টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ- ২০২৪ এ সুপার এইটে বাংলাদেশকে হারিয়ে আফগানিস্তানের ইতিহাস গড়ার দিনে শিরোনাম হয়েছেন গুলবাদিন নাইব৷ তবে ম্যাচজয়ী কোনো পারফরম্যান্সের জন্য নয়, বরং অভিনয়ের জন্য৷ শুনতে অদ্ভুত মনে হলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে এমন নজির দেখান আফগান এই অলরাউন্ডার। গুলবাদিনের চোটের ‘অভিনয়’, কি বলছে ক্রিকেট আইন?
অভিনয়ের প্রদর্শনী হয় ম্যাচের ১২তম ওভারে৷ এর আগেই বৃষ্টিতে ম্যাচ কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে৷ তখন আবারও সেন্ট ভিনসেন্টের আকাশে বৃষ্টি উঁকিঝুঁকি দিচ্ছিল, বৃষ্টি আইনে আফগানিস্তান ততক্ষণে ২ রানে এগিয়ে৷ তাই ম্যাচের সময় নষ্ট করতে ড্রেসিংরুম থেকে ইশারা দিচ্ছিলেন আফগান কোচ জোনাথন ট্রট। কোচের ইশারা পেয়ে স্লিপে দাঁড়ানো গুলবাদিন ক্র্যাম্পের অভিনয় করে পায়ে হাত দিয়ে মাঠে শুয়ে পড়েন৷
ততক্ষণে টিভির পর্দা কিংবা সরাসরি খেলা দেখা দর্শকের কাছে গুলবাদিনের অভিনয়ের মূল কারণ স্পষ্ট হয়ে যায়৷ বৃষ্টিতে মাঠ ঢেকে দেওয়ার আগে আর যেন খেলা না হয় সে জন্য এমন অভিনয় করেন সাবেক আফগান অধিনায়ক। কেননা ম্যাচ জিতলেই ইতিহাস গড়ে বিশ্বকাপের সেমি নিশ্চিত আফগানদের, অন্যদিকে হারলেই অজিদের কপাল খুলে যেত৷
আরও পড়ুন :
» গুলবাদিনের চোটের ‘অভিনয়’ নিয়ে তামিমের মন্তব্য
» আইপিএলের সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বন্ধ রাখা উচিত: গেইল
» এলপিএলে আসছে পাওয়ার প্লের নতুন নিয়ম
অবশ্য, তখন আর বৃষ্টি নামেনি৷ তবে পরক্ষণেই বোলিংয়ে এসে অবাক করে দেন গুলবাদিন। ১৫তম ওভারে এসে বোল্ড করেন তানজিম হাসানকে। এরপর নাভিন-উল-হক শেষ পেরেক ঠুকে দেন বাংলাদেশের কফিনে৷ ইতিহাস গড়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে রাশিদ খানের দল৷
ম্যাচ শেষে অবশ্য আফগানদের জয়ের চেয়ে গুলবাদিনের এমন কাণ্ড নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে বেশি কথা চালাচালি হয়৷ ম্যাচটিতে ধারাভাষ্য কক্ষে থাকা ইয়ান স্মিথ নিজের এক্স একাউন্টে লিখেছেন, ‘গত ছয় মাস ধরেই আমার হাঁটুতে সমস্যা। আমি খেলার পরে সরাসরি গুলবাদিন নাইবকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছি! তিনি এই মুহূর্তে বিশ্বের অষ্টম আশ্চর্য।’
ভারতীয় ক্রিকেটার রবিচন্দ্রন অশ্বিন যেন এক কাঠি সরেস৷ এক্স একাউন্টে মজা করে লিখেছেন, ‘গুলবাদিনের জন্য লাল কার্ড।’
গুলবাদিনের চোটের ‘অভিনয়’, কি বলছে ক্রিকেট আইন?
গুলবাদিন নাইবের এমন কাণ্ডের পর তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে কিনা, এ নিয়ে এখনো কিছু জানায়নি ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক— আইসিসি৷ সংস্থাটির প্লেইং কন্ডিশন অনুযায়ী, যদি কোনো খেলোয়াড় ইচ্ছাকৃতভাবে সময় নষ্ট করেন তাহলে তা অনায্য বলে বিবেচিত হবে। এছাড়া অনফিল্ড আম্পায়ার যদি মনে করেন সময় নষ্ট ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে তাহলে তারা ম্যাচ রেফারির কাছে রিপোর্ট জানাতে পারেন৷
এক্ষেত্রে রিপোর্ট প্রমাণিত হলে গুলবাদিনের এমন কাণ্ড লেভেন ওয়ান বা টু এর অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। এতে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে ম্যাচ ফির ১০০ শতাংশ জরিমানা অথবা তার নামের পাশে দুটি সাসপেনশন পয়েন্ট যুক্ত হতে পারে৷
তবে শাস্তির বিষয়টি পুরোপুরিভাবে নির্ভর করছে অনফিল্ড আম্পায়ারের দায়িত্বে থাকা ল্যাংটন রুসেরে ও নিতিন মেননের ওপর৷ তারা যদি গুলবাদিন নাইব ইচ্ছাকৃতভাবে সময় নষ্ট করেছেন বলে অভিযোগ এনে ম্যাচ রেফারির কাছে রিপোর্ট পেশ করেন তাহলে আফগান এই ক্রিকেটারকে শাস্তির কবলে পড়তে হতে পারে।
ক্রিফোস্পোর্টস/২৭জুন২৪/টিএইচ/এসএ