দক্ষিণ আফ্রিকা যখন মিরপুরে অনুশীলনে ব্যস্ত, ঠিক সেই মূহুর্তে স্টেডিয়ামে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। অনুশীলন শেষে হোটেলে ফেরার পথে হট্টগোলের বিষয়টি চোখে পড়ে এইডেন মার্করামদের। আফ্রিকা শিবিরের কেউ কেউ এ ঘটনার সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন বলেও গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
সাকিব আল হাসানকে ঘিরে ক্রিকেটভক্তরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে মিরপুর শেরে-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের সামনে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটিয়েছে। সাকিবের বিদায়ী টেস্ট ম্যাচ খেলতে না দেওয়ার প্রতিবাদে একটি পক্ষ কয়েকদিন ধরে স্টেডিয়ামের সামনে একত্রিত হচ্ছে। এরপর সাকিব ভক্তরা তাকে দেশের মাটিতে শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলতে দেওয়ার দাবিতে সর্বশেষ আজ হোম অব ক্রিকেটের সামনে আন্দোলনে নেমেছিল। প্রথম দিকে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ হলেও একসময় হামলার মতো ঘটনা ঘটেছে। এরপর মিরপুরে শুরু হয় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পালটা ধাওয়া।
নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ-২০২৪ বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের কারণে নিরাপত্তা ইস্যু বিবেচনা করে শেষ পর্যন্ত ভেন্যু পরিবর্তন করে আইসিসি। ঠিক একই কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার সিরিজও না হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তবে প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণের পর শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশ সফরে এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এখন এ সিরিজ মাঠে গড়ানো নিয়ে অজানা আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দেশের ক্রিকেটে যে এত বড় ক্ষতি হচ্ছে তাতে এই দায় কে নিবেন। সাকিব কি এই দায় এড়াতে পারবেন?
আরও পড়ুনঃ অবশেষে ঘুচলো আক্ষেপ, নারীদের হাতে শিরোপা স্বপ্ন পূরণ নিউজিল্যান্ডের
ভারত সিরিজ চলাকালে টি-টোয়েন্টি এবং টেস্ট ক্রিকেট কে বিদায়ের ঘোষণা দিয়েছিলেন সাকিব। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট ম্যাচটা দেশের মাটিতে খেলতে চেয়েছিলেন। সরকারের তরফে সবুজ সংকেত পাওয়ার পর মিরপুর টেস্টের স্কোয়াডেও রাখা হয়েছিল তাকে। কিন্তু সাকিব বিরোধীদের আন্দোলনে বাধার কারণে বিসিবি থেকে দেশে না আসার পরামর্শ দেওয়া হয় তাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুবাই পর্যন্ত এসে ফিরতে হয়েছে এ অলরাউন্ডারকে।
অথচ সাকিব কানপুরেই যদি বিদায় নিতেন তাহলে এমন উত্তেজনা হয়তো ঘটতো না। তেমন কিছু হলে বিসিবি সেখানেও সাকিবকে বিদায়ী সংবর্ধনা দিতে পারতো। যেমনটা টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলা মাহমুদউল্লাহকে দেয়া হয়েছে। সাকিব দেশের মাটিতে খেলেই বিদায় নিতে চাইলেন। একজন খেলোয়াড় কোথায় বিদায় নিবেন, এটা তার সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ইচ্ছা। বোর্ড বা সমর্থকদেরও এতে আপত্তির কিছু থাকতো না। তবে আপত্তি হলো খেলার সঙ্গে সাকিবের সাথে মিশে গিয়েছে রাজনীতি। এই জন্য-ই ঘটছে এতো কিছু।
এমন আন্দোলনে চলাকালেই আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। যদিও প্রথম টেস্ট ভেন্যু মিরপুরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। এরপরও কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেলে এর দায়- ভার বহন করার শক্তি কতটা থাকবে বিসিবির?
আইসিসি সাধারণত রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের প্রমাণ পেলে সংশ্লিষ্ট দেশকে নিষিদ্ধ করে। যেমনটা করেছিল শ্রীলঙ্কাকে। এছাড়া আরেকটা বিষয় হচ্ছে সফরকারীদের কতটা নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে কতটা সন্তুষ্ট দক্ষিণ আফ্রিকা। যদি তারা কোনো ভাবে অনিরাপদ মনে করলে বিপদ বাড়বে দেশের ক্রিকেটেরই। সে ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার মতো কঠিন সিদ্ধান্তও আসতে পারে।
ক্রিফোস্পোর্টস/২০ অক্টোবর ২৪/এইচআই