Connect with us
ক্রিকেট

যে ঘটনার কারণে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের আইপিএলের দরজা বন্ধ

Pakistani crickter was IPL
একটি ঘটনাই বদলে দিয়েছে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের আইপিএল খেলার ভাগ্য। ছবি- সংগৃহীত

আইপিএলের অন্যতম সফল দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে বল হাতে ধেয়ে আসছেন পাকিস্তানের বাঁহাতি পেসার শাহীন শাহ আফ্রিদি! কিংবা দিল্লী ক্যাপিটালসের ভেঙে পরা টপ-অর্ডারে ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব নিয়েছেন বাবর আজম! কল্পনা নয়—বাস্তবেই বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রাঞ্জাইজি লিগ আইপিএলে এমন চিত্র দেখতে পারতেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু একটি ঘটনাই বদলে দিয়েছে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের আইপিএল খেলার ভাগ্য৷

আগে থেকেই ভারত-পাকিস্তানের ভূ-রাজনৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব ছিল স্পষ্ট। উপমহাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি থেকে শুরু করে প্রায় সব কটি অধ্যায়ে এ দ্বন্দ্বের রেশ লেগেছিল৷ শুধু ব্যতিক্রম ছিল ক্রিকেট। ফলে ২০০৮ সালে আইপিএলের প্রথম মৌসুমেই খেলার সুযোগ মিলেছিল শহীদ আফ্রিদি, সোহেল তানভীর, শোয়েব মালিক, শোয়েব আখতার, মোহাম্মদ আসিফ ও মোহাম্মদ হাফিজসহ ১১জন পাকিস্তানি ক্রিকেটারের৷

স্পোর্টিং নিউজের তথ্য বলছে, ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর দুদেশের ক্রিকেট সম্পর্কে ভাঁটা পড়ে৷ এদিন ভারতের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র মুম্বাই শহরের হোটেল তাজসহ ১২টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হামলা চালায় পাকিস্তানের অভ্যন্তরে গড়ে ওঠা লস্কর-ই-তৈয়বাসহ আরো ১০টি সন্ত্রাসী সংগঠন। ভয়াবহ সেই হামলায় তাৎক্ষণিকভাবে প্রাণ হারান ১৮০ জন ভারতীয়। এ ঘটনার পরই ভারত জুড়ে পাকিস্তানের প্রতি বৈরী মনোভাবের প্রতিফলন দেখা যায়৷ বাদ যায়নি ভারতীয় ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিসিসিআই-ও৷

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ও স্পোর্টস ইনসাইডের তথ্য মতে, স্মরণকালের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ‘পাকিস্তানি-সম্পৃক্ততা’র অজুহাতে পরের মৌসুম থেকেই পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের আইপিএল থেকে নিষিদ্ধ করা হয়৷ সেই থেকে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের জন্য আইপিএলের দরজা বন্ধ হয়ে যায়।

আরও পড়ুন: 
» আইপিএল-২০২৪ : সর্বোচ্চ দাম পাওয়া সেরা দশ ক্রিকেটার

» আইপিএল-২০২৪ : রেকর্ড গড়া নিলাম শেষে কে কোন দলে?

এদিকে আইপিএল খেলতে না পারাকে আফসোস হিসেবেই দেখেন পাকিস্তানের অনেক ক্রিকেটার৷ দেশটির সামা টিভিতে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় পাকিস্তানের অন্যতম সেরা পেসার হাসান আলী বলেন, প্রত্যেক খেলোয়াড় আইপিএল খেলতে চায়৷ এটি অবশ্যই বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রাঞ্জাইজি লিগ৷ যদি সুযোগ হয় অবশ্যই ভবিষ্যতে আমি সেখানে খেলতে চাইবো।

এখন পর্যন্ত যে ১১ জন পাকিস্তানি ক্রিকেটার আইপিএল খেলেছিলেন

সোহেল তানভীর (রাজস্থান রয়্যালস)

পাকিস্তানের বাঁহাতি এই পেসারের আইপিএলে যথেষ্ট সফল ছিলেন। ২০০৮ সালে আইপিএলের প্রথম মৌসুমে রাজস্থানের শিরোপা জয়ের অন্যতম নায়ক ছিলেন সোহেল তানভীর৷ সেবার তিনি রাজস্থানের অন্যতম সেরা বোলার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। গোটা টুর্নামেন্টে ১১ ম্যাচে নেন ২২ উইকেট।

