
ভারতের তারকা পেসার জসপ্রীত বুমরাহর ক্যারিয়ার নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। গত বছরের মার্চে পিঠের চোটে অস্ত্রোপচার করা বুমরাহর একই জায়গায় আবারও চোটের সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নিউজিল্যান্ডের সাবেক পেসার শেন বন্ড সতর্ক করেছেন, এই চোট বুমরাহর ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে পারে।
বুমরাহকে সর্বশেষ মাঠে দেখা গেছে গত জানুয়ারির সিডনি টেস্টে। সেই ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে স্ক্যানের জন্য মাঠ ছাড়ার পর থেকে তিনি আর কোনো ম্যাচ খেলেননি। প্রথমে এটি ব্যাক স্প্যাজম বলে জানানো হলেও পরে নিশ্চিত হওয়া যায় যে এটি স্ট্রেস-রিলেটেড চোট। এই চোটের কারণে তিনি আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও অংশ নিতে পারেননি। বর্তমানে বেঙ্গালুরুর বিসিসিআই সেন্টার অব এক্সেলেন্সে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছেন বুমরাহ। কবে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরবেন, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
শেন বন্ড, যিনি নিজেও পিঠের চোটে ক্যারিয়ার শেষ হওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে, তিনি বুমরাহর অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বন্ড বলেছেন, ‘যখন বুমরা সিডনিতে স্ক্যানের জন্য মাঠ ছাড়ল, তখন জানানো হলো যে তার পিঠে টান লেগেছে। আমি তখনই ভেবেছিলাম, এটি শুধুই মচকে যাওয়া নয়, বরং তার পিঠের হাড়ে কোনো গুরুতর সমস্যা হতে পারে। তখনই আমি বুঝতে পেরেছিলাম, তেমন কিছু হলে সে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে পারবে না।’

জসপ্রিত বুমরাহর ইনজুরি।
বন্ডের মতে, ফাস্ট বোলারদের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সময় হলো যখন তারা হঠাৎ টি-টোয়েন্টি থেকে টেস্ট ক্রিকেট খেলেন। বুমরাহর ক্ষেত্রেও এই বিষয়টি উদ্বেগজনক হতে পারে। কারণ, আইপিএল শেষ হওয়ার মাত্র এক মাস পর জুনে ভারত ইংল্যান্ডে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে।
বন্ড আরও বলেছেন, ‘আমি মনে করি, বুমরা ঠিকই থাকবে, তবে তার ওয়ার্ক লোড ঠিকভাবে ম্যানেজ করতে হবে। যেকোনো সময় টি-টোয়েন্টি থেকে সরাসরি টেস্ট খেলা কঠিন। একদিনের ক্রিকেটে সেটা তুলনামূলক সহজ; কারণ, আপনি সপ্তাহে তিনটি ম্যাচ খেলবেন, অনুশীলন করবেন, যেখানে ৪০ ওভারের আশপাশে বোলিং হবে, যা মোটামুটি টেস্ট ম্যাচের কাছাকাছি।’
আরও পড়ুন:
» প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে হতে যাচ্ছে পিঙ্ক বল টেস্ট
» সুদানের বিপক্ষে খেলা হলো না, প্রস্তুতি ঘাটতিতে জামালরা!
‘কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে, বিশেষ করে আইপিএলে, আপনি যদি সপ্তাহে তিনটি ম্যাচ খেলেন, তাহলে দুই দিন ভ্রমণ, এক দিন মাত্র অনুশীলন এবং হয়তো ২০ ওভার বোলিং করবেন, যা টেস্ট ম্যাচের মাত্র অর্ধেকেরও কম। তা ছাড়া টি-টোয়েন্টিতে টানা দুই দিন বোলিং করতে হয় না, কিন্তু টেস্টে সেটা করতে হয়। তাই এই পরিবর্তন বিশাল এক চ্যালেঞ্জ।’
ইংল্যান্ড সিরিজে বুমরাহকে টানা দুটি টেস্টের বেশি মাঠে দেখতে চান না বন্ড। তিনি বলেছেন, ‘বুমরা ভারতের পরবর্তী বিশ্বকাপের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই ইংল্যান্ড সিরিজে আমি চাইব না বুমরা টানা দুটির বেশি ম্যাচ খেলুক। আইপিএল থেকে সরাসরি টেস্ট ম্যাচে খেলা বড় ঝুঁকির। তাই কীভাবে তাকে সামলানো হবে, সেটাই মূল ব্যাপার।’
বুমরাহর ক্যারিয়ার নিয়ে এই উদ্বেগ ভারতীয় ক্রিকেট ভক্তদের মধ্যে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। তার সুস্থতা এবং ফিরে আসা ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখন দেখার বিষয়, বিসিসিআই এবং মেডিকেল টিম কীভাবে বুমরাহর ওয়ার্ক লোড ম্যানেজ করে তাকে সুস্থ ও ফিট রাখতে পারে।
ক্রিফোস্পোর্টস/১২মার্চ২৫/এফএএস
