Connect with us
ক্রিকেট

আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি কে কতবার জিতেছে

icc champions trophy winners
২০১৭ সাল পর্যন্ত চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ৮টি আসর মাঠে গড়িয়েছে। ছবি- সংগৃহীত

বিশ্বে ক্রিকেটকে জনপ্রিয় করেছে এর ফরম্যাট। ক্রিকেটের বৈশ্বিক এই আসরগুলোর মধ্যে রয়েছে ওয়ানডে বিশ্বকাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, আইসিস টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ও চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। প্রতি দুবছর পর পর চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজন করে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা- আইসিসি। এই টুর্নামেন্ট ঘিরে সবার নজর শিরোপার দিকে। আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিকে কতবার জিতেছে? এমন জিজ্ঞাসা সবার। 

ওয়ানডে বিশ্বকাপের পরেই সর্বাধিক জনপ্রিয় আসর চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। এর প্রথম দুটি আসর অনুষ্ঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ (১৯৯৮) ও কেনিয়াতে (২০০০)। যদিও এই দুটি আসরে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির নাম ছিল আইসিসি নক-আউট প্রতিযোগিতা। ২০১৭ সাল পর্যন্ত চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ৮টি আসর মাঠে গড়িয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২ বার করে শিরোপা ঘরে তুলেছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। এছাড়া একবার করে শিরোপা জিতেছে—দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তান।

১৯৯৮ আইসিসি নক-আউট প্রতিযোগিতা  

ক্রিকেটের দ্বিতীয় জনপ্রিয় এই বৈশ্বিক আসরের সূচনা হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। সেইবার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের মাটিতে আইসিসি নক-আউট প্রতিযোগিতা নামে আয়োজিত হয় টুর্নামেন্টটি। প্রথমবারের এই টুর্নামেন্টে ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফাইনাল খেলে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যেখানে ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে হেরে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নিউজিল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল চ্যাম্পিয়নস ট্রফি প্রতিযোগিতার। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে টুর্নামেন্টের প্রথম আসরে শিরোপা ঘরে তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা।


আরও পড়ুন :

» ক্রিকেটে আউট কত ধরনের?

» ক্রিকেটে ‘দুসরা’ কি, কে এই ‘দুসরা’র জনক?

» রিকশায় চড়া, চা বাগান ভ্রমন– বাংলাদেশ কেমন লাগলো আইরিশদের


২০০০ আইসিসি নক-আউট প্রতিযোগিতা

বাংলাদেশে আয়োজনের দুবছর পর আফ্রিকার দেশ কেনিয়াতে টুর্নামেন্টটির দ্বিতীয় আসরের পর্দা উঠে। সেইবার কেনিয়ার নাইরোবিতে বসে ক্রিকেটের গুরুত্বপূর্ণ এই আসরটি। যেখানে অংশগ্রহণ করে কেনিয়া, ভারত শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলগুলো। এরপর টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনাল নির্ধারণে কেনিয়া, ভারত, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের মধ্যে তিনটি পজিশন নির্ধারণী লড়াই চলে। পরবর্তীকালে ফাইনালে উঠে ভারত ও নিউজিল্যান্ড। যেখানে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় নিউজিল্যান্ড। যা কিউইদের ওয়ানডে ইতিহাসের প্রথম সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হয়।

২০০২ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি

১৯৯৮ ও ২০০০ সালে ভিন্ন নামে আয়োজিত হলেও ২০০২ সাল থেকে আত্মপ্রকাশ ঘটে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিনাম দিয়ে। সেই বার শ্রীলঙ্কার মাটিতে নেদারল্যান্ডস ও কেনিয়াসহ সর্বোমোট ১২টি দেশ নিয়ে আয়োজিত হয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। ওই আসরের ফাইনালে ওঠে ভারত ও শ্রীলঙ্কা। কিন্তু ম্যাচের ফলাফলের জন্য বেগ পেতে হয় সমর্থক, খেলোয়াড় দলসহ ও সমগ্র ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সকলকে।

ওই আসরের ফাইনালে প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কা ৫০ ওভার খেলার পর বৃষ্টি বাধায় ভারত ব্যাটিং করতে পারে মাত্র ২ ওভার। ফলে ম্যাচ গড়ায় রিজার্ভ ডে তে। রিজার্ভ ডে তে আবারও বৃষ্টি বাধায় শ্রীলঙ্কা আবারও পূর্ণ ৫০ ওভার খেললেও ভারত খেলতে পারে ৮ ওভার। এভাবে ১১০ ওভার খেলা চললেও ফলাফল থেকে যায় অমীমাংসিত। যার ফলে আইসিসি ভারত ও শ্রীলঙ্কাকে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করে।

ICC champions trophy

আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি (ICC champions trophy)। ছবি- সংগৃহীত