শোয়েব আখতার (কলকাতা নাইট রাইডার্স)

‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’ খ্যাত পাকিস্তানের এই গতি তারকা খেলেছিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে৷ কলকাতার হয়ে স্বদেশি উমর গুলের সঙ্গে জুটি বাঁধেন শোয়েব আখতার। ৩ ম্যাচে ৭.৭১ ইকোনমিতে উইকেট তুলেন ৫টি।

Pakistani crickter was IPL

১১ জন পাকিস্তানি ক্রিকেটার আইপিএল খেলেছিলেন। ছবি- সংগৃহীত

উমর গুল (কলকাতা নাইট রাইডার্স)

শোয়েব আখতারের মতো কলকাতা শিবিরে আরো এক বড় নাম ছিল উমর গুল৷ কলকাতা নাইট রাইডার্সের পুরো টুর্নামেন্টে আলো ছড়িয়েছেন এই পেসার৷ কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে একটি ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়ে দল জিতিয়েছিলেন। সে ম্যাচে ২৪ রানও করেছিলেন গুল। পুরো টুর্নামেন্ট ৬ ম্যাচে তুলেন ১২ উইকেট।

শোয়েব মালিক (দিল্লি ডেয়ার ডেভিলস)

২০০৮ সালে পাকিস্তানের অধিনায়ক ছিলেন শোয়েব মালিক। কিন্তু তিনি দিল্লির হয়ে নিয়মিত খেলার সুযোগ পাননি। কারণ ২০০৮ সালে দিল্লির বিদেশি খেলোয়াড়দের তালিকাটা বড় নামে ঠাসা। এবি ডি ভিলিয়ার্স, গ্লেন ম্যাকগ্রা, তিলকরত্নে দিলশান, ড্যানিয়েল ভেট্টরি ছাড়াও শোয়েব মালিককে একাদশে জায়গা পেতে লড়তে হয়েছে স্বদেশি মোহাম্মদ আসিফের সঙ্গেও। তাই বেশির ভাগ ম্যাচেই তাকে বেঞ্চে অলস সময় কাটাতে হয়৷ তবুও ৭ ম্যাচ খেলে ১৩ গড়ে মাত্র ৫২ রান করেছিলেন মালিক৷

সালমান বাট (কলকাতা নাইট রাইডার্স)

২০০৮ সালের আইপিএলের প্রথম মৌসুমে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে শোয়েব আখতার, উমর গুল ও সালমান বাটসহ সর্বোচ্চ ৩জন পাকিস্তানি ক্রিকেটার খেলেছিলেন। কলকাতার বিদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে আরো ছিলেন রিকি পন্টিং, ক্রিস গেইল, ব্রেন্ডন ম্যাককালামের মতো বড় নাম। এই তিন তারকা থাকাকালীন খেলার সুযোগ হয়নি সালমান বাটের৷ কিন্তু আইপিএল চলাকালীন দেশের হয়ে তারা খেলতে চলে গেলে আইপিএলের ভাগ্য দরজা খুলে যায় সালমান বাটের। সুযোগ হয় টপ অর্ডারে ব্যাট করার। সৌরভ গাঙ্গুলী ও সালমান বাটের ওপেনিং জুটি সেসময় দারুণ আকর্ষণ তৈরি করেছিল। ওই মৌসুমে ৭ ম্যাচে ১৯৩ রান করেন সালমান বাট।

এছাড়া আইপিএলের প্রথম মৌসুমে মোহাম্মদ আসিফ (দিল্লী ডেয়ার ডেভিলস), কামরান আকমল (রাজস্থান রয়্যালস), ইউনুস খান (রাজস্থান রয়্যালস) শহীদ আফ্রিদি (ডেকান চার্জার্স), মেসবাহ-উল-হক (রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু) হয়ে আইপিএল খেলেন।

আরও পড়ুন: 

» এবার আইসিসির নিয়মই পাল্টে দিলো আইপিএল

» আইপিএল নিলামে দল পেয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান

» আইপিএল নিলামে ২৩০ কোটি রুপি আদান-প্রদান

ক্রিফোস্পোর্টস/২৬ডিসেম্বর২৩/টিএইচ/এসএ

Click to comment

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Focus

More in ক্রিকেট