অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানের রেকর্ড যে বেশ দৃষ্টিকটু তা তো পুরোনো খবর। টানা ১৭ টি টেস্ট ম্যাচ অজিদের মাটিতে হারতে হয়েছে পাকিস্তানকে। শুধু হারই না, বলার মত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ পাকিস্তান শেষ উপহার দিয়েছিল তাও কয়েক বছর আগে। সে তুলনায় সদ্য শেষ হওয়া টেস্ট সিরিজে স্বাগতিকদের সাথে বেশ ভালোই লড়াই গড়ে তুলেছিল পাকিস্তান। একাধিক ইনিংসে এগিয়ে গিয়েও শেষমেশ অবশ্য হারই সঙ্গী হয়েছে শান মাসুদের দলের।
মেলবোর্ন টেস্টে সফরকারীরা ভালো ক্রিকেট খেলেছে। পরিস্থিতিও পাকিস্তানের জন্য ম্যাচ জিতে নেওয়ার মতই ছিল। কিন্তু দলের ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং ব্যর্থতার পাশাপাশি মোহাম্মদ রিজওয়ানের বিতর্কিত আউটের ফলে ম্যান ইন গ্রিনদের সে ম্যাচে হারতে হয়। সিডনি টেস্টেও অল্প রানের লিড পাওয়া সত্ত্বেও দলের ব্যাটিং ব্যর্থতায় তরী ডুবেছে পাকিস্তানের। পুরো সিরিজেই ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার সাথে সাথে ফিল্ডারদের ক্যাচ মিসের মহড়ার দরুণ সফরকারীদের গো হারা হারতে হয়েছে।
আবার অনেক সময়ই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারেনি পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা। এত সবের পর পাকিস্তানের সাবেক অলরাউন্ডার ও বর্তমান কোচ মোহাম্মদ হাফিজ মনে করেন, এই হোয়াইটওয়াশটা অন্তত তাদের প্রাপ্য ছিল না। সিরিজটা থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথা উল্লেখ করে পাকিস্তানের কোচ বলেন, ‘ম্যাচে আমরা যে সুযোগগুলো পেয়েছি তা দল হিসেবে কাজে লাগাতে পারিনি। আমার মনে হয় না, ৩-০ ব্যবধানে হারের প্রাপ্য আমরা ছিলাম। দলগতভাবে সিরিজে আমাদের বেশ কিছু ইতিবাচক দিকও রয়েছে। কিন্তু ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ের সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে না পারায় আমাদের সিরিজটি হারতে হয়েছে, আর ব্যবধান হয়েছে ৩-০।’
তবে এমন হার নিয়ে হাফিজের কথায় আক্ষেপটাও স্পষ্ট ফুটে ওঠে৷ ম্যাচে এমন কিছু মুহুর্ত আমরা পেয়েছিলাম যেগুলো লুফে নেওয়া উচিত ছিল। কারণ এগুলোই ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেওয়ার মূল নিয়ামক। বিশেষ করে মেলবোর্নে তাদের ১৬ রান তুলতে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলার সময়টায়। সেটা কাজে লাগাতে পারলে আমাদের হয়তো পরে ১৪০-১৫০ রানের লক্ষ্য দাঁড়াত। কিন্তু তারা সেটাকে তিনশের উপরে নিয়ে যায়।’
পাকিস্তানের এই সিরিজে আরেকটি দৃষ্টিকটু দিক ছিল অতিরিক্ত ক্যাচ মিস। হাফিজের কথাতেও বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ স্পষ্ট ছিল, ‘এই সিরিজেও আমরা বেশ কিছু ক্যাচ ছেড়েছি। সাইমের হাতে মিচেল মার্শ জীবন পেয়েছিল, এসব দিকে আমাদের আরও সচেষ্ট থাকতে হবে। আমরা ম্যাচ জয়ের সুযোগ নিজ হাতে ছেড়ে দিয়েছি। ফিল্ডিংয়ের এই জিনিসটি আমাদের নেতিবাচক দিক। এটি নিয়ে আমাদের আরও কাজ করতে হবে।’
অবশ্য ভবিষ্যতের জন্য এখান থেকেই ইতিবাচক বিষয়গুলোও খুঁজে পেয়েছেন হাফিজ। ‘আমাদের খেলোয়াড়েরা ভালো প্রতিভাসম্পন্ন। আশা করছি, এখান থেকেই আমরা নতুনভাবে সব কিছু শুরু করতে পারবো।’
আরও পড়ুন: ক্যারিয়ারের শেষ ইনিংসেও ঝলমলে ওয়ার্নার, ধবল ধোলাই পাকিস্তান
ক্রিফোস্পোর্টস/৬জানুয়ারি২৪/এমএস/এমএ