ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ—রাজনৈতিক-ভৌগলিক সীমা ছাড়িয়ে এবার ক্রীড়াঙ্গনেও স্পষ্ট হয়েছে। একসময় প্রতিবেশী দুদেশের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তাপ থাকলেও এর ছাপ পড়েনি ক্রীড়া ক্ষেত্রে। ক্রমে সেই চিত্র বদলেছে- এখন যেন মুখ দেখতেই মানা। তবে ক্রিকেট মাঠে দুদেশের খেলোয়াড়দের বেশ সৌহার্দ্যপূর্ণ দেখা গেলেও ভক্ত-সমর্থ, রাজনৈতিক অঙ্গনে এ চিত্র পুরোই মুদ্রার উল্টো পিঠের মতো।
ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট সম্পর্ক অবনতি হতে হতে এখন প্রায় তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। যার জলন্ত উদাহরণ আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফি-২০২৫ আয়োজন ঘিরে জটিলতা। এই জটিলতার সূত্রপাত হয় টিম ইন্ডিয়া থেকে; দেশটি স্বাগতিক পাকিস্তানে খেলতে যাবে না বলে ইউটার্ন নিলে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক- আইসিসির কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে।
বেশ কয়েক মাস ধরে চলমান এই জটিলতা নিরসনে দুদেশকে বেশ কয়েকবার এল্টিমেটাম দিয়েছে আইসিসি। বলেছে— নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে একটি পথ বের করতে; কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
আরও পড়ুন :
» ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে নাহিদ রানা বললেন ‘আলহামদুলিল্লাহ’
» হাথুরুসিংহের সেই আলোচিত কাণ্ড নিয়ে মুখ খুললেন নাসুম
» অনূর্ধ্ব-১৯ নারী বিশ্বকাপে ডি গ্রুপে বাংলাদেশ, প্রতিপক্ষ যারা
এর মধ্যে আশারবাণী- আসরটির আয়োজক পাকিস্তান হলেও ভারতের ম্যাচ হবে অন্য কোনো দেশে। যাকে বলা হচ্ছে হাইব্রিড মডেল। এই মডেলে সম্ভাব্য দেশের তালিকায় সবচেয়ে উঁচুতে রয়েছে আরব আমিরাত। মাঝে শ্রীলঙ্কায় আয়োজনের আওয়াজ শোনা গেলেও তা এখন হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। এই আলোচনার মধ্যে নতুন চমক, ভারতের ম্যাচগুলো আয়োজনে বাংলাদেশের আগ্রহ!
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড- বিসিবি সূত্রের বরাত দিয়ে দেশের একটি বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিকের খবরে বলা হয়েছে- চ্যাম্পিয়নস ট্রফি যদি হাইব্রিড মডেলে হয়; তাহলে বাংলাদেশ চাইবে ভারতের ম্যাচগুলো মিরপুরে আয়োজন করতে।
বিসিবির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফির কয়েকটি ম্যাচ যদি আমরা ঢাকায় আনতে পারি, এর চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে!’
সূত্রের বরাতে দৈনিকটির খবরে আরও বলা হয়, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড-পিসিবি প্রধান মহসিন নাকভির সঙ্গে এ নিয়ে মুঠোফোনে কথাও বলেছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। সেই আলাপে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজনে বাংলাদেশের সমর্থন চেয়েছেন পিসিবি প্রধান। তবে শেষ পর্যন্ত যদি আসরটি হাইব্রিড মডেলে হয়, তাহলে ভারতের ম্যাচগুলো বাংলাদেশ আয়োজন করতে আগ্রহী; এ কথাও জানিয়েছেন বিবিসি বস ফারুক।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়ে ধোঁয়াশা কাটতে পারে ৫ ডিসেম্বর দুবাই আইসিসির সভায়। সেখানে ভারতের ম্যাচ বাংলাদেশে আয়োজনের প্রস্তাব দিলে আলোচনা নতুন মোড় নেবে। তবে ভারত-বাংলাদেশ বর্তমান রাজনৈতিক শীতল উষ্ণ সম্পর্ক প্রধান প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারত বাংলাদেশে এই মুহূর্তে খেলতে আসবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। সেই হিসেবে আমিরাতই এগিয়ে থাকবে। তবে পাকিস্তান যেহেতু স্বাগতিক দেশ তাই তাদের ইচ্ছাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ।
পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে- শেষ পর্যন্ত যদি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হাইব্রিড মডেলে আয়োজিত হয়। তাহলে দুটি শর্ত দেবে পাকিস্তান। এক. আইসিসির রাজস্ব আয় থেকে পিসিবির বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে। দুই. ২০৩১ সাল পর্যন্ত ভারত যেসব বিশ্ব টুর্নামেন্ট আয়োজনের স্বত্ব পেয়েছে, সবগুলো হাইব্রিড মডেলে হতে হবে।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির নবম আসরটি ৮ দল নিয়ে এক দিনের ফরম্যাটে ২০২৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ক্রিফোস্পোর্টস/৩ডিসেম্বর২৪/এসএ