রংপুর রাইডার্স সম্প্রতি গ্লোবাল সুপার লিগের শিরোপা জয় করে দেশবাসীকে গর্বিত করেছে। এই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি ছিল তাদের স্থানীয় ক্রিকেটারদের অসাধারণ পারফরম্যান্স। রংপুরের হেড কোচ মিকি আর্থার মনে করেন, বিপিএলেও স্থানীয় ক্রিকেটাররাই সাফল্যের প্রধান নিয়ামক হিসেবে আবির্ভূত হবে।
গ্লোবাল সুপার লিগে রংপুর রাইডার্সের জয়ে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। এটি দলে স্থানীয় ক্রিকেটারদের প্রতি মিকি আর্থারের আস্থা আরও বাড়িয়েছে। বিপিএলের প্রস্তুতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা স্থানীয় খেলোয়াড়দের দিকে নজর দিচ্ছি। বিদেশি ক্রিকেটাররা গুরুত্বপূর্ণ হলেও স্থানীয় ক্রিকেটারদের ওপর ভর করেই দলগুলো পার্থক্য গড়ে তুলবে। গ্লোবাল সুপার লিগের মতো বিপিএলেও আমরা এই ছন্দ ধরে রাখতে চাই।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘স্থানীয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে আমরা ইতোমধ্যে কিছু দিন কাজ করেছি। তাদের শক্তি ও দুর্বলতা সম্পর্কে আমাদের ভালো ধারণা আছে। এই প্রস্তুতি আমাদের বিপিএলে বাড়তি সুবিধা দেবে।’
গ্লোবাল সুপার লিগ অনুষ্ঠিত হয়েছিল গায়ানায়, যেখানে মিরপুরের মতো কম স্কোরের উইকেট দেখা গেছে। এই অভিজ্ঞতা বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করেন মিকি আর্থার। তিনি বলেন, ‘গায়ানার মতো উইকেটের কারণে বিদেশি খেলোয়াড়দের মানিয়ে নিতে সুবিধা হবে। খুশদিলের মতো ক্রিকেটাররা এখানে আগে খেলেছে, তাই তাদের অভিজ্ঞতা কাজে আসবে। তবে স্টিভেন টেলরের জন্য এটি নতুন অভিজ্ঞতা হতে পারে। আশা করি, সেও দ্রুত মানিয়ে নেবে।’
গায়ানার উইকেটের অভিজ্ঞতা রংপুর রাইডার্সের স্থানীয় ক্রিকেটারদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। লো স্কোরিং উইকেটে ধৈর্য এবং পরিকল্পনা মেনে খেলার দক্ষতা এই ধরনের টুর্নামেন্টে দলের জন্য বড় ফ্যাক্টর হতে পারে।
বিপিএলকে কেন্দ্র করে রংপুর রাইডার্স দলটি আরও শক্তিশালী হয়েছে বলে দাবি করেন মিকি আর্থার। তিনি জানান, ‘আমরা গ্লোবাল সুপার লিগের পারফরম্যান্সকে একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করতে চাই। বিপিএলের জন্য দলে ভালো সমন্বয় রয়েছে। প্রতিটি দলের স্কোয়াডই শক্তিশালী।’
আরও পড়ুন:
» বিপিএল ২০২৫: পাকিস্তানী তারকাদের নিয়ে বিপাকে ফ্রাঞ্চাইজিগুলো
» হামজার লেস্টার সিটির ম্যাচসহ আজকের খেলা (২৯ ডিসেম্বর ২৪)
তিনি আরও বলেন, ‘বিপিএলে প্রতিটি একাদশে সাতজন স্থানীয় ক্রিকেটার থাকা বাধ্যতামূলক। এটি দলগুলোর জন্য বাড়তি সুবিধা দেবে। কারণ, স্থানীয় ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সের ওপরই পুরো দলের সাফল্য নির্ভর করবে। আমরা সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়েছি এবং নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলব।’
বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বরিশালের নাম উল্লেখ করেছেন মিকি আর্থার। তিনি বলেন, ‘বরিশাল দলে এমন কিছু খেলোয়াড় রয়েছে, যারা জাতীয় দলের অংশ এবং অভিজ্ঞ। তাদের বিদেশি রিক্রুটও অসাধারণ। এই দলটিকে অতিক্রম করা কঠিন হতে পারে।’
তবে ২০ ওভারের ক্রিকেট যে সবসময়ই অনিশ্চয়তার খেলা, সে কথাও স্মরণ করিয়ে দেন আর্থার। তিনি বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যেকোনো দল যেকোনো দিন জিততে পারে। তাই পরিকল্পনা ও কার্যকর দলগত প্রচেষ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন:
» তারকাদের অনুপস্থিতিতে চ্যালেঞ্জের মুখে চিটাগং কিংস
» কনস্টাসের অভিষেক সাফল্যে বাংলাদেশি কোচ তাহমিদের অবদান
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) শুধু দেশীয় ক্রিকেটারদের জন্য নয়, বরং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের জন্যও একটি বড় প্ল্যাটফর্ম। এখান থেকে স্থানীয় খেলোয়াড়রা নিজেদের প্রতিভা প্রকাশের সুযোগ পান। মিকি আর্থারের মতে, এই প্ল্যাটফর্মে স্থানীয় খেলোয়াড়রা ভালো পারফর্ম করলে ভবিষ্যতে জাতীয় দলেও তাদের অবস্থান সুসংহত হবে।
বিপিএল নিয়ে আশাবাদী মিকি আর্থার বলেন, ‘এই লিগ শুধু দলগুলোর জন্য নয়, বরং বাংলাদেশের ক্রিকেটের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় খেলোয়াড়দের প্রস্তুতি এবং তাদের মানসিক দৃঢ়তা ভবিষ্যতে জাতীয় দলকে আরও শক্তিশালী করবে।’
বিপিএল শুরুর আগে দলগুলোর প্রস্তুতি এবং স্থানীয় ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সের ওপরই নির্ভর করবে এবারের আসরের গতি-প্রকৃতি। রংপুর রাইডার্স তাদের অভিজ্ঞতা ও পরিকল্পনার মাধ্যমে শিরোপার অন্যতম দাবিদার হয়ে উঠতে পারে।
ক্রিফোস্পোর্টস/২৯ডিসেম্বর২৪/আইআর/এফএএস