Connect with us
স্পোর্টস বক্স

ছাত্র আন্দোলন যেভাবে ক্রীড়াঙ্গন ছুঁয়ে গেল

Studentmovement and sports players
ছাত্র-জনতা আরো একবার প্রমাণ করলো দেশের সবচেয়ে বড় শক্তি জনগণ৷ ছবি- সংগৃহীত

দমবন্ধকর পরিস্থিতির ঘন মেঘ অবশেষে কেটে গেল৷ পূর্ব আকাশে উদিত হলো দ্বিতীয় বারের মতো স্বাধীন বাংলাদেশের সূর্য৷ ক্ষমতাসীন দলের পতনের মধ্যে দিয়ে ছাত্র-জনতার মুখে ফুঁটে উঠেছে জয়োল্লাস ও বিজয়ের হাসি।

তবে এই বিজয় খুব সহজেই ধরা দেয়নি৷ আবু সাঈদ ও মীর মুগ্ধের মতো বহু শহীদদের রক্তের বিনিময়ে ধরা দিয়েছে পরম আরাধ্যের এই বিজয়৷ এতে ছাত্র-জনতা আরো একবার প্রমাণ করলো দেশের সবচেয়ে বড় শক্তি জনগণ৷

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রায় পুরোটা সময় জুড়েই ক্রীড়াঙ্গনের নানা তারকাকে নিয়ে সমালোচনা হয়েছিল৷ শুরুতে যেখানে দেশের অন্যান্য পর্যায়ের পেশাজীবী মানুষের সংহতি রয়েছে, সেখানে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে ক্রিকেটার কিংবা ফুটবলারদের পক্ষ থেকে সংহতি না মেলায় তরুণদের অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন৷ বিশেষ করে বাংলাদেশ ক্রিকেটের আইকন সাকিব আল হাসান ও মাশরাফি বিন মর্তুজা সবচেয়ে বেশি জনরোষের কবলে পড়েন৷ শেষদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানালেও তোপের মুখে পড়তে হয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে৷

আরও পড়ুন :

» অবশেষে জায়গা হারালেন পাপন, যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী এখন আসিফ

» বুট জোড়া তুলে রাখলেন পেপে, বিদায় বেলায় যা বললেন

» প্যারিস অলিম্পিক : মাংস খেয়েই সর্বনাশ গ্রিক অ্যাথলেটের!

তবে মুদ্রার উল্টো পিঠে কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও প্রাণহানির ঘটনায় ক্রীড়াঙ্গনের অনেক তারকারা মর্মাহত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে নিজেদের অবস্থানও জানান দিয়েছিলেন তারা৷ এ তালিকায় ছিলেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার তাসকিন আহমেদ, লিটন কুমার দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাওহিদ হৃদয়, শরীফুল ইসলাম, আফিফ হোসাইন, তানজিদ হাসান, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, বাংলাদেশ ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ও আর্চার রোমান সানাসহ অনেকে।

কোটা সংস্কার সংক্রান্ত ছাত্রদের আন্দোলনে তাদের ওপর হামলা ও প্রাণহানির ঘটনায় ক্রীড়াঙ্গন থেকে সবার আগে মুখ খুলেন ক্রিকেটার তাওহীদ হৃদয়৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য ভর্তি হওয়া এই তরুণ ক্রিকেটার ফেসবুকে লিখেছেন, সবকিছু থেকে দূরে আছি, তাই অনেক কিছুই দেখা হয়নি….আমার প্রাণের ঢাকা ইউনিভার্সিটি, আর রক্তাক্ত না হোক।

এরপরই হৃদয়কে অনুসরণ করে ফেসবুকে একই সুরে নিজের অভিমত জানান পেসার শরিফুল ইসলাম৷ তাসকিন আহমেদ ও মেহেদী মিরাজও সংহতি জানাতে দেরী করেনি৷ নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে তারা একই ভাষায় লিখেছেন, ‘শিক্ষাই যদি জাতির মেরুদণ্ড হয়, তবে শিক্ষার্থীরা হলো হৃৎপিণ্ড। আমি চাই না আর রক্ত ঝরুক, খালি হোক কোনো মায়ের কোল।’

Studentmovement and sports players

শুধু দেশ নয়, দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশি খেলোয়াড়দেরও সংহতি জানাতে দেখা গেছে। প্রায় ১৫ হাজার মাইল দূরের দেশ আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী মিডফিল্ডার এনজো ফার্নান্দেজও জানিয়েছেন নিজের সমর্থণ। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন,‘বাংলাদেশের আমার সব ভক্তকে বলছি, আমি তোমাদের কথা শুনছি, তোমাদের জন্য প্রার্থনা করছি।’ পোস্টের সাথে বাংলাদেশের পতাকার সামনে লাল কাপড়ে চোখ বাঁধা এক শিক্ষার্থীর ছবি জুড়ে দেন ২৩ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার। এর আগেও শিক্ষার্থীদের জন্য প্রার্থনা জানিয়ে পোস্ট করতে দেখা যায় চেলসিতে খেলা এই মিডফিল্ডারকে৷

শুধু ক্রীড়াঙ্গনণের খেলোয়াড়রা-ই নয়৷ ক্রীড়া সাংবাদিকরাও ছাত্র-জনতার পক্ষে নিজেদের অবস্থান জানান দেন৷ শিক্ষার্থী-জনতার ওপর নৃশংসতার বিচার ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ চেয়ে মানববন্ধন করেন দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত ক্রীড়া সাংবাদিকরা৷

সর্বশেষ দেশের সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির মাধ্যমে রাজধানীতে লক্ষ লক্ষ ছাত্র-জনতার ঢল নামে৷ জনস্রোতে পতন হয় ক্ষমতাসীন দলের। ৩৬ দিনের ঘন মেঘ ভেদ করে উদিত হয় নতুন সূর্য৷

ক্রিফোস্পোর্টস/৯আগস্ট২৪/টিএইচ/এসএ

Click to comment

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Focus

More in স্পোর্টস বক্স