২১ বছর আগে এই পাকিস্তানেই কেঁদেছিলেন ক্রিকেটার খালেদ মাহমুদ সুজন। ২০০৩ সালে মুলতান টেস্টে টাইগারদের জয়ের নৌকা তীরে এসে ডুবে গিয়েছিল। দীর্ঘ দিন পর ২০২৪ সালে পিন্ডি টেস্টে কেঁদেছেন টিম বাংলাদেশের বোর্ড কর্তা হয়ে।
তবে এবারের কান্না খুশির। প্রথমবারের মতো অধররা জয়টাকে খুব কাছে থেকে দেখেছেন সুজন। তাই নিজের আবেগ সামলাতাতে পারেননি।
পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডিতে ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের পর সংবাদ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সুজন বলেন, ২০০৩ সালটা আমাদের জন্য অন্যরকম হতে পারতো। তখন হয়তো আমাদের তেমন অভিজ্ঞতা ছিল না। সেই সঙ্গে তখন রিভিউ সিস্টেম ছিল না। কেননা রিভিউ সিস্টেমটা কত গুরুত্বপূর্ণ তা এই টেস্টে সবাই টের পেয়েছে। দেখুন, শান মাসুদের কটটা আম্পায়ার আউট দিছিল না। ডিআরএসে আমরা সেই উইকেটটা পেলাম।
আরও পড়ুন :
» সচেতন ছিল না পাকিস্তান, বাংলাদেশের প্রাপ্য কৃতিত্ব: আফ্রিদি
» রিয়ালের হয়ে ইতিহাস গড়লেন ব্রাজিলিয়ান ‘বিস্ময় বালক’
» পেসারদের টেস্টে পার্থক্য গড়ে দিলেন স্পিনাররাই
তিনি বলেন, ২১ বছর আগের সেসব আর বোধহয় মনে থাকবে না। এখন শুধু রাওয়ালপিন্ডির টেস্টটাই মনে থাকবে। এটা অনেক খুশির ব্যাপার।
এদিকে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে বাংলাদেশের স্মৃতি মোটেই সুখকর ছিল না। মোট ১৩ টেস্টের ১২টিতেই ছিল হার— একটিতে ড্র। এবার সেই দুঃসহ স্মৃতি মুছে গেল। এখন পরিসংখ্যানের খাতায় ১টি জয় যুক্ত হলো।
২০২৪ সালে এসে পাকিস্তানে টাইগারদের আক্ষেপ ঘুচল। রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটে জয় পেয়েছে শান্ত-সাকিবরা। আর এতেই প্রথমবার পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ।
যেমন ছিল ইতিহাস গড়া টেস্ট
প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে ৪৪৮ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। সৌদ শাকিল ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের সেঞ্চুরি ও সায়েম আইয়ুবের হাফ সেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহ করে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় স্বাগতিকেরা। জবাবে সবকটি উইকেট হারিয়ে চতুর্থ দিনের শেষ ভাগে এসে বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংস শেষ হয় ৫৬৫ রানে।
১১৭ রানের বড় লিড নেয় সফরকারীরা। চতুর্থ দিনের শেষ সময়ে মাত্র ১ উইকেট হারায় শান মাসুদের দল। তখন পর্যন্ত দেখে মনে হচ্ছিল ড্রয়ের দিকেই আগাচ্ছে রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট। কিন্তু শেষ দিনে এসেই পাশার দান যেন পুরোপুরি উল্টে গেল।
নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ে স্বাগতিকদের ব্যাটিং লাইন আপ। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোয় দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৬ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান।
শেষ দিন চা বিরতির আগে টাইগারদের ইতিহাস গড়তে লক্ষ্য দাঁড়ায় মাত্র ৩০ রানের। পাকিস্তানকে প্রথম টেস্ট ম্যাচ হারানোর সুবর্ণ সুযোগটি আর হাতছাড়া করেনি মুশফিক-শান্তরা। লক্ষ্য তাড়া করে কোনো উইকেট না হারিয়ে ১০ উইকেটের সহজ জয় তুলে নেয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
ক্রিফোস্পোর্টস/২৬আগস্ট২৪/এসএ