গত গ্রীষ্মকালীন দলবদলে মিডফিল্ড নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেছিল লিভারপুল৷ মিডফিল্ডে নতুনত্ব আনতে নিজেদের সর্বস্বটুকু উজাড় করে দিয়েছিল অলরেডরা। ফলে ফাবিনহো, জেমস মিলনারদের উত্তরসূরী হিসেবে এনফিল্ডে আগমন ঘটে অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার, ডমিনিক সবোজস্লাই, রায়ান গাভেনবার্চ ও ওতারু এন্দোদের মতো তারকাদের৷ এর ফলাফলও পেয়েছে লিভারপুল৷ বছর শেষে প্রিমিয়ার লীগে টেবিলের চূড়ায় রয়েছে তাদের অবস্থান৷
তবে অবস্থান টেবিলের চূড়ায় থাকলেও মৌসুম জুড়ে চোটের কবলে পড়ে ছিটকে গেছে জোয়েল মাতিপ, অ্যান্ডি রবার্টসন, সিমিকাস, ম্যাক অ্যালিস্টারের মতো গুরুত্বপূর্ণ নাম৷ অন্যদিকে এশিয়ান কাপ ও আফ্রিকান নেশনস কাপের সাথে প্রিমিয়ার লীগের সূচি সাংঘর্ষিক হওয়ায় দলের সবচেয়ে বড় তারকা মোহাম্মদ সালাহ এবং মিডফিল্ডার ওতারু এন্দোকে শুরুর দিকে পাবে না ক্লপ৷ নেশনস কাপের ফাইনাল ১১ ফেব্রুয়ারি। ফলে সালাহর মিসর ফাইনালে উঠলে প্রিমিয়ার লীগ, এফএ কাপ ও কারাবাও কাপ মিলিয়ে ৮টি ম্যাচে সালাহকে পাবে না লিভারপুল।
তাই সালাহবিহীন লিভারপুল কেমন করবে, তার উপর নির্ভর করবে লিভারপুলের লিগ জেতার ভাগ্য৷ তবে জানুয়ারির দলবদলের বাজারে স্কোয়াডের শক্তি বাড়ানোর কথা মাথায় রেখে তড়িঘড়ি করে নামছে লিভারপুল। এবারের দলবদলে সেন্টারব্যাক, ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় নজর রয়েছে অলরেডদের।
স্কোয়াডে শক্তি বাড়াতে যাদের ওপর চোখ রয়েছে-
ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার
গত গ্রীষ্মকালীন দলবদলে লিভারপুলকে মিডফিল্ড পুনঃনির্মাণে ব্যয় করতে হয়েছে প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ইউরো৷ কিন্তু এতেও চেলসির সাথে পাল্লা দিয়ে রোমিও লাভিয়া, মইসেস কাইসেদোর মতো বড় নামকে দলে ভেড়াতে পারেনি লিভারপুল। ফলে অলরেডদের স্কোয়াডে একজন কার্যকরী ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের অভাব এখনো চোখে পড়ছে। তাই এবারের জানুয়ারির দলবদলে লিভারপুলের চোখ রয়েছে ফ্লুমিনেন্সের ২২ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার আন্দ্রের দিকে৷ তবে আন্দ্রেকে দলে ভেড়াতে লিভারপুলকে লড়তে হবে ফুলহাম ও আর্সেনালের সাথেও৷
আন্দ্রে ছাড়াও লিভারপুলের চোখ রয়েছে বেনফিকার ১৯ বছর বয়সী মিডফিল্ডার জোয়াও নেভেস ও লিডস ইউনাইটেডের ১৭ বছর বয়সী মিডফিল্ডার আর্চি গ্রের দিকে।
সেন্টারব্যাক
আজ হোক কিংবা কাল, এনফিল্ডে নতুন কোনো সেন্টারব্যাক আসবে তা অনেকটাই প্রত্যাশিত। সে প্রত্যশার পারদ আরো জোরালো হয়েছে জোয়েল মাতিপের অনুপস্থিতির ফলে। চোটের কারণে দলের বাহিরে থাকা মাতিপের চুক্তি শেষ হবে চলতি বছরের ৩০ জুন। অন্যদিকে অ্যান্ডি রবার্টসন ও সিমিকাসের চোটের কারণে দলবদলে বাড়তি নজর কেড়েছে ডিফেন্স লাইন।
পর্তুগালের স্পোর্টিং সি পি এর ২২ বছর বয়সী তরুণ ডিফেন্ডার গঞ্জালো ইনাসিওকে দলে ভেড়াতে পারে মার্সিসাইড ক্লাবটি৷ ইনাসিও সেন্টারব্যাক ছাড়াও একাধারে খেলতে পারেন রাইট-ব্যাক ও মিডফিল্ডে। ফলে তাঁর ওপর বাড়তি নজর রয়েছে লিভারপুলের৷ তবে ইনাসিওর দিকে চোখ রয়েছে স্পেনিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদেরও৷
মাতিপের চোটের কারণে লিভারপুলের চোখ রয়েছে জোনাথন তাহ-এর ওপর। বুন্দেসলিগা ক্লাব বায়ার লেভারকুসেনের এ ডিফেন্ডারকে চলতি দলবদলে এনফিল্ডে দেখা যেতে পারে৷
অ্যাটাকিং লাইন
ডারউইন নুনেজ, কোডি গাকপো, লুইস দিয়াজের মতো তরুণ ও ধারালো আক্রমণভাগে ঠাসা লিভারপুল৷ তবে চলতি মৌসুমে মাঠের খেলায় কেউই নিয়মিত নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি। অন্যদিকে দিয়োগো জোটার চোটের কারণে গোল স্কোরিংয়ের ক্ষেত্রে অনেকটাই মোহাম্মদ সালাহ’র ওপর নির্ভরশীল ছিল অলরেডরা৷ কিন্তু আফ্রিকান নেশন কাপের ফলে দলে অনুপস্থিত থাকবে এ তারকা৷ তাই এবার দলবদলে আক্রমণভাগের ওপরও রয়েছে লিভারপুলের নজরদারি।
ডাচ ক্লাব পিএসভি এইন্থোভেনের তরুণ উইঙ্গার জোহান বাকায়োকোকে দলে ভেড়াতে পারে অলরেডরা৷ লিভারপুল ছাড়াও ২২ বছর বয়সী এ বেলজিয়ানকে দলে ভেড়ানোর দৌঁড়ে রয়েছে আরেক ইংলিশ ক্লাব ব্রেন্টফোর্ড৷
আক্রমণভাগের ধার বাড়াতে জার্মান ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের ১৯ বছর বয়সী তরুণ স্ট্রাইকার ইউসুফা মুকোকা এর দিকে নজর রয়েছে লিভারপুলের। যদিও চলতি মৌসুমে মুকোকা এখনো নিজেকে মেলে ধরতে পারেনি৷ বুন্দেসলিগা ৮ ম্যাচে ১ গোল ও ডিএফবি পোকাল সুপারকাপে ৩ ম্যাচে ১ গোল করেন।
আরও পড়ুন: আনচেলত্তির ‘না’, ব্রাজিলের কোচ হওয়ার দৌঁড়ে এগিয়ে কারা?
ক্রিফোস্পোর্টস/০৪জানুয়ারি২৪/টিএইচ/এমটি