২০০৪ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি

২০০৪ সালে অনুষ্ঠিত হওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফির চতুর্থ আসর বসে ইংল্যান্ডের মাটিতে। টেস্ট মর্যাদা পাওয়া ১০টি দলসহ, ওয়ানডে মর্যাদা পাওয়া কেনিয়া এবং আইসিসি ৬ জাতি প্রতিযোগিতা জয়ী যুক্তরাষ্ট্রও অংশগ্রহণ করে এই আসরে। মোট ১২টি অংশগ্রহণ করা দলকে ৪টি গ্রুপে ভাগ করে হয়। যেখানে প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দলগুলো নিয়ে সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়।

প্রথম সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড অস্ট্রেলিয়াকে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয়। এরপর ফাইনালে জমজমাট ম্যাচের মধ্য দিয়ে শিরোপা জিতে নেয় ব্রায়ান লারার ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। যেখানে বড় অবদান রাখেন দুই ক্যারিবিয়ান কোর্টনি ব্রাউন ও ইয়ান ব্রাড’শ।

২০০৬ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি

ভারতের মাটিতে ২০০৬ সালের ৫ নভেম্বর আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পঞ্চম আসর অনুষ্ঠিত হয়। ওই আসরে ওয়ানডে চ্যাম্পিয়নশীপের শীর্ষ ৬ দল এবং শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ এবং জিম্বাবুয়ের মতো চারটি টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্য রাউন্ড রবিন লিগের মাধ্যমে শীর্ষ ২ দল বাছাই করা হয়। এভাবে প্রথম ৬টি দল এবং রাউন্ড রবিন লিগের শীর্ষ ২টি দল মোট ৮টি দল নিয়ে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিআয়োজিত হয়। ওই আসরে রাউন্ড রবিন লিগ থেকে সুযোগ পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কা।

সেখানে ৪টি করে দল নিয়ে দুটি গ্রুপে ভাগ করা হয়। দুই গ্রুপ থেকে অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ যথাক্রমে নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে সেমিফাইনালে হারিয়ে ফাইনালে উঠে। এরপর ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তোলে অস্ট্রেলিয়া।

২০০৯ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি 

২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত হওয়া আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিআয়োজিত হওয়ার কথা ছিল ২০০৮ সালে পাকিস্তানের মাটিতে। তবে বিভিন্ন দেশের নিরাপত্তাজনিত সমস্যার কারণে সেটা ২০০৯ সালের অক্টোবর আয়েজন করার প্রস্তাব করা হয়। যদিও তাও শঙ্কা জেগেছিল আয়োজন করা সম্ভব হবে কি না। তবে শেষ মুহূর্তে ২০০৯ সালের ১৬ মার্চ আইসিসি ভেন্যু পাকিস্তান থেকে সরিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় নিয়ে যায়। এরপর ২৪ সেপ্টেম্বর-৫ অক্টোবর ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত হয়। ওই আসরে সেঞ্চুরিয়নে নিউজিল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আইসিসির চ্যাম্পিয়নস ট্রফিজয়লাভ করে অস্ট্রেলিয়া।

২০১৩ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি

আইসিসির চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সপ্তম আসর অনুষ্ঠিত হয় ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলসে। ২০১৩ সালের ওই আসরটিতে দ্বিতীয়বারের মতে স্বাগতিক হওয়ার সুযোগ পায় ইংল্যান্ড। সেই আসরে ফাইনালে জায়গা করে নেয় স্বাগতিকরা। কিন্তু ফাইনালে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপা ঘরে তোলে ভারত।

২০১৭ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি

১-১৮ জুন ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে অনুষ্ঠিত হয় আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ৮ম আসর। এই আসরে ভারতকে ১৮০ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতে পাকিস্তান। পাকিস্তান প্রথমে ব্যাট করে ৩৩৮ রানে তোলে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৫৮ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারত। ১১৪ রান করে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন ফখর জামান। ওই আসরে বাংলাদেশ সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে।

আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পরবর্তী দুই আসর ২০২৫ ও ২০২৯ সালে যথাক্রমে পাকিস্তান ও ভারতে অনুষ্ঠত হবে। ২০২৫ সালে আসরটির আয়োজক দেশ পাকিস্তান হলেও এটি হাইব্রিড মডেলে অনুষ্ঠিত হবে।

আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি কে কতবার জিতেছে? জয়ীদের তালিকা; 

দলজয়ের সংখ্যা  জয়ের বছর
অস্ট্রেলিয়া ২ বার২০০৬, ২০০৯
ভারত২ বার২০০২ (যৌথভাবে), ২০১৩
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ বার১৯৯৮
নিউজিল্যান্ড ১ বার২০০০
শ্রীলঙ্কা ১ বার২০০২ (যৌথভাবে)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ বার২০০৪
পাকিস্তান ১ বার২০১৭

ক্রিফোস্পোর্টস/২২ডিসেম্বর২০২৪/এসআর/এসএ

Crifosports announcement
Click to comment

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Focus

More in ক্রিকেট