এএফসি কাপে পিছিয়ে পড়েও ঘরের মাটিতে মোহনবাগানের বিপক্ষে ২-১ গোলে দুর্দান্ত জয় পায় বসুন্ধরা কিংস। গ্রুপ সেরার লড়াইয়ে প্রথমে পিছিয়ে পড়লেও দুর্দান্তভাবে ম্যাচে ফিরে জয় তুলে নিয়েছে অস্কার ব্রুজোনের শিষ্যরা। গ্রুপপর্বের প্রথম লেগে ভারতের মাটিতে ২-২ গোলে ড্র করে পয়েন্ট নিয়ে এসেছিল কিংসরা।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) রাতে বসুন্ধরার কিংস অ্যারেনায় গ্রুপপর্বের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে মোহনবাগানের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নরা। দুই বাংলার লড়াইয়ে মাঠে উত্তাপ ছড়িয়েছে খেলার প্রথম মিনিট থেকে। একের পর এক আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। গ্যালারিতেও ছিল কিংস সমর্থকদের উপচে পড়া ভিড়। এই ম্যাচে বসুন্ধরা কিংসের হয়ে গোল করেন মৃগুয়েল ও রবসন রবিনহো।
ঘরের মাঠের চিরচেনা কন্ডিশনের সুযোগ শুরুতে ঠিক কাজে লাগাতে পারছিল না কিংস। একের পর এক আক্রমণ চালিয়েও সফলতা খুজে পাচ্ছিল না তারা। অন্য দিকে পাল্টা আক্রমণে ১৭ মিনিটে গোল করে স্কোর বোর্ডে লিড নেয় মোহনবাগান। সুভাশিষের বাড়িয়ে দেওয়া বল থেকে ডি-বক্সে কাট ব্যাক করেন জেসন কামিংস। গোল কিপার শ্রাবণ বল পুরোপুরি ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে ফিরতি বল জালে জরান লিস্টন কোলাসো।
পিছিয়ে পড়ে গোল পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে কিংস। ম্যাচের ২১ মিনিটে বক্সের ভেতর চার্লস দিবিয়েরের বাড়ানো দারুণ এক বল পান ডোরিয়েল্টন। গোলকিপারকে একা পেয়েও বল জালে জড়াতে ব্যর্থ তিনি। এতে বাড়ে সমর্থকদের গোলের অপেক্ষা। উল্টো দিকে মোহনবাগানের পাল্টা আক্রমণে চাপে থাকে কিংসরা।
আনিসুর রহমান জিকো নিষেধাজ্ঞায় থাকায় গোলকিপিং করেন তরুণ ফুটবলার শ্রাবণ। হাইভোল্টেজ ম্যাচের শুরুতে অভিজ্ঞতার ঘাটতি কিছুটা চোখে পড়লেও সময়ের সাথে আস্থার পরিচয় দিয়ে যান শ্রবণ। ৩৫ মিনিটে মোহনবাগানের জোড়া শট ফিরিয়ে নিজের কার্যকারিতার প্রমাণ দেন তিনি।
প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগেই সমতায় ফিরে বসুন্ধরা কিংস। ৪৪ মিনিটে চার্লসের বাড়ানো বল পেনাল্টি এরিয়ার বাইরে পেয়ে যান মৃগুয়েল। টার্ন করে জোড়ালো শটে বল জালে জড়াতে করেননি কোনো ভুল। ১-১ গোলের সমতা নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে দুই দল।
জয়ের বিকল্প না থাকায় দ্বিতীয় আর্ধের শুরু থেকেই আক্রমণ চালিয়ে যায় বসুন্ধরা কিংস। মোহনবাগান চেষ্টা করে বল ধরে রেখে খেলতে। ম্যাচের ৫০ মিনিটে রবসন রবিনহোর নেওয়া দুর্দান্ত শট পোস্টে লেগে প্রতিহত না হলে দ্বিতীয় গোলের দেখা পেতে পারত বসুন্ধরা কিংস। আগের ম্যাচেও তার শট আটকে যায় জালের ফ্রেমে।
প্রতি পরতে উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল মোহনবাগানও। ৬৭ মিনিটে সাহালের দারুণ এক শট ফিরিয়ে দিয়ে নিশ্চিত গোল রক্ষা করেন শ্রাবণ। মিনিট চারেক পরেই লিস্টনের বাড়ানো বল জালে জড়ান মোহনবাগানের ফরওয়ার্ড কামিংস। তবে অফসাইডের ফাঁদে কাটা পড়ে গোলটি।
ম্যাচের ৮০ মিনিটে আরো একবার চার্লসের সাপ্লাই করা বল ডি-বক্সের ভেতর আসলে আবারও সুযোগ হারান ডোরিয়েল্টন। তবে ফিরতি বল বক্সের মধ্যেই পেয়ে বল জালে জড়াতে কোনো ভুল করেননি ব্রাজিলিয়ান ফরওয়ার্ড রবসন রবিনহো।
পরবর্তীতে আর সমতায় ফিরতে না পারলে ২-১ গোলের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় ওপার বাংলার জায়ান্টদের। এই জয়ে ৪ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে এএফসি কাপে ‘ডি’ গ্রুপের শীর্ষে অবস্থান করছে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন্সরা। তাদের পরবর্তী ম্যাচ হবে ২৭ নভেম্বর মাজিয়া এফসির বিপক্ষে।
আরও পড়ুন: শেষ ম্যাচে বাদ পড়ছেন তামিম?
ক্রিফোস্পোর্টস/৮নভেম্বর২৩/এসএস/এজে