বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটারের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে প্রধান কোচের পদ থেকে বরখাস্ত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তাকে শোকজ এবং কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়ে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেয় বিসিবি। তবে বোর্ডের তোলা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এই লঙ্কান কোচ।
গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে স্পিনার নাসুম আহমেদকে ড্রেসিংরুমে চড় অভিযোগ উঠেছিল হাথুরুসিংহের বিরুদ্ধে। বিশ্বকাপ শেষে বিষয়টি সামনে আসলে বিষয়টি তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় বিসিবি। সেখানে হাথুরুসিংহের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ পাওয়ায় তাকে বরখাস্ত করেছেন বিসিবি বস ফারুক আহমেদ।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাথুরুসিংহে। বিসিবির নোটিশের জবাব দিয়ে গতকাল বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিসিবির সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরীকে ই-মেইলে জবাব পাঠান হাথুরুসিংহে। তবে তিনি চিঠিতে কি জবাব দিয়েছেন তা বিসিবি প্রকাশ করেনি। অবশেষে তিনি নিজেই গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তার চিঠির কথা জানিয়েছে।
সেখানে নাসুমকে নিয়ে তোলা অভিযোগ অস্বীকার করে এই কোচ বলেন,‘নাসুমকে নিয়ে আনা অভিযোগের ঘটনাটি খেলোয়াড়দের ড্রেসিংরুমে ঘটেছিল, যেখানে ম্যাচ চলাকালে সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকে। খেলার প্রতিটি মুহূর্ত সঙ্গে সঙ্গে ধারণ করে অসংখ্য ক্যামেরা। আমি অভিযোগকারীকে যাচাই করার সুযোগ পাইনি বা কোনও সাক্ষীও পাইনি, যদি আদৌ কোনো সাক্ষী থেকে থাকে।’
আরও পড়ুন:
» মেসি সর্বকালের নয়, তার যুগের সেরা : রোনালদিনহো
» রাচিনের সেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহ নিউজিল্যান্ডের
» ডাবল সেঞ্চুরি করে যে বিশ্ব রেকর্ডের মালিক হলেন কিশান
তার বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগটি কর্তৃপক্ষ থেকে না এসে ইউটিউবে একজন ব্যক্তির মাধ্যমে কেন সামনে এলো সেটা নিয়ে বিসিবিকে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন এই কোচ, ‘ঘটনা ঘটে থাকলে সেই খেলোয়াড় ওই ইভেন্টের পরে দ্রুততম সময়ে টিম ম্যানেজার বা কোনো কর্তৃপক্ষকে কেন জানায়নি। যদি অভিযোগ করেও থাকে, তাহলে কেন আমাকে প্রশ্ন করা হয়নি কিংবা আমার কাছ থেকে কিছু জানতে চায়নি। কেন এটি কয়েক মাস পরে ইউটিউবে একজন ব্যক্তির মাধ্যমে প্রকাশিত হলো?’
এদিকে, অতিরিক্ত ছুটি কাটানোর অভিযোগের প্রসঙ্গে হাথুরুসিংহে বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে ছুটি নেওয়ার সময় সিইও এবং ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান উভয়ের কাছ থেকেই অনুমতি চেয়েছি এবং অনুমতি পেয়েই ছুটি কাটিয়েছি। কখনো বিসিবি আমাকে বলেনি যে তারা আমার ছুটি নিয়ে অসন্তুষ্ট। বরং যতবারই আমি ছুটি চেয়েছি, বিসিবি তা মঞ্জুর করেছে। তাদের অনুমতি ছাড়া আমি কখনও ছুটি কাটাইনি।’
তাছাড়া বিসিবির সকল অভিযোগ পূর্বপরিকল্পিত দাবি করে এই লঙ্কান বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে এসব অভিযোগ পূর্বপরিকল্পিত। নতুন সভাপতি দায়িত্ব পাওয়ার প্রথম দিনেই প্রধান কোচ অপসারণের ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন। এরপর নতুন আরেকজন প্রধান কোচ নিয়োগের মাত্র চার ঘণ্টা আগে শোকজ নোটিশ পেয়ে আমি অবাক ইয়েছি। নোটিশে বলা হয়েছে যে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য আমার হাতে মাত্র ৪৮ ঘণ্টা সময় আছে। এগুলো কর্মকাণ্ডের পেছনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে গুরুতর প্রশ্ন তোলে।’
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বাংলাদেশের প্রধান কোচের পদ থেকে বরখাস্ত করা হয় চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে। গতকাল এই কোচের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে বিসিবি। তার পরিবর্তে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে যোগ দিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক বিশ্বকাপজয়ী কোচ ফিল সিমন্স।
ক্রিফোস্পোর্টস/১৮অক্টোবর২৪/বিটি