২০২২ সালের শেষ পর্যন্ত প্রায় তিন বছরের জন্যে বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচ ছিলেন রাসেল ডমিঙ্গো। সেসময় টাইগারদের কোচিং প্যানেলের বড় একটা অংশ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকান স্টাফদের দখলে। বেশ বিতর্ক নিয়েই বাংলাদেশ দলের কোচিং অধ্যায় সমাপ্ত করেছিলেন সাবেক এই প্রোটিয়া ক্রিকেটার। এবার ইউটিউবের এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে কোচিংয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন তিনি।
‘পিচসাইড পডকাস্ট’ নামক এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা দলকে কোচিং করানোর তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেন ডোমিঙ্গো। এছাড়াও উপমহাদেশীয় (বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তানসহ অন্যান্য) দলে কোনো কোচ আসতে চাইলে তাদেরও দিয়েছেন পরামর্শ, ‘যেকোনো কোচকেই আমি উৎসাহ দিব উপমহাদেশে কোনো না কোনো সময়ে কোচিং করানোর জন্য। কারণ উপমহাদেশে কোচিংয়ের মতো কিছু নেই। এটা বিশৃঙ্খল, এটা নির্মম।’
উপমহাদেশে কোচিংয়ের অভিজ্ঞতা অনেক ভিন্ন বলেও মত সাবেক টাইগার কোচের, ‘কখনও আপনার সস্তা মনে হবে যে এটা কীভাবে কাজ করল অথবা তারা কীভাবে এই দলটা নির্বাচন করল। কিন্তু তবুও কাজ চলে, তারা নিজেদের দিনে যেকোনো দলকে হারাতে পারে। তো এরকম পরিবেশে কোচিং করানো দারুণ শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা যেকোন কোচের জন্য। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকায় এমন কিছুই অভিজ্ঞতা হয়নি আমাদের।’
বাংলাদেশের কোচিংয়ে ভিন্নতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘কোচিংয়ের ২৫ বছর কেটেছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। উপমহাদেশের কোচিংয়ের সঙ্গে কোন কিছুর তুলনা হয় না। যেমন আবেগ, সমর্থন, মিডিয়ার মনোযোগ, জেতার জন্য মরিয়া থাকা এসব দক্ষিণ আফ্রিকার তুলনায় একেবারে ভিন্ন পর্যায়ে। আপনাকে অবশ্যই বুঝতে হবে বাংলাদেশের মতো জায়গায় ২০ কোটি মানুষের বসবাস, এবং শুধুমাত্র ক্রিকেটেই তাদের আগ্রহ। আর ছয় কোটির আফ্রিকায় এটা ছাড়াও ফুটবল, বক্সিং ও রাগবির মতো খেলা আছে।’
বাংলাদেশে কোচিং করানোর সময় টিম ম্যানেজমেন্টের ভরসা পাননি যা প্রোটিয়া দলে তিনি পেতেন বলেও একপর্যায়ে মন্তব্য করেন ডমিঙ্গো। ৪৯ বছর বয়সী এই কোচ বলেন, ‘আমার একটা ম্যানেজমেন্ট দল ছিল সেখানে (দক্ষিণ আফ্রিকা দলের প্রধান কোচ থাকার সময়), যেটিতে আমি শতভাগ বিশ্বাস রেখেছি। আমি জানতাম আমার ওপর তাদের শতভাগ সমর্থন আছে।
‘বাংলাদেশে আপনি পুরোপুরি নিশ্চিত না কখনোই। কারণ আপনি একটা (আলাদা) ম্যানেজমেন্ট দল পেয়ে থাকেন। সেখানে আপনি পুরোপুরি নিশ্চিত না যে এই লোকের এজেন্ডা কী, সে কী করছে, আমি কী এই সিদ্ধান্ত নিতে তার ওপর বিশ্বাস রাখতে পারি বা সে যা বলছে আমি কি তাকে বিশ্বাস করতে পারি। দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ওই সময়ের সংস্কৃতি ও পরিবেশের হিসেবে বাংলাদেশে ছিল অনেক ভিন্ন।’- তিনি যোগ করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ হয়ে এসেছিলেন রাসেল ডোমিঙ্গো। অ্যাশওয়েল প্রিন্স, আফ্রিকান নিল ম্যাকেঞ্জি, অস্ট্রেলিয়ার জেমি সিডন্স থেকে শুরু করে ওটিস গিবসন, শার্ল ল্যাঙ্গাভেল্ট, অ্যালান ডোনাল্ডরা তার প্যানেলে ছিলেন ভিন্ন ভিন্ন সময়। ডমিঙ্গোর অধীনে বাংলাদেশ দলের সফলতার পরিসংখ্যান ছিল মিশ্র।
আরও পড়ুন:
পাকিস্তানকে হারানোর নায়ক কে এই সৌরভ নেত্রভালকার?
সহজ ম্যাচে কঠিন জয়, হাসি মুখে যা বললেন শান্ত
ক্রিফোস্পোর্টস/৮জুন২৪/এফএএস