নতুন বছরের বৈশ্বিক সূচিতে শুরুতেই মাঠে গড়াবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জমজমাট আসর। যদিও এর জন্য অপেক্ষা করতে হবে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত। এর আগে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা মেতে উঠবে বিপিএলের ছন্দে। যখন বিপিএলের প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ, তখন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সূচি প্রকাশ করেছে আইসিসি। যেখানে ‘মাস্ট ওয়াচ’ ম্যাচের তালিকায় নেই বাংলাদেশের কোনো ম্যাচ। কিন্তু রয়েছে আফগানিস্তানের একটি ম্যাচ।
২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সূচি প্রকাশের সাথে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) পাঁচটি ‘মাস্ট ওয়াচ’ ম্যাচের তালিকাও প্রকাশ করেছে। যা ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হতে যাচ্ছে। কিন্তু এই তালিকায় বাংলাদেশের কোনো ম্যাচ না থাকায় দেশের ক্রিকেট ভক্তরা প্রচন্ড হতাশ।
‘মাস্ট ওয়াচ’ তালিকায় থাকা পাঁচটি ম্যাচ
১. ভারত বনাম পাকিস্তান
তারিখ: ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
স্থান: দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই বিশ্ব ক্রিকেটে উত্তেজনার অন্যরকম এক মাত্রা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের মধ্যে রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এই লড়াইকে সবসময়ই বিশেষ মর্যাদা দেয়। প্রায় এক দশক ধরে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে একে অপরের মুখোমুখি না হওয়া দল দুটি আইসিসি ইভেন্টে মুখোমুখি হলে তা ভক্তদের জন্য এক বিশাল উপলক্ষ হয়ে ওঠে।
২. অস্ট্রেলিয়া বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
তারিখ: ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
স্থান: রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়াম
ইতিহাস সাক্ষী, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ মানেই প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত রূপ। ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার স্বপ্ন ভেঙে দেয় অস্ট্রেলিয়া। সেই স্মৃতি মনে রেখে এবার প্রতিশোধ নেওয়ার লক্ষ্য থাকবে দক্ষিণ আফ্রিকার।
আরও পড়ুন:
» চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, ম্যাচ কবে-কখন?
» সাত বছর পর নিজ দেশে ফিরছেন ব্রাজিলিয়ান নাম্বার ইলেভেন
» কনস্টাসকে থামাতে না পেরে কোহলির ধাক্কা! চটেছেন সাবেকরা
৩. আফগানিস্তান বনাম অস্ট্রেলিয়া
তারিখ: ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
স্থান: গাদ্দাফি স্টেডিয়াম, লাহোর
আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার শক্তিমত্তা প্রমাণ হলেও, ২০২৩ বিশ্বকাপে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের একক কীর্তি আফগানিস্তানের দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। প্রতিশোধের সুযোগ থাকায় এই ম্যাচটি নিয়ে উত্তেজনা চরমে।
৪. দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম ইংল্যান্ড
তারিখ: ১ মার্চ, ২০২৫
স্থান: করাচি জাতীয় স্টেডিয়াম
দুই শক্তিশালী ক্রিকেট দলের লড়াই সবসময়ই ভক্তদের কাছে বিশেষ আকর্ষণীয়। তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক সম্পর্ক এই ম্যাচটিকে ‘মাস্ট ওয়াচ’ তালিকায় স্থান দিয়েছে।
৫. ভারত বনাম নিউজিল্যান্ড
তারিখ: ২ মার্চ, ২০২৫
স্থান: দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম
ভারত-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ মানেই উত্তেজনা। দুই দলের মধ্যে গত কয়েক বছরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা এই ম্যাচকে ‘মাস্ট ওয়াচ’ তালিকায় স্থান দিয়েছে।
২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ রয়েছে ‘এ’ গ্রুপে, যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ভারত, পাকিস্তান এবং নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের সূচি শুরু হবে ২০ ফেব্রুয়ারি ভারতের বিপক্ষে দুবাইয়ে। এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের বিপক্ষে লাহোরে এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করাচিতে ম্যাচ খেলবে তারা।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ক্রিকেট পারফরম্যান্স বিবেচনায়, দলটি নিজেদের প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক মনোভাব ও উন্নতির ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেমিফাইনালে পৌঁছানোর পর দলটি বড় আসরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ক্ষমতা দেখিয়েছে। এরপরও আইসিসি তালিকায় বাংলাদেশের কোনো ম্যাচ না থাকা সমর্থকদের জন্য হতাশার কারণ।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল আইসিসি ইভেন্টগুলোতে উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। ২০২৩ সালের এশিয়া কাপে তাদের অসাধারণ জয় এবং ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রতিযোগিতামূলক পারফরম্যান্স তাদের ‘মাস্ট ওয়াচ’ তালিকায় স্থান দেওয়ার দাবি জোরালো করে।
বিশেষ করে ভারত এবং পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ম্যাচগুলো বরাবরই উত্তেজনাপূর্ণ হয়। ২০১৮ সালের এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের নৈপুণ্য কিংবা পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১৫ সালের সিরিজ জয় আজও ভক্তদের মনে গেঁথে রয়েছে।
আইসিসি’র ‘মাস্ট ওয়াচ’ তালিকায় স্থান না পেলেও, বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা মাঠে নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স প্রদর্শনের মাধ্যমে এই উপেক্ষার জবাব দিবেন এটাই সকলের প্রত্যাশা। দলের অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের সঙ্গে তরুণ প্রতিভার সমন্বয় মাঠে বাংলাদেশের শক্ত অবস্থান নিশ্চিত করতে পারে এই চাওয়া ই সকলের।
ক্রিফোস্পোর্টস/২৬ডিসেম্বর২৪/আইএইচআর/এজে