সদ্য পর্দা নেমেছে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের এবারের আসর। গোটা আসর জুড়ে ব্যক্তিগত পারফরমেন্সে উজ্জ্বল ছিলেন ঋতুপর্ণা চাকমা। হয়েছেন টুর্নামেন্ট সেরাও। গতকাল (বৃহস্পতিবার) দেশে ফিরে গণমাধ্যমকে নিজের অনুভূতি কথা জানিয়েছেন সাফ জয়ী এই ফুটবলার।
দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা নারী ফুটবলার হয়ে কেমন লাগছে এমন প্রশ্নের জবাবে ঋতুপর্ণা বলেন,’ সত্যি বলতে আমি কখনও ভাবিনি দক্ষিণ এশিয়ার সেরা খেলোয়াড় হব। সত্যিই এটা স্বপ্নের মতো। সব কিছু মিলিয়ে ভালো লাগছে। চেষ্টা করব সব সময় নিজের সেরাটা দিয়ে খেলার।’
বাংলাদেশ দলের সব স্ট্রাইকাররা আলোচনায় থাকলেও আড়ালে থেকে যান ঋতুপর্ণা। তবে এবার দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। এখন সবথেকে বেশি আলোচনায় টুর্নামেন্ট সেরা এই খেলোয়াড়। তিনি বলেন,’ আমি যে জায়গায় খেলি, আসলে সেখানে গোল বানিয়ে দেওয়াটাই আসল কাজ। আর আমি আমার কাজ করি । ব্যক্তিগতভাবে আলোচনায় না থাকতে পারলেও আমি অনেক খুশি। চেষ্টা করি যত কম আলোচনায় আসা যায়।আপনাদের আশীর্বাদেই এত দূর আসতে পেরেছি’।
ফাইনালে তার গোল এর বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে ঋতুপর্ণা বলেন,’ ওই জায়গা থেকে শট করার প্রয়োজন ছিল, তাই করেছি। সত্যি বলতে এটা গোল হবে কখনও ভাবিনি। অনেকেই বলে দূর থেকে শট নেওয়া ভালো আমার জন্য ভালো। আসলে আমার নিজের কোনো কিছুই ভালো লাগে না। আমি মনে করি এখনও অনেক ভুল হয়, শেখার অনেক বাকি।’
রাঙ্গামাটি পাহাড়ি এলাকায় এবং চাকমা পরিবারের বেড়ে ওঠা ঋতুপর্ণার। সেখান থেকে উঠে এসে বর্তমানে দক্ষিণের এশিয়ার সেরা নারী ফুটবলার তিনি। অনেক কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়েছে এই মিডফিল্ডারকে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,’ অবশ্যই অনেক চ্যালেঞ্জিং আমার জন্য। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা নয়, এটা আমাকে শিখতে হয়েছে। অনেক উচ্চারণ এখনও ভালোভাবে পারি না। আমাদের আদিবাসীদের (ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী) জন্য জাতীয় পর্যায়ে যাওয়া অনেক কঠিন। আপনাদের সকলের সহযোগিতায় আমরা দেশকে সাফল্য এনে দিতে পেরেছি।’
ঋতুপর্ণা বাবাকে হারিয়েছেন আগেই। দুই বছর আগে ভাইকে হারিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে পরিবারের চাপ কাটিয়ে খেলায় মনোযোগ দিতে হয় তাকে। এই প্রসঙ্গে ঋতুপর্ণা বলেন, ‘ আমাদের নারী টিমটা আমার আরেকটা পরিবার। এখানে আমরা সবাই সবার বন্ধু। তা না হলে আমার পক্ষে শোক কাটিয়ে ফুটবল খেলা চ্যালেঞ্জিং ছিল।’
এছাড়াও ঋতুপর্ণা বলেন,’ আমাদের এবার শিরোপা জিততে অনেক কষ্ট হয়েছে। টুর্নামেন্টের পূর্বে অনুশীলন ম্যাচ খেলতে পারলে আমাদের জন্য সহজ হতো। যদি সব দিকে আমাদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়, তাহলে আমরা শুধু সাফ নয়, এশিয়ার শীর্ষ পর্যায়েও যেতে পারব।’
আরও পড়ুন: ভারত পাকিস্তানে খেলতে যাবে এমন প্রত্যাশা আকরামের
ক্রিফোস্পোর্টস/১ নভেম্বর ২৪/এইচআই