দুয়ারে কড়া নাড়ছে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ। আগামী ৫ অক্টোবর এবারের আসরের পর্দা উঠবে ভারতের মাটিতে। দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে মোট ১০টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে সব ম্যাচ।
একনজরে ভারত বিশ্বকাপের সব ভেন্যু:
নরেন্দ্র মোদি ক্রিকেট স্টেডিয়াম:
গুজরাটের আহমেদাবাদে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম; যা ১ লাখ ৩২ লাখ দর্শকের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন। এটি বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ২০২৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ এই স্টেডিয়ামেই অনুষ্ঠিত হবে।
আহমেদাবাদের উইকেট অনেকটা স্পিন সহায়ক। এই মাঠে প্রথম যারা ব্যাট করে তাদের জয়ের হার বেশি। রান তাড়া করে জেতার হার খুব কম। এ মাঠে সর্বোচ্চ স্কোর ৩৭৫। ২০১০ সালে ভারতের বিপক্ষে এ রান সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এছাড়াও সর্বোনিম্ন স্কোর ৮৫। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এ রান করে জিম্বাবুয়ে।
এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম:
বিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এম চিন্নাস্বামীর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের অংশ হিসেবে এ স্টেডিয়ামের নামকরণ করা হয়। বেঙ্গালুরুতে অবস্থিত এ স্টেডিয়ামে দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৩৬ হাজার।
টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ ও আইপিএলের অনেক হাই স্কোরিং ম্যাচ দেখা গেছে এই মাঠে। এখানে নতুন বলে পেসাররা ভালো সুয়িং পেয়ে থাকে। এই স্টেডিয়ামে সর্বোচ্চ ওয়ানডে স্কোর ৩৮৬ রান করেছে অস্ট্রেলিয়া।
এম এ চিদম্বরম স্টেডিয়াম:
চেন্নাইয়ে অবস্থিত এম এ চিদম্বরম স্টেডিয়াম আন্তর্জাতিক মানের সবচেয়ে প্রাচীন ক্রিকেট স্টেডিয়াম।
তিনটি ক্রিকেট বিশ্বকাপের ৭টি ম্যাচ এ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখানে দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৫০ হাজার।
এই মাঠে মোট ৩২টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম ব্যাট করা দল জিতেছে ১৪ বার। পরে ব্যাট করা দল জয় পেয়েছে ৮ বার। এই মাঠে ১৯৯৭ সালে সর্বোচ্চ ৩২৭ রান করে পাকিস্তান । আর ২০১১ সালে সর্বনিম্ন ৬৭ রান করে কেনিয়া।
অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম:
এই স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণক্ষমতা ৪১ হাজার। এ মাঠে ঋষভ পন্ত ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে ৩২ বলে ১০০ রান করেন। যা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম। দিল্লির এই মাঠের পিচ অনেকটা মিরপুরে মতো। এখানে স্পিনাররা বাড়তি সহায়তা পেয়ে থাকে।
এই মাঠে ৩৫টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে প্রথমে ব্যাট করা দল জিতেছে ১৩ বার। রান তাড়া দল জিতেছে ১২ বার। সর্বোচ্চ স্কোর ৩৩০ রান। সর্বনিম্ন স্কোর ৮৫ রান।
হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট এসোসিয়েশন স্টেডিয়াম:
ধর্মশালায় এই স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণক্ষমতা ২৩ হাজার। এখানে লো স্কোরিং ম্যাচ হয়ে থাকে। এখানে স্পিনাররা বাড়তি সুবিধা পায়।
এই স্টেডিয়ামে একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছে ৫টি। আগে ব্যাট করা দলের জয়ের হার বেশি। সর্বোচ্চ স্কোর ৩৩০ রান, সর্বনিম্ন স্কোর ১১২ রান।
মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম:
ভারতের পুনে শহরের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম। এর দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৩৭ হাজার। এই স্টেডিয়ামে এ পর্যন্ত একটি ওয়ান ডে ম্যাচ আয়োজন হয়েছে।
রাজীব গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম:
ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম সক্রিয় ক্রিকেট মাঠ রাজিব গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম। হায়দ্রাবাদের এই স্টেডিয়ামে দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৫৪ হাজার।
এখন পর্যন্ত ৮টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছে এই মাঠে। সর্বোচ্চ স্কোর ৩৪৯ রান। এই মাঠে পেসাররা সুবিধা পেয়ে থাকেন। উইকেট স্লো হওয়ায় অনেক বেশি ডট পেয়ে থাকেন।
ইডেন গার্ডেন:
কলকাতায় ইডেন গার্ডেন ভারতের প্রাচীনতম ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ১৮৬৪ সালে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এর দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৮০ হাজার।
ইডেনে আন্তর্জাতিক ম্যাচে সর্বোচ্চ রান করেছে ভারত। ২০১৪ সালের একটি ম্যাচে ৫ উইকেটে ৪০৪ করে টিম ইন্ডিয়া।
ভারতরত্ন শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী একানা স্টেডিয়াম:
লক্ষ্ণৌর ওই স্টেডিয়ামে দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৫০ হাজার। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে বিসিসিআই এই মাঠটিকে আফগানিস্তানের তৃতীয় ঘরের মাঠ হিসেবে ঘোষণা করে।
এই মাঠে দুটি এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে শতকের সংখ্যা একটি। এই মাঠকে স্পিনারদের স্বর্গরাজ্য বলা হয়। এখানে স্পিনাররা বাড়তি সুইং পেয়ে থাকেন। এই মাঠে পরে ব্যাট করে রান তাড়া করা কঠিন কাজ।
হলকার স্টেডিয়াম:
ভারতের ইন্দোরে হলকার স্টেডিয়াম বিশ্বের অন্যতম ছোট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এর দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৩০ হাজার। এই মাঠে বীরেন্দ্র শেবাগ তৃতীয় সর্বোচ্চ ওয়ানডে স্কোর ২১৯ রেকর্ড করেছেন। এই মাঠের সর্বোচ্চ স্কোর ৪১৮ রান। সর্বনিম্ন স্কোর ২৪৫ রান।
ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম:
মুম্বইয়ের ওয়াঙখেড়ে স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৪৫ হাজার। ২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয় এই মাঠে। যেখানে ভারত দ্বিতীয় বারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করে।
এই মাঠে ২০টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথমে ব্যাট করা দল জিতেছে ৮ বার। পরে ব্যাট করা দল জিতেছে ১১ বার। সর্বোচ্চ ৪৩৮ রান করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
আরও পড়ুন: দুই দেশের হয়ে বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দিয়েছেন যে ক্রিকেটার
ক্রিফোস্পোর্টস/৭আগস্ট২৩/এইচআর/এসএ