Connect with us
ফুটবল

কোয়ার্টার ফাইনালে আল-হিলালকে হারিয়ে সেমিতে ইত্তিহাদ

al hilal vs al ittihad
আল হিলাল বনাম আল ইত্তিহাদ। ছবি- সংগৃহীত

জানুয়ারি ৭, ২০২৫ তারিখে এক রোমাঞ্চকর ফুটবল ম্যাচে আল-ইত্তিহাদ কিংস কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে আল-হিলালকে হারিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছে গেছে। নির্ধারিত সময় ও অতিরিক্ত সময় শেষে ম্যাচটি ২-২ সমতায় শেষ হয়। তবে পেনাল্টি শুটআউটে আল-ইত্তিহাদ ৩-১ ব্যবধানে জয়ী হয়। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের কিংডম অ্যারেনায়।

ম্যাচের শুরু থেকেই দুই দলই আক্রমণাত্মক কৌশল অবলম্বন করে। তবে ১৩তম মিনিটেই আল-হিলাল বড় ধাক্কা খায়। তাদের তারকা ফরোয়ার্ড আলেকসান্ডার মিত্রোভিচ হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন। এই ইনজুরি তাদের কৌশলগত পরিকল্পনায় প্রভাব ফেলে।মিত্রোভিচের অনুপস্থিতির পরও আল-হিলাল সুযোগ তৈরি করে। ১৬ মিনিটে সালেম আল-দাওসারি প্রায় গোল করতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু তার শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে।

আল-ইত্তিহাদের তারকা করিম বেঞ্জেমা প্রথমার্ধে বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরি করেন। ২৬ মিনিটে তার একটি কার্লিং শট আল-হিলালের গোলকিপার ইয়াসিন বুনু দক্ষতার সঙ্গে সেভ করেন। প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে এন’গোলো কান্তের একটি শট বুনু রুখে দিলেও বেঞ্জেমা সেই বল রিবাউন্ড করে জালে পাঠান। তবে অফসাইডের কারণে সেই গোল বাতিল হয়। ফলে প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য সমতায়।

দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচ আরও রোমাঞ্চকর হয়ে ওঠে। ৬৩ মিনিটে মুহান্নাদ আল-শানকিতির ক্রস থেকে বেঞ্জেমা বল নিয়ন্ত্রণ করেন এবং দারুণ এক ফিনিশিংয়ে আল-ইত্তিহাদকে এগিয়ে দেন। তবে আল-হিলালও দ্রুতই ঘুরে দাঁড়ায়। ৭২ মিনিটে সালেম আল-দাওসারি একটি অসাধারণ গোল করেন। তার দূরপাল্লার শট কোনোভাবেই রুখতে পারেননি আল-ইত্তিহাদের গোলকিপার প্রেড্রাগ রাজকোভিচ। এরপর নির্ধারিত সময়ে আর কোনো গোল না হওয়ায় ম্যাচটি অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়।

অতিরিক্ত সময়ে আল-হিলাল ম্যাচে ফের এগিয়ে যায়। ১০১ মিনিটে মোতেব আল-হারবির ক্রস থেকে মারকোস লিওনার্দো একটি নিচু শটে গোল করেন। ম্যাচ যখন প্রায় আল-হিলালের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছিল, তখন বেঞ্জেমা আবারও আল-ইত্তিহাদকে বাঁচিয়ে দেন। ১১৪ মিনিটে তিনি গোল করে ম্যাচটি ২-২ সমতায় নিয়ে আসেন।

পেনাল্টি শুটআউটের পুরো নাটকীয়তার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন আল-ইত্তিহাদের গোলকিপার প্রেড্রাগ রাজকোভিচ। তিনি আল-হিলালের চারটির মধ্যে তিনটি পেনাল্টি সেভ করেন এবং দলের জয়ের মূল কারিগর হয়ে ওঠেন। আল-হিলালের প্রথম পেনাল্টি শটটি নেন মোহাম্মদ কান্নো। তবে রাজকোভিচ তা দক্ষতার সঙ্গে সেভ করেন। অন্যদিকে বেঞ্জেমা আল-ইত্তিহাদের প্রথম পেনাল্টি সুযোগটি কাজে লাগান।


