গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে যোগদান করেন সাকিব আল হাসান। আওয়ামী লীগের হয়ে মাগুরা-১ আসন থেকে নির্বাচন করে জয়লাভ করেন এই তারকা। তবে তার রাজনীতিতে যোগদান নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। একটি রাজনৈতিক দলের ব্যানারে গিয়ে কাজ করায় তার ভক্তরাও অনেক আগেই দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। তবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নীরব থাকার পর দেশের বেশিরভাগ মানুষের কাছেই নিজের গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছেন সাবেক টাইগার কাপ্তান।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বাতিল ঘোষণা করায় সাকিবও তার পদ হারান। কিন্তু শুধু ক্ষমতা হারানোর মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ নয়। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বিপাকে পড়েছে দলের নেতাকর্মীরাও। মাশরাফির বাড়িতে আগুন, সাকিবের পার্টি অফিসে আগুনসহ অনেকে নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা করেছে বিক্ষোভকারীরা। এর ফলে অনেকে দেশ ছেড়েছেন, আবার অনেকে দেশেই আত্মগোপনে রয়েছেন।
সাকিব আগে থেকেই কানাডায় অবস্থান করছিলেন। তবে এমন পরিস্থিতিতে তার দেশে ফেরা নিয়ে শঙ্কা দেখা দেওয়ার পাশাপাশি তার ক্রিকেট খেলাও অনিশ্চিত হয়ে গেছে। আসন্ন পাকিস্তান সিরিজে তিনি দলে থাকলেও এখনই দেশে ফিরছেন না সাকিব। কানাডা থেকে পাকিস্তানেই সরাসরি দলের সঙ্গে যোগ দেবেন এই অলরাউন্ডার।
আরও পড়ুন:
» রাজনৈতিক নয়, মেধার বিবেচনায় দলে সাকিব: প্রধান নির্বাচক
» সাবেক ইংলিশ ক্রিকেটার গ্রাহাম থর্প এভাবে চলে গেলেন!
সম্প্রতি জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের রাজনীতিতে যোগদানের বিষয়টির ঘোর সমালোচনা করেছেন নুরুল হাসান সোহান। তিনি এই বিষয়টির বিপক্ষে তার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। এবার এ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের রাজনীতিতে যোগদানের ক্ষেত্রে খেলোয়াড়দের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকেও কাঠগড়ায় দাড় করান লিপু।
সোমবার (১২ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রসঙ্গে লিপু বলেন , ‘জাতীয় দলে থাকাকালীন কেউ রাজনীতি করতে পারবেন না- এ কথাটা কাল সোহান বলেছে। এটার সঙ্গে আমি আরো দুটি ইস্যু তুলে ধরতে চাই, যেখানে সংস্কার দরকার। খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রে যেমন, তিনি রাজনীতিতে যোগদান করতে পারবেন কি পারবেন না, তেমনি জাতীয় দলকে প্রতিনিধিত্ব করার সময় কোনো খেলোয়াড়কে কি রাজনৈতিক দলগুলোর টানা উচিত? তারাও তো দেশ ও জনগণের জন্যই কাজ করে। সুতরাং এটা একমুখী ট্র্যাফিক নয়। শুধু একজন খেলোয়াড়কেই দোষ দিলে চলবে না, রাজনৈতিক দলগুলোকেও দোষ দিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘খেলা এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে আপনি কোনটাকে প্রাধান্য দেবেন। এটা নিয়ে একটা নির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা থাকা উচিত। এর ফলে খেলোয়াড়রা রাজনীতিতে জড়ানোর আগে তার প্রথম প্রাধান্যের কথা চিন্তা করবেন। আমার মনে হয় এই রাস্তাটা বন্ধ হওয়া উচিত। যদি আপনি দেশের সম্পদ হন, আপনাকে সে পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট বিনিয়োগ করা হয়। তারপর আপনি খেলোয়াড় হিসেবে দেশকে কিছু না দিয়ে যদি কোন রাজনৈতিক দলে যোগ দেন সেটা ঠিক মনে হবে না।’
ক্রিফোস্পোর্টস/১২আগস্ট২৪/বিটি