশেষে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। আসন্ন শ্রীলঙ্কা সিরিজ থেকেই দায়িত্ব পালন করবেন নতুন এই প্যানেল।
এদিকে গাজী আশরাফ হোসেন লিপু আগে ছিলেন বিসিবির পরিচালনা কমিটিতে। বিপিএল গভর্নিংবডির চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। প্রথমবারের মতো প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পাওয়ার বিষয়টি পাপনে ফোনকলে জানতে পেরেছিলেন লিপু।
দায়িত্ব পাওয়ার পর গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর ক্যারিয়ার নিয়ে জানতে চাচ্ছেন অনেক। বাংলাদেশের ক্রিকেটের সূচনালগ্নে লিপু সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। মার্চ, ১৯৮৫ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দলকে নেতৃত্ব দেয়া শুরু করেন লিপু। পরে সেটা ১৯৯০ আইসিসি ট্রফি প্রতিযোগিতা পর্যন্ত ছিলেন টাইগার অধিনায়ক। কিন্তু এর মধ্যে ম্যাচ খেলেন মাত্র ৭টি। বাংলাদেশের ম্যাচই ছিল ৭টি।
ওই ৭ ম্যাচে লিপু সব মিলিয়ে রান করেন মাত্র ৫৯। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দুই ম্যাচে ১২, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দুই ম্যাচে ১০, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৮, ভারতের বিরুদ্ধে ১১ ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১৮ রান করেন লিপু। এই ছিল তার খেলোয়াড়ি জীবনের সাফল্য।
জাতীয় দলের দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ সফল ছিলেন তিনি। ঢাকা লীগের আবাহনী ক্রীড়া চক্রের দায়িত্ব পালনসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট দলেরও নেতৃত্ব দেন। জানুয়ারি, ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৫ জাতীয় ক্রিকেট দলকে সফরকারী নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে অংশ নেন।
গুরু দায়িত্ব পাওয়ার পর লিপু জানান, আমার জন্য সম্পূর্ণ নতুন একটা ভূমিকা। এর আগেও প্রধান নির্বাচক হওয়ার প্রস্তাব পেয়েছিলাম। কিন্তু ব্যক্তিগত কারণে প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারিনি। এবার যখন বিসিবি থেকে প্রস্তাব পেলাম, মনে হলো আমার জন্য নতুন কিছু করার সুযোগ। প্রস্তাবটা গ্রহণ করি।
কিভাবে দল গঠন করবেন বা দায়িত্ব পালন করবেন সেটাও খোলাসা করেছেন লিপু। জানিয়েছেন নিজের চ্যালেঞ্জের কথা। তিনি বলেন, সব দায়িত্বেই কোনো না কোনো চ্যালেঞ্জ থাকে। এখানেও থাকবে স্বাভাবিক। তবে চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করার মধ্যেই আনন্দ বেশি থাকে। আশা করি যারা আমার সঙ্গে কাজ করবেন তাদের সঙ্গে আমি ভালোভাবেই আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পারব।
আরও পড়ুন: সাকিবকে নেতৃত্ব থেকে সরানোর ব্যাখ্যা দিলেন পাপন
ক্রিফোস্পোর্টস/১৩ফেব্রুয়ারি২৪/এজে