আরও পড়ুন:

» আর্সেনালকে হারিয়ে স্বপ্নের ফাইনালের আরও কাছে উড়ন্ত নিউক্যাসল

» নিউজিল্যান্ড-শ্রীলঙ্কা ওয়ানডে ম্যাচসহ আজকের খেলা (৮ জানুয়ারি ২৫)


এরপর আল-হিলালের দ্বিতীয় শটটি নেন মারকোস লিওনার্দো। রাজকোভিচ সেটিও সেভ করেন। ফ্যাবিনহো আল-ইত্তিহাদের হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন। ড্যানিলো পেরেইরা আল-হিলালের হয়ে একটি পেনাল্টি গোল করলেও চতুর্থ শটে ম্যালকমের শট রাজকোভিচ ফেরালে আল-ইত্তিহাদ ৩-১ ব্যবধানে জয়ী হয়।

এই জয়ের মাধ্যমে আল-ইত্তিহাদ কিংস কাপের সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয়। এই জয়টি আল-ইত্তিহাদের সমর্থকদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল কারণ এটি আল-হিলালের টানা ১১টি কিংস কাপ ম্যাচ জয়ের ধারাবাহিকতা ভেঙে দেয়। ম্যাচ শেষে আল-ইত্তিহাদের খেলোয়াড়রা ও সমর্থকরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। করিম বেঞ্জেমার অসাধারণ পারফরম্যান্স এবং রাজকোভিচের সেভ ম্যাচের প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে ওঠে।

আল-ইত্তিহাদ দলের ফরাসি কোচ লরেন্ট ব্লাঁ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দল পরিচালনা করেন। তার কৌশলগত দিকনির্দেশনায় দলটি আক্রমণ এবং রক্ষণ উভয় ক্ষেত্রেই ভারসাম্য বজায় রাখতে সক্ষম হয়। মিডফিল্ডে এন’গোলো কান্তে ও ফ্যাবিনহোর উপস্থিতি দলকে স্থিতিশীলতা দেয়। তারা প্রতিপক্ষের আক্রমণ ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি আক্রমণ তৈরি করতেও ভূমিকা রাখেন।

অন্যদিকে, আল-হিলাল তাদের প্রধান খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতি এবং মিত্রোভিচের ইনজুরির পরও ভালো পারফর্ম করে। কোচ তাদের কৌশলগত পরিবর্তন এনে দলকে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় রাখেন। ম্যাচটি আন্তর্জাতিক ফুটবল ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভক্তরা ম্যাচের রোমাঞ্চকর মুহূর্তগুলো নিয়ে আলোচনা করেন।

আল-ইত্তিহাদের সমর্থকরা তাদের দলের জয় উদযাপন করতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নানা পোস্ট দেন। বিশেষত বেঞ্জেমা ও রাজকোভিচের পারফরম্যান্সের জন্য তাদের ভূয়সী প্রশংসা করেন।এই জয়ের মাধ্যমে আল-ইত্তিহাদ কিংস কাপের সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। তাদের পরবর্তী লক্ষ্য হবে টুর্নামেন্টে শিরোপা জয় করা।

আল-ইত্তিহাদের এই জয় শুধু তাদের সেমিফাইনালে নিয়ে যায়নি, বরং দলের আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়ে দিয়েছে। করিম বেঞ্জেমার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স এবং প্রেড্রাগ রাজকোভিচের নৈপুণ্য ফুটবলপ্রেমীদের মনে দীর্ঘদিন ধরে গেঁথে থাকবে। এই জয় তাদের জন্য ঐতিহাসিক একটি অধ্যায় হয়ে থাকবে এবং কিংস কাপ শিরোপার দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

ক্রিফোস্পোর্টস/৮জানুয়ারি২৫/আইআর/এফএএস

Crifosports announcement
Click to comment

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Focus

More in ফুটবল