টানা দুই হারের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ১৭ বছরের রেকর্ড ভেঙে লজ্জায় পড়তে যাচ্ছিল ভারত। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে এসে সেই রেকর্ড বাঁচিয়ে রেখেছে, সঙ্গে বাঁচিয়ে রেখেছে সিরিজও। ক্যারিবিয়ান দীপপুঞ্জে আয়োজিত ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ এর পাঁচ ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জয়ের মুখ দেখল ভারত।
মঙ্গলবার রাতে গায়ানার প্রোভিয়েন্স স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সিরিজের ৩য় ম্ম্যাচে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে ৭ উইকেটে হারালেন হার্দিক পান্ডেয়ারা। প্রথমে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১৫৯ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে ভারত ১৭.৫ ওভারে ৩ উইকেটে ১৬৪রান করে জয়ের বন্দরে পৌছে যায় ।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন স্বাগতিক কাপ্তান রভম্যান পাওয়েল। শুরুটা সাবধানে করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের দুই ওপেনার ব্র্যান্ডন কিং এবং কাইল মেয়ার্স। অষ্টম ওভারে আক্সার প্যাটেলের বলে মেয়ার্স (২০ বলে ২৫) আউট হওয়ার পর ম্যাচে ফেরে ভারত। ভারতকে লড়াইয়ে ফেরান কুলদীপ যাদব। তাঁর স্পিন ভালোভাবে সামলাতে পারেননিওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ব্যাটারেরা। জনসন চার্লস আউট হয়ে যান ১৪ বলে ১২ রান করে।
আগের ম্যাচে ব্যাট হাতে ঝড় তোলা নিকোলাস পুরানও (২০) বড় রান পেলেন না এদিন। পর পর উইকেট হারিয়ে কিছুটা রক্ষণাত্মক হয়ে যান ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ওপেনার কিং। তিনি উইকেটের এক দিন আগলে রাখার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু কুলদীপের স্পিনে পরাস্ত হন ওপেনার ব্রান্ডন কিং (৪২ বলে ৪২)।
শেষ দিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের কোনও ব্যাটারই বড় রান পাননি। দলকে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছে দেন অধিনায়ক পাওয়েল। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকেন ১৯ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলে। তাঁর ব্যাট থেকে আসে ১চার এবং ৩টি ছক্কা।
একটা সময় মনে হচ্ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ় ১৫০ রানের গণ্ডি পার করতে পারবে না। কিন্তু, ১৯তম ওভারে আরশদীপ সিংহ একাই দেয় ১৭ রান যার ফলে শেষ দু’ওভারে ২৯ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
জয়ের জন্য ১৬০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভাল করতে পারেনি ভারতীয় দল। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির অভিষেক ম্যাচে রান পেলেন না যশস্বী জয়সওয়াল। ওবেদ ম্যাকয়ের বলে আউট হলেন তরুণ ওপেনার। শুভমন গিলও আবার ব্যর্থ হলেন। দুই ওপেনারকে দ্রুত হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় ভারত।
তবে সূর্যকুমার যাদব এবং তিলক বর্মার জুটির আগ্রাসী ব্যাটিং পাল্টা চাপ তৈরি করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বোলারদের উপর। সাবলীল ব্যাটিংয়ে তাদের জুটিতে ভর করে ভারতীয় ইনিংস বড় হয়। সূর্যকুমারের রানে ফেরায় স্বস্তি ফেরে ভারতীয় শিবিরে। অনেক দিন পরে চেনা ফর্মে দেখা গেল তাঁকে। চাপের মুখে দায়িত্বশীল ইনিংস খেলে জোসেফের বলে আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৪৪ বলে ৮৩ রানের দুরন্ত ইনিংস। ১০টি চার এবং ৪ ছক্কার মাধমে তিনি এই রান করেন।
তৃতীয় উইকেটের জুটিতে তিলকের সঙ্গে মিলে স্কোরবোর্ডে তারা ৮৭ রান যোগ করেন । ততক্ষণে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় ভারত। ফলে জয় পেয়ে আর অসুবিধা হয়নি। তিনি আউট হওয়ার পর তিলকের সঙ্গে জুটি গড়েন অধিনায়ক হার্দিক।
ঝুঁকি নিতে না হলেও দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেওয়ার মূল দায়িত্ব পূর্ণ করেন তিলক। দু’ম্যাচ আগে অভিষেক হওয়া তরুণ ব্যাটারের কাছ থেকে আসে একটি পরিণত ইনিংস। ৪টি চার এবং ১টি ছয়ে শেষ পর্যন্ত ৩৭ বলে অপরাজিত ৪৯ রান করেন তিনি।
জয়ের জন্য দু’রান বাকি থাকতেই ছক্কা মেরে খেলা শেষ করে দেন অধিনায়ক হার্দিক পান্ডেয়া। । হার্দিক অপরাজিত ছিলেন ১৫ বলে ২০ রান করে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের কোনও বোলারই এ দিন ভারতের ব্যাটারদের সমস্যায় ফেলতে পারেননি। ২৫ রানে ২ উইকেট নেন আলজারি জোসেফ।
আরও পড়ুন: আর্জেন্টিনা ফুটবল দলকে ‘আলবিসেলেস্তা’ বলা হয় কেন?
ক্রিফোস্পোর্টস/৯আগস্ট২৩/এজে/এমএইচ