মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলায় মাত্র ৪ রানেই দুই উইকেট ছিলো না টাইগারদের। কিন্তু এরই মধ্যে নিদারুণ ব্যাটিং ব্যর্থতার ফলে শুরতেই দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যাটিংয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছিল টাইগাররা। ফলে এবার স্বাগতিক শিবিরে দেখা দিয়েছিল ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কা। কিন্তু শান্ত-জয় প্রাথমিক ধাক্কা কিছুটা সামাল দিতে সক্ষম হয়। যদিও ক্রিজে বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি শান্ত। এরপরেই জয়-মুশি জুটিতে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করে টিম বাংলাদেশ।
প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতার ফলে মাত্র ১০৬ রানে গুটিয়ে যায় টিম টাইগার। এরপরে প্রোটিয়া ব্যাটার ভেরেইন এবং উইয়ান মুল্ডারের দৃঢ় ব্যাটিংয়ে বড় লিড পায় প্রোটিয়ারা। ইনিংস ব্যবধানের হার এড়াতে টাইগারদের করতে ২০২ রান। এই লক্ষ্যে মাঠে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে চরমভাবে ব্যর্থ টাইগার টপঅর্ডার। ৫৯ রান তুলতেই হারিয়ে ফেলেছে তিন উইকেট। এখনও ক্রিজে আছেন মুশফিক ও মাহমুদুল হাসান জয়। তাঁদের পার্টনারশীপে দলের রান এখন ৩ উইকেটে ১০১। এখনও বাকি ১০১ রান।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর কোনো বিপর্যয় হতে দেয় নি জয়-মুশফিক জুটি। দ্বিতীয় দিন শেষে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশ তুলেছে ১০১ রান। জয়-মুশি জুটিতে এসেছে ৫০ বলে ৪২ রান। দ্বিতীয় দিন শেষে মাহমুদুল হাসান জয় ৮০ বলে ৫ চারে ৩৮ রান করে অপরাজিত আছেন অন্যদিকে মুশফিক ২৬ বলে ৩ চারে ৩১ রান করেছেন। এদের হাতেই এখন নির্ভর করছে বাংলাদেশ দলের ম্যাচ ভাগ্য।
নিরাপত্তা ইস্যু এবং ক্রিকেটে চলমান পরিস্থিতির কারণে এমনিতেই দর্শক উপস্থিতি কম ছিল মাঠে। তবুও যারা এসেছিল তাঁরা দলের বিপর্যয়ের কারণে ঠিকমতো উল্লাসও করতে পারে নাই।
টাইগারদের ব্যাটিংয় ব্যর্থতায় মাত্র দ্বিতীয় দিনেই প্রথম টেস্ট শেষ হওয়ার আশঙ্কা জেগেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই আশঙ্কা কেটে গেছে বাংলাদেশ দলের। যদিও আলোক স্বল্পতার কারনে নির্ধারিত সময়ের আগেই দ্বিতীয় দিনের খেলার সমাপ্তি ঘটান আম্পায়ার।
গতকাল (সোমবার) প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ১০৬ রানে অলআউট হয়।এরপর প্রোটিয়ারা ব্যাট করতে নেমে ভেরেইনের সেঞ্চুরিতে ভর করে ৩০৮ রান তোলে। বাংলাদেশকে ২০২ রানের লিড দেয়।
মিরপুরের স্পিন বান্ধব পিচে এই রানও পাহাড়সম। এই মুহুর্তে ঘুরে দাঁড়ানো দরকার ছিলো টাইগারদের। কিন্তু বরবারের মতো এবারও ব্যর্থ টাইগাররা। দলীয় রানের মাথায় হারিয়ে বসে টপ অর্ডারের দুই ব্যাটারকে।
দ্বিতীয় ইনিংসের তৃতীয় এবং কাগিসো রাবাদার প্রথম ওভারেই আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন সাদমান ইসলাম। ৭ বলে ১ রান করে শর্টে লেগে টনি জর্জির কাছে ক্যাচ তুলে দেন এই ওপেনার।
ওই ওভারেই তৃতীয় স্লিপে থাকা উইয়ান মিল্ডারের কাছে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন মুমিনুলও। করেন ৩ বলে ১ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সবশেষ ৯ ইনিংসে মুমিনুল করছে মাত্র ৩২ রান। যা সত্যিই খুবই লজ্জাজনক।
এরপরেই মাহমুদুল হাসান জয়কে সঙ্গ দিতে থাকেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। গড়েন ৯৮ বলে ৫৫ রান। এই জুটিই চলমান টেস্টে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জুটি। কিন্তু ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ টাইগার কাপ্তান।
মাত্র ২৩ রানে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে মাঠে ছাড়েন তিনি। কেশব মহারাজের অফসাইড অফ স্টাম্পের বল ঠিকমতো ব্যাটের সাথে সংযোগ করতে না পারায় বল গিয়ে লাগে প্যাডে আর সাথে সাথেই আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার।
দ্বিতীয় দিন শেষে স্কোর বোর্ড :
(বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ১০৬/১০ মাহমুদুল হাসান জয় ৩০,
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস : ৩০৮/১০
ভেরেইন ১১৪, উইয়ান মুল্ডার ৫৪,
বল হাতে তাইজুল ইসলাম ৫/১২২,
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস : ১০১/৩,
মাহমুদুল হাসান জয় ৩৮*, মুশফিক ৩১*, নাজমুল হোসেন শান্তু ২৩)
আরো পড়ুন : নতুন স্পন্সর পেল বিসিবি
ক্রিফোস্পোর্টস/২২অক্টোবর২৪/এসআর