
বাংলাদেশকে নিজেদের পেস আক্রমণ দিয়ে ধরাশাই করার পরিকল্পনা করেছিল পাকিস্তান। তাই নিজেদের ঘরের মাঠে তৈরিও করেছিল সে অনুযায়ী উইকেট। এমনকি প্রথম টেস্টে দলে রাখা হয়নি কোন স্বীকৃত স্পিনার। চার পেসার নিয়ে পাকিস্তান দল সাজালেও ম্যাচে শেষ পর্যন্ত জয়ের পার্থক্য গড়ে দেন বাংলাদেশের স্পিনাররাই।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজে পাকিস্তানের ঘোষণা করা স্কোয়াডে স্বীকৃত স্পিনার হিসেবে ছিলেন কেবল আবরার আহমেদ। তবে প্রথম টেস্ট শুরু হওয়ার তিন দিন আগেই সেই ক্রিকেটারকে দল থেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাগতিকরা। এতে সম্পূর্ণ পেস নির্ভর দলে পরিণত হয় তারা। তবে উইকেট যেমনই হোক স্পিনারদের ওপর আস্থা রাখার কথা বলেছিলেন বাংলাদেশের স্পিন কোচ মুশতাক আহমেদ।
রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের প্রথম চারদিন উইকেট থেকে স্পিনাররা খুব বেশি সুবিধা করতে না পারলেও শেষ পর্যন্ত নিজের চেনার উপায় ফিরেছে উপমহাদেশের উইকেট। যেখানে মুশতাক আহমেদের কথাই ফলেছে। ম্যাচে শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করেছে স্পিনাররাই। শেষ দিনের দেড় সেশনে সাকিব-মিরাজ জুটি বেধে তুলে নিয়েছেন প্রতিপক্ষের ৭ উইকেট। আর সেখানেই ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ।
পেস সহায়ক উইকেট তৈরি করে ম্যাচ হেরেছে পাকিস্তান এটাই প্রথম নয়। ২০২১ সাল থেকে গত তিন বছরে একই পরিকল্পনা করে আসছে দলটি। মূলত শাহীন আফ্রিদি-নাসিম শাহদের মত বিশ্বসেরা পেসারদের দিয়ে আক্রমণ তৈরির চেষ্টা করেছে স্বাগতিকরা। তবে ঘরের মাঠে ধারাবাহিকভাবে ফলাফল এনে দিতে ব্যর্থ হয়েছে তাদের এই পরিকল্পনা। শেষ তিন বছরে টেস্টে সর্বোচ্চ ৪৩ রান খরচ করতে হয়েছে পাকিস্তানি বোলারদের উইকেট শিকারে।
পেস আক্রমণ দিয়ে খুব সুবিধা করতে পারছে না পাকিস্তান, তার আরেকটি পরিসংখ্যান হচ্ছে গেল তিন বছরে ৩ বার ১৫০ ওভারের বেশি এক ইনিংসে বল করতে হয়েছে তাদের। রাওয়ালপিন্ডি এই টেস্টের প্রথম ইনিংসেই বাংলাদেশ ব্যাটিং করেছে ১৬৭ ওভারের বেশি। পেস সহায়ক উইকেট তৈরি করেও পেসাররা খুব একটা আহামরি কিছু করতে পারেনি। বরং শেষ দিনে সাকিব-মিরাজের বোলিং ঘূর্ণিতেই কোমর ভেঙেছে পাকিস্তানের।
পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে যখন টাইগার তিন পেসার মিলিয়ে পেয়েছেন ৩ উইকেট, তখন সাকিব আল হাসান একাই ১৭ ওভার হাত ঘুরিয়ে করেছেন ৩ শিকার। আরও একধাপ ওপরে ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ১১.৫ ওভার বোলিং করে তিনি তুলে নিয়েছেন পাকিস্তানের ৪ উইকেট। এই দুই স্পিনারের বোলিং জাদুতেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: সাকিবের নামে ‘মিথ্যা মামলা’, বলছেন মমিনুল
ক্রিফোস্পোর্টস/২৬আগস্ট২৪/এফএএস
