Connect with us
ক্রিকেট

বাংলাদেশের বদলে ভারত থাকলে ভিন্ন হতো দৃশ্যপট?

বাংলাদেশ দল। ছবি- সংগৃহীত

গতকাল বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের শেষ বল পর্যন্ত ফলাফল নির্ধারণ করা ছিল কষ্টসাধ্য। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে লো স্কোরিং ম্যাচে দুর্দান্ত লড়াই করে গেছে টাইগাররা। তবে শেষ ওভারে ১১ রানের সমীকরণ মেলাতে না পেরে ৪ রানে পরাজিত হয় শান্ত। এমন ক্লোজ ম্যাচ শেষে বাজে আম্পায়ারিং এবং আইসিসির বিতর্কিত নিয়ম নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

এর আগেও আইসিসির বিভিন্ন বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে আম্পায়ারদের বাংলাদেশের বিপক্ষে পক্ষপাত মূলক সিদ্ধান্তের অভিযোগ উঠেছে অনেকবার। মূলত ক্রিকেট পরাশক্তি দেশগুলোর প্রভাবের সামনে তুলনামূলক ছোট দল গুলোর অবমূল্যায়নের কথা বিশ্বাস করেন অনেকেই। এবার যেন সরাসরি সেই কথাটাই তুলে ধরলেন ক্রিকেট বিশ্লেষক এবং ধারাভাষ্যকার সাইমন ডুল।

নিউজিল্যান্ডের সাবেক এই পেস বোলার মনে করেন বাংলাদেশের পরিবর্তে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিপক্ষ ভারত হলে আম্পায়ারদের জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন হতো, ‘ধরা যাক, বিষয়টা ফাইনালে হলো। কিংবা বলা যাক, (বাংলাদেশের বদলে) ভারত ছিল বিপরীতে দিকে। সেটাও হোক একটা ফাইনালে। তাহলে পুরো ম্যাচজুড়ে এমন কিছু (আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত) করে যাওয়া খুব কঠিন হতো।’ 

মূলত গতকাল বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আম্পায়ারদের কিছু বাজে সিদ্ধান্তের জেরে দেখা দিয়েছে বিতর্ক। তাওহীদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে আউট দেওয়ার সিদ্ধান্ত এবং আইসিসির বিতর্কিত ডেড বল আইন ম্যাচের ফলাফলকে প্রভাবিত করেছে বলে মনে করেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরা।

ক্রিকবাজের ম্যাচ পরবর্তী আলোচনায় এ নিয়ে কথা বলেছেন সাইমন ডুল। সেখানে তিনি রিয়াদের আউটের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি বলতে চাইছি, যেভাবে এই পদ্ধতি কাজ করছে, সেখানে কিছু একটা পরিবর্তন অবশ্যই আনতে হবে। কারণ এটা বিশ্রি একটা ভুল। একেবারেই বাজে সিদ্ধান্ত। কোনোভাবেই বলটা (মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের আউট সম্পর্কে) স্ট্যাম্পে আঘাত করতো না।’  

আম্পায়ারের বাজে সিদ্ধান্তে চার রান থেকে বঞ্চিত হয়েছে বাংলাদেশ এমনটাই মনে করেন তিনি, ‘একেবারে বন্দুকধারীর মত দ্রুতগতিতে আম্পায়ার হাত তুলেছে। এটা বাজে সিদ্ধান্ত ছিল। আর আমাদের বলতেই হবে পুরো টুর্নামেন্টেই আমরা খুব ভালো কিছু আম্পায়ারিং দেখেছি। কিন্তু এইক্ষেত্রে সেটা ছিল না। তারচেয়ে বড় কথা, লেগবাইয়ে চার রান হওয়া দরকার ছিল।’  

এদিন দক্ষিণ আফ্রিকার দেওয়া ১১৪ রানের লক্ষ্যে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। ম্যাচের ১৭ তম ওভারে প্রোটিয়া পেসার ওটেনিল বার্টম্যানের একটি ডেলিভারি খেলতে গিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের প্যাডে লাগে। পরবর্তীতে বল তার প্যাডে লেগে বাউন্ডারি লাইন অতিক্রম করে যায়। তবে বোলারের আবেদনের সাড়া দিয়ে সেটিকে এলবিডব্লিউ ঘোষণা করেন আম্পায়ার।

আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মাহমুদউল্লাহর রিভিউ।

অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে রিভিউ নেয় মাহমুদউল্লাহ। দেখা যায় বলটি মিস করে যাচ্ছিল তার লেগ স্টাম্প। এতে করে আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী ডেট বল ঘোষণা করেন। এতে করে বল বাউন্ডারি লাইন অতিক্রম করে গেলেও লেগবাই হিসেবে ৪ রান পাওয়া হয়নি বাংলাদেশের। শেষ পর্যন্ত ৪ রানেই পরাজিত হয়েছিল টাইগাররা।

ক্রিকবাজের আলোচনায় আইসিসির নিয়মে পরিবর্তন আনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ধরা যাক, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শেষ বলে এটা ঘটলো। আর একটা দল এমন বাজে সিদ্ধান্তের কারণে হেরে গেল। যেভাবে এইসব চলছে, তাতে কিছু পরিবর্তন আনতেই হবে। কারণ এখন প্রায়ই এসব হচ্ছে। প্রতিবারই এমন কিছু প্রশ্ন আমি করেছি আইসিসি টুর্নামেন্টের আগে বা পরে। তখন তারা বলে, আমাদের এখানে কিছু করার নেই। এটা খেলার ফলাফলে বড় কোনো প্রভাব ফেলবে না।’  

তবে এই বিষয়গুলো খেলার ফলাফলে প্রভাব বিস্তার করছে এমনটাই জানালেন তিনি। ডুল আরও যোগ করেন, ‘আমি জানিনা কীভাবে এই পরিবর্তন আসবে, কবে এই পরিবর্তন হবে। তবে কিছু একটা পরিবর্তন অবশ্যই আসতে হবে। এগুলো ম্যাচের ফল বদলে দিচ্ছে। আর আমরা এমনটা হতে দিতে পারি না।’

ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময় পরপর দুই দফা আম্পায়ারের বাজে সিদ্ধান্তের বলি হয়েছে বাংলাদেশ দল। পাকিস্তানের সাবেক কিংবদন্তি ক্রিকেটার ওয়াকার ইউনুসও এমনটাই মনে করেন। এই সিদ্ধান্তগুলো ম্যাচে বাংলাদেশের বড় ক্ষতি করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন নিজের ‘এক্স’ পোস্টে। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসে এ বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন তাওহীদ হৃদয় নিজেও।

আরও পড়ুন: বিতর্কিত আইনেই বাংলাদেশের হার, বলছেন ওয়াকার ইউনুস

ক্রিফোস্পোর্টস/১১জুন২৪/এফএএস

Crifosports announcement
Click to comment

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Focus

More in ক্রিকেট