সরকার পতনের পর সারাদেশে বয়ে চলেছে বদলের হাওয়া। চলছে গোটা দেশ সংস্কারের কাজ। সরকার ব্যবস্থা থেকে শুরু করে প্রশাসন কিংবা বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংগঠনে এরই মধ্যে আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন পরিবর্তন। যেহেতু দেশের সকল ক্ষেত্রে রাজনৈতিক একটা প্রভাব বিদ্যমান ছিল, তাই দেখা যাচ্ছে বড় রদবদল; যার ব্যাতিক্রম নয় ক্রীড়াঙ্গনও।
মূলত গেল কিছু দিনে শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলন এক পর্যায়ে গণমানুষের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে পরিণত হয়। যেখানে ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনগণের চাপে শেষ পর্যন্ত এক দফা দাবি মেনে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে করে বিপাকে পড়েছে তার দলের নেতা কর্মীরা। বিসিবির মতো প্রায় সকল সংগঠনের নেতৃত্ব পর্যায়ের অনেকেই আছেন আত্মগোপনে।
নাজমুল হাসান পাপন বিসিপির সভাপতি হওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বেও ছিলেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের প্রতীকে কিশোরগঞ্জ থেকে সংসদ সদস্যও নির্বাচন হন তিনি। সরকার পতনের পর তিনি দেশে আছেন কিনা তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত ভাবে কিছু জানা যায়নি। তবে কিছু সূত্রের মতে তিনি এখনও আছেন দেশেই। আবার কিছু সূত্র অনুসারে অন্যান্য আ’লীগ নেতা, সাংসদ বা মন্ত্রীদের মতো পাপনও দেশ ছেড়েছেন।
পাপন ছাড়াও বিসিবির একাধিক কর্মকর্তা সরাসরি জড়িত ছিলেন আ’লীগের রাজনীতির সঙ্গে। এদিকে রাষ্ট্রীয় অনেক সংগঠনের নেতৃত্ব পর্যায়ে ব্যাপক রদবদল আসতে দেখা যায়। তবে বিসিবির কমিটিতে সেই পরিবর্তন এত সহজে দেখার সুযোগ নেই। কেননা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সরকার কর্তৃক পরিচালিত হয় না। সেখানে কোন প্রকার পরিবর্তন আনতে হলে মানতে হবে আইসিসির নিয়ম। অন্যথায় পড়তে হতে পারে বড় শাস্তির মুখে।
যেমন গতবছর ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ ও পরিবর্তনের কারণে আইসিসি কর্তৃক বড় শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছিল শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটকে। তাই এখনই বিসিবিতে পরিবর্তন দেখার সুযোগ নেই। প্রতি চার বছর পরপর হয়ে থাকে বিসিবির নির্বাচন। নাজমুল হাসান পাপনের বর্তমান কমিটির মেয়াদ আগামী বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রয়েছে। যদিও নতুন নির্বাচনে আ’লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কারো ক্ষমতায় আসা বেশ কঠিন হবে।
এদিকে চলতি বছরের ৩ অক্টোবর বাংলাদেশে শুরু হতে যাওয়া নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়েও আছে ধোয়াসা। কেননা সরকার পতনের পর বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়ে আসেনি। এই কিছু দিনে বিশ্বকাপ আয়োজনের অনুকূল পরিবেশ না ফিরলে বাংলাদেশের বিকল্প ভেন্যু হিসেবে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কথাও চিন্তা করে রেখেছে আইসিসি।
বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাওয়া তিন দেশের সরকার এরই মধ্যে তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশ সফরের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেছে। এদিকে বিকল্প ভেন্যুতে অল্প সময়ের মধ্যে এই মেজর টুর্নামেন্ট আয়োজন করা সম্ভব হলেও থাকছে কিছু সমস্যা। অক্টোবরে শ্রীলঙ্কায় প্রচুর বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে এবং ভারতের ভিসা পেতে জটিলতায় পড়তে হতে পারে পাক ক্রিকেটারদের।
আরও পড়ুন: মাদক-কাণ্ডে আটক অলিম্পিকের খেলোয়াড়
ক্রিফোস্পোর্টস/৮আগস্ট২৪/এফএএস