বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান কে-প্রশ্নটা উঠলেই যার নাম মাথায় আসে তিনি হলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। ছিলেন অধিনায়কও। দেশের ক্রিকেটের এতো বড় একজন মানুষ অথচ ক্রিকেট পাড়ায় তাঁর নামই শোনা যায় না তেমন। ক্রিকেট ছেড়েছেন বহু আগেই। তবে এখন কর্মরত আছেন আইসিসির এশিয়ান অঞ্চলের গেমস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে।
গতকাল (বুধবার) শারজাহ তে অনুষ্ঠিত আফগানিস্তান-বাংলাদেশ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে মাঠে উপস্থিত ছিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। সেসময়ই সাংবাদিকরা ঘিরে ধরলো দেশের ক্রিকেটের এই কিংবদন্তিকে, চললো একের পর এক প্রশ্ন। সাংবাদিকদের সেসব প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে একরাশ হতাশা ঝরলো বুলবুলের কণ্ঠে।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা গণ-অভ্যুত্থানের পর বিসিবিতে পদ পরিবর্তন হলেও আদতে হয় নি কোনো পরিবর্তন। এ নিয়ে বুলবুল বলেন, ‘বর্তমানে যে বোর্ড আছে সেটা কোনোরকমে চলছে, কোনো পরিবর্তন নাই এখানে। নতুন বলতে ফারুক এবং ফাহিম ভাই এসেছেন এনএসসির মাধ্যমে। কিন্তু বাকি সবকিছু আগের মতোই আছে। আমার মতে এটা এখনও অসম্পূর্ণ ক্রিকেট বোর্ড, নতুনত্ব কিছুই হয়নি আমার মতে।’
এসময় তিনি তার দেওয়া আইডিয়াগুলো প্রতিফলিত হয় নি জানিয়ে বলেন, ‘৫ আগস্টের পর আমাকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে আমার কাছে কিছু দিকনির্দেশনা চাওয়া হয়েছিলো। আমি সেগুলো যথাযথভাবে প্রদান করেছিলাম। কিন্তু সেগুলোর কোনো প্রয়োগ হয় নি এখনও। হয়তো পরবর্তীতে হতে পারে। আমি কোনো বড় পদের জন্য কাজ করি না। আমি চাই সবাই মিলে কাজ করতে।’
বুলবুল বর্তমানে কাজ করছেন আইসিসির গেমস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে। সুতরাং তিনি খেলার মান উন্নয়ন ভালোই বুঝবেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি বিসিবিকে দিলেন পরামর্শ। বললেন, ‘দেখেন আমাদের ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট চলছে বর্তমানে কিন্তু আমরা কতজন সেটা জানি? আমার মতে ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটটা যদি ডে-নাইট করা হতো তাহলে দর্শক আকর্ষণ বাড়তো, সবার খেলা দেখার চাহিদাও বাড়তো। এছাড়াও আমাদের স্টেডিয়ামগুলোতে আধুনিকতা আনতে হবে। ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট খেলা খেলোয়াড়দের বেতন বাড়াতে হবে।’
এছাড়াও আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘এতো কম সময়ে এতো বেশি কোচ পরিবর্তনও ঠিক নয়। আমি এর বিপক্ষে। কারণ একজন কোচ পরিবর্তন মানে একজন ডাক্তার পরিবর্তন করা। একজন কোচ শুধু স্কিল নিয়েই নয় বরং মানসিক শক্তি বৃদ্ধির জন্যও কাজ করে। কিন্তু এভাবে কোচ পরিবর্তন হতে থাকলে সেটা খেলোয়াড়দের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। ফলে সেটার প্রভাব পারফরম্যান্সেও পড়ে।’
বিসিবি চাইলেই বাংলার ক্রিকেটের অন্যতম এই কিংবদন্তিকে কাজে লাগাতে পারেন। এছাড়াও খেলার মান বাড়াতে হলে বিসিবিকে এখনও অনেক সংস্কার করতে হবে।
আরো পড়ুন : আফগানিস্তান সিরিজ শেষ মুশফিকের
ক্রিফোস্পোটর্স/০৭নভেম্বর২৪/এসআর