ম্যাচ বাঁচাতে এদিন ভারতের জন্য উইকেটে টিকে থাকার বিকল্প কিছু ছিল না। ৩৪০ রানের লক্ষ্য পূরণ করে ম্যাচ জিততে হলে রীতিমতো রেকর্ড গড়তে হতো তাদের। তবে শেষ দিনে পর্যাপ্ত সময় ছিল না সেই চেষ্টা চালানোর। শুরুর দিকে দ্রুত উইকেট হারানোয় ম্যাচে ড্র করা ছাড়া আর কোন কিছু ভাবেনি ভারত। তবে শেষ পর্যন্ত আর পরাজয় এড়াতে পারল না সফরকারীরা।
বড় রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যাটিং বিপর্যয়ের পড়ে ভারত। এই বেলায়ও উইকেটের এক প্রান্ত আগলে রাখেন যসশ্বী জয়শওয়াল। আগের ইনিংসের নীতিশ কুমারের মতোও কেউ এবার সঙ্গ দিতে পারেননি তাকে। রিশভ পান্তের সঙ্গে জুটি ভাঙার পর একমাত্র ভরসা ছিলেন কেবল এই ভারতীয় ওপেনার।
তবে তার খেলা সাঙ্গ হয় উইকেটের পেছনে বিতর্কিত ক্যাচ আউটে। আর যেখানে আউটের সিদ্ধান্ত দিয়ে ভারতের চক্ষুশুলে পরিণত হন বাংলাদেশি আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহিদ সৈকত। আর সেই উইকেটের পরে দ্রুত গুটিয়ে যায় ভারতের ইনিংস। এতে চতুর্থ টেস্টে পরাজিত হয়ে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি সিরিজে পিছিয়ে পড়ল ভারত।
ইনিংসের ৭১তম ওভারে প্যাট কামিন্সের করা পঞ্চম ডেলিভারিটা ছিল লেগ স্টাম্পের ওপর লাফিয়ে ওঠা বল। পুল শট খেলার জন্য ব্যাট চালান জয়শওয়াল। তবে ব্যাটের খুব কাছ দিয়ে বল পৌঁছে যায় উইকেটরক্ষকের হাতে। আর এতেই সজোরে আপিল করেন অজি ক্রিকেটাররা। অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার এমন আবেদনে সরাসরি নট আউটের সিদ্ধান্ত জানায় ফিল্ড আম্পায়ার।
তবে রিভিউ নেয় স্বাগতিকরা। এতে সিদ্ধান্ত চলে যায় তৃতীয় আম্পায়ার সৈকতের কাছে। রিপ্লেতে দেখা যায় ব্যাট এবং গ্লাভসের খুব কাছে দিয়ে যাচ্ছে বল। সৈকত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় জানান, তিনি স্পষ্ট করেই দেখতে পেয়েছেন বলের গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। এবং বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে রিপ্লেতেও দেখা যায় সামান্য ব্যাট এবং গ্লাভসে স্পর্শ হয়েছে বল।
তবে বিপত্তি বাধে বিষয়টি আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য স্নিকো মিটারের সাহায্য নিলে। কেননা স্নিকোগ্রাফে আউট দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত উপাত্ত পাওয়া যায়নি। তবে স্নিকো মিটারের সঙ্গে একমত হতে পারেননি তৃতীয় আম্পায়ার সৈকত। তিনি আরও কয়েকবার রিপ্লে দেখে আউটের সিদ্ধান্তে উপনীত হন। ফলে মাঠের আম্পায়ার্ডের বদলাতে হয় নিজেদের নট আউটের সিদ্ধান্ত।
আরও পড়ুন:
» বিপিএল ২০২৫ : ঢাকায় প্রথম পর্বে সকল ম্যাচের সময়সূচি
» বিপিএল ২০২৫ : কোচিং প্যানেলসহ সকল দলের পূর্ণাঙ্গ স্কোয়াড
এমন ঘটনায় মাঠেই আম্পায়ারদের ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন জয়শওয়াল। উইকেট ছাড়ার সময় কিছু একটা বলতে দেখা যায় তাকে। অবশ্য ধারাভাষ্যকারদের এক্ষেত্রে পাশে পেয়েছেন সৈকত। হার্শা ভোগলে এবং মার্ক নিকোলাস এটাকে ‘সাহসী ও ন্যায্য’ সিদ্ধান্তই বলেছেন। এমনকি অস্ট্রেলিয়ার চ্যানেল সেভেনে আউটের সিদ্ধান্তের পক্ষেই মত দিয়েছেন অভিজ্ঞ আম্পায়ার সাইমন টোফেলও।
জয়শওয়ালের উইকেটের পর দ্রুত গুটিয়ে যায় ভারতের বাকি ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের দলীয় সংগ্রহ আসে মাত্র ১৫৫ রান। যার মধ্যে একাই জয়শওয়াল খেলেন ৮৪ রানের ইনিংস। এতে করে ১৮৪ রানের বড় ব্যবধানে পরাজিত হয় সফরকারীরা। পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের চার ম্যাচ শেষে ২/১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।
ক্রিফোস্পোর্টস/৩০ডিসেম্বর২৪/এফএএস