আগামী ১ জুন থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে শুরু হতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর। ইতোমধ্যে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত সবগুলো দল। এর মধ্যেই বিশ্বকাপের রেকর্ডগুলো কার কার দখলে আছে সেগুলো প্রকাশ করলো আইসিসি। আজ (১০ মে) এক বিবৃতির মধ্য দিয়ে বিগত আট আসর মিলে বিভিন্ন রেকর্ডের তালিকা প্রকাশ করে তারা।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম সংস্করণটির বৈশ্বিক আসর প্রথম হয়েছিল ২০০৭ সালে। সেবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল ভারত। এরপর ২০০৯, ২০১০, ২০১৪, ২০১৬, ২০২১ ও ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই আট আসরে অংশগ্রহণ ও পারফরম্যান্সের বিচারে বিভিন্ন রেকর্ডে নাম উঠেছে সাকিব আল হাসান, রোহিত শর্মা, ক্রিস গেইল, বিরাট কোহলি ও এবিডি ভিলিয়ার্সের মত খেলোয়াড়দের।
সর্বোচ্চ অংশগ্রহণ রোহিত-সাকিবের –
আগের আট বিশ্বকাপেই খেলেছেন এমন ক্রিকেটার আছেন মাত্র দুই জন। এদের একজন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা, দ্বিতীয় জন সাকিব আল হাসান। আসন্ন বিশ্বকাপের জন্য বিসিসিআই ঘোষিত স্কোয়াডেও দলপতি হিসেবে আছেন রোহিত। আর বাংলাদেশের অঘোষিত স্কোয়াডেও সাকিবের থাকা প্রায় নিশ্চিত। অর্থাৎ দু’জনেরই নবম বিশ্বকাপ আসর হতে যাচ্ছে এবার।
সবগুলো বিশ্বকাপে এ দু’জন খেললেও ম্যাচের হিসেবে সাকিবের চেয়ে এগিয়ে রোহিত। রোহিতের মোট ম্যাচ সংখ্যা ৩৯ টি, আর সাকিব খেলেছেন ৩৬ টি।
সর্বোচ্চ রান বিরাট কোহলির –
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ভারতীয় রান মেশিন বিরাট কোহলি। ১ হাজার ১৪১ রান তিনি শুধু বিশ্বকাপেই করেছেন। বর্তমানে খেলছেন আর কোন ক্রিকেটারের বিশ্বকাপে হাজার রান নেই। আর বর্তমানে আইপিএলে ব্যাট হাতে যেমন ফর্মে আছেন তাতে আসন্ন বিশ্বকাপেও রান ফুলঝুরি দেখা যেতে পারে তার ব্যাট থেকে।
বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১ হাজার ১৬ রান মাহেলা জয়াবর্ধনের। তিনে থাকা ক্রিস গেইলের রান ৯৬৫ ও ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা ৯৬৩ রান তুলে তালিকার চারে অবস্থান করছেন।
সর্বোচ্চ উইকেট সাকিবের –
বিশ্বকাপ ইতিহাসে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বাংলাদেশি অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। বিগত আট আসরে সাকিব মোট ৪৭ উইকেট শিকার করেছেন। তালিকার দুইয়ে থাকা শহিদ আফ্রিদির উইকেট সংখ্যা ৩৯ টি আর তিনে থাকা লাসিথ মালিঙ্গার উইকেট ৩৮ টি।
অবশ্য সাকিব ছাড়া এ দু’জনই অবসরে যাওয়ায় পার্থক্যটা নিশ্চয়ই আরও বাড়িয়ে নিতে চাইবেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
সবচেয়ে বেশি ক্যাচ ডি ভিলিয়ার্সের –
বিশ্বকাপে ফিল্ডার হিসেবে সর্বোচ্চ ২৩ টি ক্যাচ ধরেছেন সাবেক প্রোটিয়া খেলোয়াড় এবিডি ভিলিয়ার্স। ২১ টি ক্যাচ নিয়ে ডেভিড ওয়ার্নার তালিকার দুইয়ে আছেন। মার্টিন গাপটিলের নেওয়া ক্যাচ সংখ্যা ১৯ টি। তাই আগামী বিশ্বকাপে এবিডি ভিলিয়ার্সকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মোক্ষম সুযোগ ওয়ার্নারের সামনে।
সর্বোচ্চ ডিসমিসাল ধোনির –
ভারতের বিশ্বকাপজয়ী সাবেক অধিনায়ক ধোনি ৩২ ডিসমিসাল করে তালিকার শীর্ষে আছেন। ৩০ ডিসমিসাল করে পাকিস্তানি উইকেটরক্ষক কামরান আকমল দুইয়ে।
এছাড়া উন্ডিজের দীনেশ রামদিনের ২৭ টি, কুমার সাঙ্গাকারার ডিসমিসাল সংখ্যা ২৬ টি। আর বর্তমানে খেলছেন এমন উইকেটরক্ষকদের মধ্যে কুইন্টন ডি ককের সর্বোচ্চ ২২ টি ডিসমিসাল আছে।
সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস নিউজিল্যান্ডের ব্রেন্ডন ম্যাককালামের দখলে। ২০১২ সালের আসরে বাংলাদেশের বিপক্ষে পাল্লেকেলেতে ৫৮ বলে ১২৩ রানের ইনিংস খেলে এই কীর্তি গড়েন তিনি। ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে গেইলের ১১৭ রানের ইনিংস তালিকার দুইয়ে আছে। তিনে আছে ইংলিশ ওপেনার অ্যালেক্স হেলসের ইনিংস। ২০১৪ বিশ্বকাপে চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৬৪ বলে ১১৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।
দ্রুততম শতক –
বিশ্বকাপে দ্রুততম ৪৭ বলে শতকের কীর্তি ক্রিস গেইলের। ২০১৬ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই রেকর্ড গড়েছিলেন। দ্বিতীয় দ্রুততমও গেইলের দখলে। ২০০৭ সালপ ৫০ বলে শতক হাঁকান এই ক্যারিবীয়। বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাককালামের ৫১ বলে হাঁকানো শতকটি তালিকার তৃতীয় দ্রুততম।
সর্বোচ্চ ছয় গেইলের –
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সর্বোচ্চ ৬৩ টি ছক্কা মেরেছেন ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব ক্রিস গেইল। এমনকি তিনি ছাড়া বিশ্বকাপে আর কোন ব্যাটার ৫০ টি ছক্কাও হাঁকাতে পারেননি। দুইয়ে থাকা রোহিত শর্মা ছয় মেরেছেন ৩৫ টি। জস বাটলারের ছক্কা ৩৩ টি। শেন ওয়াটসন ও ডেভিড ওয়ার্নার ৩১ টি ছক্কা মেরে যৌথভাবে তালিকার চারে অবস্থান করছেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপে আইপিএলের মতো ব্যাট করার নিশ্চয়তা দিচ্ছেন না হেড
ক্রিফোস্পোর্টস/১০মে২৪/এমএস/বিটি