সম্প্রতি শেষ হয়েছে টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ অ্যাশেজ সিরিজ। যা অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের দর্শকরা বিশ্বকাপের চেয়েও বেশি মর্যাদার মনে করেন।
এবার এ সিরিজটি শেষ হয়েছে ২-২ সমতায়। পূর্ব নির্ধারিত নিয়ম অনুসারে, সিরিজ সমতায় শেষ হলে আগের মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন দলই নতুন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ঘোষিত হয়। সে হিসেবে এবার ট্রফি গেছে অস্ট্রেলিয়ার ঘরে।
ক্রিকেটের সবচেয়ে পুরনো দ্বৈরথের জন্মের ইতিহাসটাও খুব বিচিত্র। অ্যাশেজ মূলত ছাইদানি। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার অনুষ্ঠিত টেস্ট সিরিজ বিজয়ী দলকে ১৮৮২ সাল থেকে এ ট্রফি প্রদান করা হয়।
উনবিংশ শতকের শেষ দিকে ইংলিশ ক্রিকেট দল অস্ট্রেলিয়ার কাছে ওভালে পরাজিত হলে দেশটিতে বিদ্রুপাত্মকভাবে শোক প্রকাশ করা হয়। এর প্রেক্ষিতেই ধারাবাহিকভাবে ইংলিশরা একটি ছাইপূর্ণ পাত্র উপস্থাপন করে যা পরবর্তীতে ট্রফির মর্যাদা লাভ করে।
যেভাবে হলো অ্যাশেজ নামকরণ:
১৮৮২ সালের ২৮ আগস্ট ইংল্যান্ডের মাটিতে একমাত্র টেস্ট মাঠে গড়ায়। তীব্র লড়াই শেষে সেই ম্যাচটি মাত্র ৭ রানের ব্যবধানে জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। সেদিন ঘরের মাঠে ইংলিশদের হারিয়ে স্বপ্ন জয় করেছিল অস্ট্রেলিয়া। ক্রিকেটের তীর্থস্থলে স্বাগতিকদের এ হার দেশের ক্রিকেটের সমাধি বলে আখ্যা দিয়েছিল দেশটির সংবাদ মাধ্যমগুলো।
তখনকার জনপ্রিয় পত্রিকা দ্য স্পোর্টিং টাইমস প্রথম পাতায় খবর প্রকাশ করে লিখে; ইংল্যান্ড ক্রিকেটের মৃত্যু হলো, এখন অস্তিত্ব বলতে শুধু ‘ছাই’ আছে। আর সেই ‘ছাই’ নিয়ে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। পরের বার ইংল্যান্ড অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে খেলতে গেলে অ্যাশেজ পুনরুদ্ধার যাত্রা এমন শিরোনাম করা হয়। এরপর অ্যাশেজ জয় ও পুনরুদ্ধারের লড়াই চলে। তখন থেকেই ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট সিরিজ জনপ্রিয়তা পায় ‘অ্যাশেজ’ নামে।
অ্যাশেজ অধিকারের জন্য একটি দলকে অবশ্যই সিরিজ বিজয় নিশ্চিত করতে হয়। এই সিরিজ অনুষ্ঠিত হয় ৫টি টেস্ট ম্যাচের মধ্যদিয়ে। অ্যাশেজের প্রথম সিরিজ অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮২-৮৩ সালে।২০২৩ সাল পর্যন্ত ৭৩টি সিরিজ অনুষ্ঠিত হয়েছে; যেখানে অস্ট্রেলিয়া ৩৪টি ও ইংল্যান্ড ৩২টি সিরিজ জিতেছে। বাকি ৭টি সিরিজ ড্র হয়েছে।
অ্যাশেজ সিরিজে দুদলের খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান (৫০২৮) করেছেন অস্ট্রেলিয়ার সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান। সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকার করেছেন অস্ট্রেলিয়ার সর্বকালের সেরা লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্ন। তিনি মোট ১৯৫টি উইকেট শিকার করেন।
চার ও ছয় টেস্টের সিরিজ:
অ্যাশেজের অধিকাংশ সিরিজ পাঁচ টেস্টের হয়ে থাকলেও ১৯৩৮ ও ১৯৭৫ সালে চার টেস্টের সিরিজ মাঠে গড়ায়। এছাড়া ১৯৭০-৭১, ১৯৭৪-৭৫, ১৯৭৮-৭৯, ১৯৮১, ১৯৮৫, ১৯৮৯, ১৯৯৩ ও ১৯৯৭ সালে ছয় টেস্টের সিরিজে গড়ায় অ্যাশেজ।
আরও পড়ুন: কানাডায় দারুণ খেলে ম্যাচসেরা হয়েছেন লিটন কুমার
ক্রিফোস্পোর্টস/২আগস্ট২৩/আরএ/এসএ