ক্রিকেটের চোখে বৃষ্টিকে দেখা হয় শত্রুর মতো৷ বৃষ্টিতে ভেস্তে যেতে পারে কোনো দলের স্বপ্ন, আবার কোনো কোনো দলের জন্য বৃষ্টিই হতে পারে আশীর্বাদ৷ তবে ক্রিকেটে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ফলাফল নির্ধারণে পূর্বে বেশ জটিলতায় পোহাতে হত৷ ১৯৯৭ সালে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি প্রচলণের পর সেই জটিলতা অনেকটাই কেটে গেছে৷ ক্রিকেটে ডিএলএস পদ্ধতির আবিষ্কারক কে এই ডাকওয়ার্থ?
ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির অন্যতম উদ্ভাবক ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থ। সম্প্রতি ৮৪ বছর বয়সে পরলোকগমণ করেন তিনি৷ তবে ক্রিকেটের ইতিহাসে অমর থাকবেন ডাকওয়ার্থ৷ ব্যক্তি জীবনে ডাকওয়ার্থ ছিলেন পুরোদস্তুর একজন পরিসংখ্যানবিদ৷ সংখ্যার মারপ্যাঁচে আবদ্ধ ছিল তার জীবন৷ তবে শিক্ষাজীবন কাটিয়েছেন পদার্থবিজ্ঞান ও ধাতুবিদ্যায়৷ ১৯৩৯ সালে ইংল্যান্ডের ল্যাঙ্কাশায়ারে জন্ম নেওয়া এ পরিসংখ্যানবিদ লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থ বিজ্ঞান এবং ধাতুবিদ্যায় পিএইচডি করেন৷
শিক্ষাজীবন শেষে কাজ করেছেন লন্ডনের নিউজ ম্যাগাজিন রয়্যাল স্ট্যাটিসটিক্যাল সোসাইটির সম্পাদক হিসেবে। এরপর দীর্ঘসময় কাজ করেছেন আইসিসির কনসালটেন্ট স্ট্যাটিশিয়ান হিসেবে৷ ২০১৪ সালে দুই পদ থেকেই অবসর নেন ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থ।
আরও পড়ুন :
» সেমিফাইনাল বৃষ্টিতে ভেস্তে গেলে ফাইনালে উঠবে কারা?
» নারী এশিয়া কাপ ২০২৪ : একনজরে পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি
» এলপিএলে মুস্তাফিজের দলে খেলবেন তাওহীদ হৃদয়
১৯৯২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার সেমিফাইনাল ম্যাচে বৃষ্টি আইন নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক দেখা দেয়৷ বৃষ্টির আগে দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য ফাইনালে যেতে ১৩ বলে ২২ রানের প্রয়োজন ছিল৷ কিন্তু বৃষ্টি কাল হয়ে এসেছিল প্রোটিয়াদের জন্য৷ বৃষ্টিতে খেলা কিছুক্ষণ বন্ধ থাকার পর দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য লক্ষ্যটা দাঁড়ায় ১ বলে ২২ রান। এমন অসম্ভব লক্ষ্যে যথারীতি ব্যর্থ হয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
এমন বিতর্ক এড়াতে ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থ ও টনি লুইস মিলে ১৯৯৭ সালে উদ্ভাবন করেন ডাকওয়ার্থ-লুইস (ডিএল) পদ্ধতি৷ সে বছরই হারারাতে ইংল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে প্রথম ব্যবহৃত এই নিয়ম৷ সে ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ে ৭ রানের জয় পায়৷ ২০০১ সালে সীমিত ওভারের ক্রিকেটের জন্য এই নিয়মকে আইসিসি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়।
তবে ডাকওয়ার্থ ও লুইসের অবসরের পর অস্ট্রেলিয়ান পরিসংখ্যানবিদ স্টিভেন স্টার্ন ২০১৪ সালে এই পদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন আনেন। যার ফলে বর্তমানে এই নিয়মকে ডাকা হয় ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন বা ডিএলএস নামে৷
ক্রিকেটে অবদান রাখার জন্য ২০১০ সালে ডাকওয়ার্থ ও লুইস দুজনকেই ‘মেম্বার অব দা অর্ডার অব দা ব্রিটিশ এম্পায়ার’ (এমবিই) স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
ক্রিফোস্পোর্টস/২৭জুন২৪/টিএইচ/এসএ