অনেক আশা নিয়ে শুরু করা বিশ্বকাপ হতাশায় শেষ হওয়ার পথে। আর মাত্র দুটি ম্যাচ খেলে দেশে ফিরবে বাংলাদেশ দল। টানা হার আর ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করে লজ্জাকে সঙ্গী করে দেশে ফিরবে সাকিব আল হাসানের দল। সবাই যখন ব্যর্থ হয়ে মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়ছেন, তখন একরাশ হতাশা নিয়ে আকাশের দিকে তাকাচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। যাকে দেখে মনে হচ্ছে এক ক্লান্ত ও নিঃসঙ্গ পথচারী।
তানজিদ তামিম, লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্তসহ বাংলাদেশের পুরো ব্যাটিং লাইন যখন পুরোপুরি ব্যর্থ, তখন ব্যতিক্রম কেবল একজন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। যার বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়া নিয়েই শঙ্কা ছিল। সেই শঙ্কা-সমালোচনার জবাব দিয়েছেন ব্যাট দিয়ে। বড় আসর মানেই যেন অন্য এক মাহমুদউল্লাহ। এই মঞ্চে ধারাবাহিকতার অপর নাম তিনি।
সর্বশেষ পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫৬ রানের ইনিংসটি দিয়ে একটি বিরল রেকর্ডও করেছেন মাহমুদউল্লাহ। বিশ্বকাপে টানা ১৭ ম্যাচে ন্যূনতম ২০ রান করেছেন তিনি। টানা ১৩ ম্যাচে ন্যূনতম রান করে এ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি ওপেনার ম্যাথু হেইডেন, তৃতীয় স্থানে দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার এবি ডি ভিলিয়ার্স (টানা ১২ ম্যাচ)। তাদের পরে আছেন লঙ্কান কিংবদন্তি অর্জুনা রানাতুঙ্গা ও রিকি পন্টিং। উভয়ই টানা ১১ ম্যাচে করেছেন ন্যূনতম ২০ রান।
এবারের বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহর শুরু হয়েছিল নিউজিল্যান্ডের ৮ নম্বরে ব্যাটিং করে সেই ম্যাচে ৪৯ বলে ৪১ রান করেন তিনি। ভারতের বিপক্ষে পরের ম্যাচে সাতে নামানো হয় তাকে, ৩৬ বলে ৪৬ রান করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৬ নম্বরে পাঠানো হলে লোয়ার অর্ডারদের সঙ্গী করে ১১১ রানের স্মরণীয় এক ইনিংস খেলেন।
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আবার সাতে পাঠানো হয় তাকে। সে ম্যাচে এবারের আসরের সর্বনিম্ন ২০ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। এই ধারাবাহিকতার জন্যই গতকাল পাঁচে পাঠানো হয় রিয়াদকে। এখানেও ভালোই করেন তিনি। বিপর্যয়ের মুখে ৫৬ রানের নান্দনিক এক ইনিংস খেলেন।
অথচ এই মাহমুদউল্লাহ বিশ্বকাপের আগে ছয় মাস জাতীয় দলের বাইরে ছিলেন। তবে জায়গা হারানোর জন্য কাউকে দোষারোপ না করে নীরবে মিরপুরে কঠোর পরিশ্রম করে গেছেন। মাঠে সবাই যখন ক্রিজ ছেড়ে আউট হয়ে বেরিয়ে যান, তখন মাহমুদউল্লাহ আকাশের দিকে তাকান। সেখানে হয়তো থাকে হতাশা, ক্ষোভ, দুঃখ অভিমান আর দলের প্রতি ভীষণ একটা মায়া।
আরও পড়ুন: হারের বৃত্তে বাংলাদেশ, সহজ জয় পেল পাকিস্তান
ক্রিফোস্পোর্টস/১নভেম্বর২৩/এজে