বিপুল প্রত্যাশা নিয়ে শুরু হলেও এবারের বিপিএলে প্রথম থেকে দেখা যাচ্ছে নানা বিতর্ক ও সমালোচনা। টিকিট না পেয়ে কাউন্টার ভাঙচুর কিংবা ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক দিতে না পারার মতো নানা ইস্যু উঠে এসেছিল সামনে। অবশ্য মাঠের জমজমাট ক্রিকেট যেন সকল বিতর্ক পাশ কাটিয়ে আশা দেখাচ্ছিল বিসিবিকে। তবে ফিক্সিং সন্দেহে ও পারিশ্রমিক ইস্যু সমাধান না হওয়ায় বড় চিন্তায় ক্রিকেট বোর্ড।
চলমান টুর্নামেন্টে অসংখ্য ক্রিকেটারের সন্দেহজনক পারফরম্যান্স ও কিছু ম্যাচের অস্বাভাবিক ফলাফল জন্ম দিয়েছে ফিক্সিং সন্দেহের। আর দুর্বার রাজশাহী তাদের ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক দিতে গরিমশি করা নিয়েও হচ্ছে সমালোচনা। এবার বিপিএলের নানা অনিয়ম ইস্যুতে কড়া বার্তা দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। এছাড়া ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার পর একাধিক ইস্যুতে মন্তব্য করেছেন তিনি।
গতকাল ১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সঙ্গে আলাপ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ফারুক আহমেদ। স্বাভাবিকভাবেই তখন উঠে আসে দুর্বার রাজশাহীর প্রসঙ্গ। এমন একটা ফ্র্যাঞ্চাইজিকে কোন বিবেচনায় বিপিএলে দল দেয়া হলো তা নিয়ে করা হয় প্রশ্ন। এই প্রসঙ্গে অবশ্য বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদিন ফাহিম স্বীকার করেছেন নিজেদের পর্যাপ্ত যাচাই-বাছাই না করতে পারার বিষয়।
দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে স্বীকার করে ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেছেন ফারুক আহমেদ। তিনি জানান অক্টোবরে একদম শেষ দিকে তাড়াহুড়া করে বিপিএলের জন্য দল দিয়েছে বিসিবি। সময় মতো ফ্রাঞ্চাইজির নাম ঘোষণা করতে না পারলে বিদেশি ক্রিকেটার দলে নেয়ার সময় পেতো না দলগুলো। এছাড়া দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এবং সময় স্বল্পতার কারণে পর্যাপ্ত যাচাই-বাছাই করতে না পারার কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন:
» শেফিল্ডের হয়ে মাঠে নেমেই ম্যাচসেরা হলেন হামজা
» টি-টোয়েন্টিতে নতুন মাইলফলক স্পর্শ করলেন মোস্তাফিজ
তবে এরই মধ্যে দলগুলোকে কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে চুক্তিভিত্তিক ক্রিকেটারদের দ্রুত সময়ে পারিশ্রমিক প্রদানের। নতুবা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন বিসিবি সভাপতি। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত ফিক্সিং ইস্যু নিয়েও কড়া বার্তা দিয়ে রেখেছেন ফারুক আহমেদ। এরই মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এর আগেই ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে এই প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন ফারুক আহমেদ। যেখানে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন কোন ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া গেলে তার জীবন কঠিন করে তুলবেন সে। এছাড়া তদন্ত চলমান থাকায় আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্য দিতে না পারার কথাও জানান তিনি।
তবে ফারুক আহমেদ কঠোর ভাষায় বলে রেখেছেন, ‘যদি তদন্তে কিছু বেরিয়ে আসে, তাহলে খুবই খারাপ শাস্তি আসতে যাচ্ছে। যদি আমরা এমন কিছু (ফিক্সিং) খুঁজে পাই, তাদের জীবন কঠিন হয়ে যাবে, কারণ আমি দোষীদের কোনো সুযোগ দেই না। এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে যা মানুষ মনে রাখবে অনেকদিন।’
নতুন দায়িত্ব নেয়ার পর বিগত চার মাসে বড় ব্যস্ততার মধ্যে কেটেছে বিসিবি। ফারুক আহমেদ মনে করিয়ে দেন এই সময়ে ১২টি প্রোগ্রাম করতে হয়েছে তাদের। নানা সমস্যার মাঝেও ডিজিটাল প্লাটফর্মে টিকিট প্রদানে সাফল্যের কথাও তুলে ধরেন তিনি। এছাড়া আগামী বছর থেকে কোন কোম্পানির সহায়তায় আরও ভালো প্রসেসে বিপিএল আয়োজন করতে চান বলেও জানান ফারুক আহমেদ। তবে তার জন্য সময় চেয়েছেন কিছুটা।
ক্রিফোস্পোর্টস/২ফেব্রুয়ারি/এফএএস