বিপিএলের উদ্বোধনী দিনেই প্রায় চারশো রানের এক রোমাঞ্চকর ম্যাচ উপহার দিয়েছে ফরচুন বরিশাল ও দুর্বার রাজশাহী। নানা উত্তেজনায় ভরপুর এই ম্যাচে জয়ের অন্যতম দাবিদার ছিল রাজশাহী। তবে শেষ পর্যন্ত ভাগ্য সহায় হয়নি তাসকিনদের। ব্যাট হাতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ফাহিম আশরাফের বিধ্বংসী এক জুটিতে জয় ছিনিয়ে নেয় বরিশাল।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক এনামুল হক বিজয় ও ইয়াসির আলী রাব্বির ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ১৯৭ রানের বড় পুঁজি পায় রাজশাহী। জবাবে ম্যাচ থেকে অনেকটা ছিটকে গিয়েও মাহমুদউল্লাহ ও ফাহিম আশরাফের ব্যাটে ১১ বল ৬ উইকেট হাতে রেখেই ম্যাচটি জিতে নেয় বরিশাল।
এদিন ফাহিম সাত ছক্কা আর এক চারে ২১ বলে ৫৪ এবং মাহমুদউল্লাহ চার ছক্কা আর পাঁচ চারে ২৬ বলে ৫৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন। এই দুইয়ের কল্যাণেই প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচে জিতে নিয়েছে বরিশাল।
আরও পড়ুন:
» টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওঠার দৌড়ে এগিয়ে কোন দল?
» দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনে জয় দিয়ে বিপিএল মিশন শুরু বরিশালের
তবে জয়টা মোটেও সহজ ছিল না বরিশালের জন্য। বড় রান তাড়ায় নেমে ১১২ রানেই ৬ উইকেট হারায় বরিশাল। তখন মাঠে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ এবং নতুন ব্যাটার হিসেবে মাঠে আসেন ফাহিম আশরাফ। তবে মাহমুদউল্লাহ সেট থাকলেও ফাহিম ছিলেন নতুন। প্রথমে বেশ কয়েকটি বল ডট খেলেন তিনি। তবে মাহমুদউল্লাহর অনুপ্রেরণা পেয়েই ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন ফাহিম।
ম্যাচশেষে সংবাদ সম্মেলনে আসেন ফাহিম। উইকেটে আসার পর মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে কী কথা হয়েছে তার, এমন প্রশ্নের উত্তরে ফাহিম বলেন, ‘প্রথমত, মাহমুদ ভাই (মাহমুদউল্লাহ) একজন জাদুকরী লোক। প্রথম ৬-৭ বল খেলে আমি মাত্র ১ রান করেছিলাম। পরে উনার সঙ্গে কথা হলো। উনি আমাকে বলেছেন, “শুধু টিকে থাকো উইকেটে”। উনার মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড় থাকলে অনুপ্রাণিত হওয়া যায়। কঠিন মুহূর্তগুলো আরো সহজ হয়ে যায়। চাপ কমে যায়।’
মাহমুদুল্লাহর এমন ম্যাচজয়ী ইনিংস প্রথম নয়। এর আগেও বুড়ো হাড়ের ভেলকি দেখিয়েছেন তিনি। কখনো কারো সঙ্গ পেয়েছেন কিংবা কখনো পাননি। তবে এবার এই পাকিস্তানি তারকার সঙ্গে তার কেমেস্ট্রি ভালোই জমে উঠেছিল।
এ প্রসঙ্গে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ম্যাচে যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে। এটা আমাদের ভাবনায় ছিল। তাই খুব সাধারণ পরিকল্পনা নিয়েই আমরা খেলছিলাম। আমরা ২ ওভার করে ভালো করার পরিকল্পনা করে খেলেছি এবং শেষ পর্যন্ত সফলও হয়েছ।’
এদিন অবশ্য ম্যাচসেরার পুরস্কারটি উঠেছে মাহমুদউল্লাহর হাতেই। আর এই পুরস্কারটি তিনি হাসপাতালে ভর্তি তার অসুস্থ ছেলেকে উৎসর্গ করেছেন।
ক্রিফোস্পোর্টস/৩০ডিসেম্বর২৪/বিটি