চলছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ– বিপিএলের একাদশ আসর। এরই মধ্যে টুর্নামেন্টের ঢাকা পর্ব শেষ করে খেলা চলছে সিলেটে। মাঠের ক্রিকেট যেন এবার ছাপিয়ে গেছে বাইরের সব আলোচনা সমালোচনাকে। ক্রিকেটাররা যেমন ধারাবাহিকভাবে মাঠ মাতাচ্ছেন, দর্শকরাও দল বেঁধে আসছেন স্টেডিয়ামে। সব কিছুর আড়ালেই কি নীরবে একজনকে মিস করছে বিপিএল!
বিপিএলের শুরু থেকেই সাকিব আল হাসানকে না পাওয়ার আক্ষেপ প্রকাশ করেছিল অসংখ্য দেশি-বিদেশি ক্রিকেটাররা। ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট অনেকেই আশা করছিলেন শেষ পর্যন্ত মাঠে দেখা যাবে তাকে। তবে দেশের ক্রিকেটের বড় এই সুপারস্টারকে দেখা যাচ্ছে না এবারের টুর্নামেন্টে। অবশ্য সেই দায় সম্পূর্ণই সাকিবের। ক্রিকেট খেলা অবস্থায় তার রাজনীতিতে যোগ দেয়াই হয়েছে নিজের কাল।
তাইতো কিছুদিন আগেই এক ভিডিওতে পাকিস্তানি তারকা ক্রিকেটার শহীদ আফ্রিদি রাজনীতিতে আসার প্রশ্নে উদাহরণস্বরূপ এনেছিলেন টাইগার ক্রিকেটারদের অবস্থা। মূলত সাকিব-মাশরাফিদের উদাহরণ টেনে তিনি তামিমকে বলেছিলেন, ‘তোমাদের অবস্থা দেখে নিয়েছি। এখন আর রাজনীতিতে আসছি না।’
অনেকেই বলেছিলেন সাকিব না থাকলে বয়কট করবেন বিপিএলকে। তবে দেশের ক্রিকেটের প্রতি আবেগ থেকে হয়তো তেমন কিছুই আর করে ওঠেনি ভক্তরা। বরং নিয়মিতই মাঠে আসছেন সাকিব প্রেমিরা। আর গ্যালারিতে এসেই ছড়িয়ে দিচ্ছেন সাকিবকে ভালোবাসার বার্তা। প্রায় প্রতি ম্যাচেই মাঠে দেখা যায় এই তারকা অলরাউন্ডারকে বিপিএলে মিস করার বার্তা সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন।
ভক্ত সমর্থকদের বার্তা ছাড়াও বিপিএলে সাকিবকে মিস করা হবে তার কিছু রেকর্ডের কারণে। নিঃসন্দেহে এই টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সেরা বোলার তিনি। ১২৩ ইনিংসে ১৪৯ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের শীর্ষ উইকেট শিকারী তিনি। তার বোলিং গড় মাত্র ১৮.৬ ও ইকোনমি ৬.৪৯। এছাড়া বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৭ বার ম্যাচ সেরা এবং সর্বোচ্চ চারবার টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার পুরস্কার জিতেছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
» অবশেষে জয়, সিলেটের দর্শকদের ধন্যবাদ দিলেন জাকির
» তামিমকে বিদায়ী বার্তা দিলেন মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ
প্রসঙ্গত, ছাত্র জনতার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ফলে গেল বছর ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রভাব পড়ে দেশের প্রায় সকল সেক্টরে। যার ব্যতিক্রম ছিল না ক্রিকেটাঙ্গনও। যেখানে সব থেকে বেশি সমালোচনার শিকার হন তৎকালীন সরকারের সংসদ সদস্য এবং বর্তমান ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান।
দেশের সংকটকালীন সময়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে সাকিব ক্ষোভের মুখে পড়েন তরুণ সমাজের একটা বড় অংশের। যদিও একটা সময় পর নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে ক্ষমা চেয়েছেন এই টাইগার অলরাউন্ডার। তবুও ঘরের মাঠে শেষ টেস্ট খেলার আসা করেও পারেননি তা করতে। এমনকি বিপিএলে সকল ধরনের বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতা পরিহার করতে দেখা যাচ্ছে না তাকে।
যদিও বিপিএলের অসংখ্য রেকর্ডের পাতা বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে তার কথা। তবে বর্তমান সময়েও গোটা দেশ বিভক্ত হয়ে আছে এই সাকিবের দেশের মাটিতে খেলা না-খেলার প্রশ্নে। এদিকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জাতীয় দলের জার্সিতে দেখা যাবে তাকে এমন প্রত্যাশা করেছিলেন অনেকে। তবে অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের অভিযোগে আপাতত বল হাতে নিষেধাজ্ঞায় থাকা সাকিবকে সেখানেও দেখা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা।
ক্রিফোস্পোর্টস/১১জানুয়ারি২৫/এফএএস