ধাক্কা থেকে শুরু হওয়া তর্কের জেরে রীতিমতো উত্তপ্ত অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের ক্রিকেটাঙ্গণ। বাদ যায়নি অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যমও। বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি শুরু হওয়ার আগে এই সিরিজের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন ছিলেন বিরাট কোহলি। তবে সিরিজের মাঝ পথেই কোহলির আচরণের কারণে দৃশ্যপট বদলাতেও সময় লাগেনি। হিরো থেকে রীতিমতো ভিলেনে পরিণত হয়েছেন কোহলি।
কনস্টাসকে ধাক্কা মেরে তর্কে জড়ানোর পর অস্ট্রেলিয়ান গণমাধ্যম কোহলিকে ‘জোকারের’ মত করে উপস্থাপন করেছে। যা অস্ট্রেলিয়ান গণমাধ্যম আবার ফলাও করে প্রচারও করছে।
মেলবোর্ন টেস্টের প্রথম দিনের খেলা চলাকালে অভিষিক্ত স্যাম কনস্টাসকে ধাক্কা মারেন ভারতের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার বিরাট কোহলি। এতে করে আইসিসির শাস্তির মুখেও পড়তে হয়েছে তাঁকে।
ওই ঘটনার পরে কোহলিকে ম্যাচ ফি’র ২০ শতাংশ জরিমানা এবং ১টি ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়া আইসিসি। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আইসিসির কোড অব কন্ডাক্টের ২.১২ ধারা ভঙ্গ করেছেন ভারতের সাবেক এই অধিনায়ক।
আরও পড়ুন:
» ইতিহাসের তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে বাবরের বিশেষ রেকর্ড
» রোহিতের উইকেট নিয়ে কামিন্স গড়লেন নতুন কীর্তি
অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যম কর্তৃক কোহলিকে ‘জোকার’ হিসেবে উপস্থাপন করাকে মোটেও ভালোভাবে নেননি ভারতের সাবেক ক্রিকেটাররা। এ বিষয়ে স্টার স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরফান পাঠান বলেন, ‘এর আগেও অস্ট্রেলিয়া আমাদের বিভিন্নভাবে অপমান করেছে। কখনও স্লেজিং, কখনও বল ছুড়ে মারা, আবার কখনও ধাক্কা মারা সবকিছু করেছে তাঁরা।’
মেলবোর্ন টেস্টের প্রথম দিনের ১০ম ওভার শেষে ক্রিজের অপর প্রান্তে থাকা খাজার কাছে যাচ্ছিলেন কনস্টাস। এমন সময় ক্রিজ বরাবর কনস্টাসের পাশ দিয়ে আসছিলেন কোহলি তখনই মূলত ধাক্কা লেগে যায় দুজনের মধ্যে। একপর্যায়ে তর্কে লিপ্ত হন দুজনই। এ বিষয়ে কথা বলেন সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইকেল ভন। এসময় তিনি বলেন, ‘কনস্টাসকে উত্তেজিত করাই ছিল মূলত কোহলির মূল উদ্দেশ্য।’
এ বিষয়ে কোহলি মোটেও নিজেকে নিয়ে গর্ব করবেন না বলেও মনে করেন ভন। এসময় মাইকেল ভন বলেন, ‘আমি মনে করি না কনস্টাসকে ধাক্কা দিয়ে কোহলি নিজেকে নিয়ে গর্ব করবেন। কারণ দেখুন কোহলি হাঁটার সময় তাঁর পথের গতি চেঞ্জ করেছেন এবং কনস্টাসও নিজের মতো হেঁটে গেছেন।’
বিষয়টি নিয়ে অখুশি স্বয়ং ভারতীয় গ্রেট সুনীল গাভাস্কারও। দুজনেরই শাস্তি হতে পারে বলে মনে করেন তিনি। এ বিষয়ে গাভাস্কার বলেন, ‘আমার মনে হয় দুজনেই মাথা নীচু করে হাঁটছিলেন। ফলে ধাক্কাটা লেগেছে। তবে দুজন যদি পথের গতি চেঞ্জ করতো তাহলে এমনটা ঘটতো না। এখন দেখা যাক আইসিসি কাকে বেশি জরিমানা করে।’
রিকি পন্টিংয়ের চোখেও দৃষ্টিকটু ছিল কোহলির আচরণ। ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় চ্যানেল সেভেনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পন্টিং বলেন, ‘দেখুন, কোহলি নিজেই পিচের ভিতর দিয়ে হেঁটেছে। পুরো পিচ পাড়ি দিয়ে কোহলিই ঝগড়ার সূচনা করেছ।’ তর্কের বিষয়ে মুখ খুলেছেন স্বয়ং কনস্টাসও। তিনি বলেন, ‘তখন আমাদের কাঁধে ধাক্কা লেগেছিল। এরপর তর্ক শুরু হয়। এটা মূলত ক্রিকেটে স্বাভাবিক বিষয়। তবে যখন আমাদের সঙ্গে ঘটনাটি ঘটেছে তখন দুজনেরই আবেগ বেশি ছিল।’
অস্ট্রেলিয়ার চতুর্থ কনিষ্ঠতম ক্রিকেটার হিসেবে ক্রিকেটের রাজকীয় ফরম্যাট টেস্টে অভিষেক ঘটেছে কনস্টাসের। অভিষেক হওয়ার দিনে কনস্টাসের বয়স হয়েছে ১৯ বছর ৮৫ দিন। অভিষিক্ত দিনে ব্যাট হাতে ৬৫ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৬০ রান করেন এই তরুণ।
ক্রিফোস্পোর্টস/২৭ডিসেম্বর২৪/এসআর/বিটি