বয়সটা গিয়ে ঠেকেছে ৩৬ বছরে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে অভিজ্ঞদের একজন মুশফিকুর রহিম। তবে নিজের ব্যাটিংয়ে মোটেও বয়সের আঁচ পড়তে দেন না, বরং ব্যাটিংয়ে মেলে ধরেন নিজের অভিজ্ঞতার ষোলকলা।
টেস্ট ক্রিকেটে তার ব্যাটে রয়েছে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি’র মালিকও তিনি। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের তালিকায় সেরার নামটাও মুশফিকুর রহিম।
২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্টে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি’র দেখা পান মুশফিক। যা একই সঙ্গে বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসেরও প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে আরো একবার ডাবল সেঞ্চুরি’র খুব কাছে গিয়েও ছুঁতে পারেননি ক্যারিয়ারের চতুর্থ ডাবল সেঞ্চুরি।
আরও পড়ুন:
» নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নতুন সূচি : এক নজরে বাংলাদেশের ম্যাচ
» রাওয়ালপিন্ডিতে ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের পর প্রশংসার আসনে বাংলাদেশ
৩৪১ বলে ২২ চার ও এক ছয়ে ১৯১ রানে থামতে হয় মুশফিকুর রহিমকে। তবে হয়েছেন ম্যাচসেরা। তাই আক্ষেপ কেবল ডাবল সেঞ্চুরি না পাওয়া, তবে সেই আক্ষেপ হয়ত ফিকে হয়ে গেছে রাওয়ালপিন্ডিতে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়ের দিনে। পাকিস্তানরে ঘরের মাটিতে ১০ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
রাওয়ালপিন্ডিতে পঞ্চম দিনের খেলায় বাংলাদেশের দুর্দান্ত ও শৃঙ্খল বোলিংয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা শাকিল ফিরে গেছেন শূন্য রানে। রানের খাতা খুলতে পারেননি সালমান আলী আগাও। সুবিধা করতে পারেনি অধিনায়ক শান মাসুদ ও বাবর আজম।
তবে কেবল ব্যতিক্রম ছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত ব্যাট করা দ্বিতীয় ইনিংসেও হেসেছে রিজওয়ানের ব্যাট। কিন্তু তাতেও বাংলাদেশের জয় আটকানো সম্ভব হয়নি। জয়ের জন্য বাংলাদেশকে মাত্র ৩০ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় পাকিস্তান। জবাবে ১০ উইকেট হাতে রেখেই ইতিহাসের পাতায় নাম লেখায় বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন:
» এমন দুর্যোগ যেভাবে ছুঁয়ে গেল ক্রীড়াঙ্গণ
» পাকিস্তান ক্রিকেট দলে বড় রদবদলের আভাস!
তবে সেখানেই থেমে থাকেনি বাংলাদেশ। এমন টেস্ট জয় উৎসর্গ করা হয়েছে ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে নিহত শহিদদের স্মরণে। আবার এমন দিনকে ভিন্নভাবে স্মরণীয় করে রাখলেন মুশফিকুর রহিম। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের ম্যাচসেরার পুরস্কারের অর্থ দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যার্তদের সহায়তা ব্যয় করার ঘোষণা দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। একই ঘোষণা দিয়ে রাখলেন উইকেটকিপার ব্যাটার লিটন দাসও।
মাঠের ক্রিকেট দেশের হাল ধরার পাশাপাশি এবার দুর্যোগেও দেশের প্রয়োজনে হাল ধরেছেন মুশফিক। তাই তো ক্রিকেটার পরিচয়ের পাশাপাশি মানবিক পরিচয়েও দেশের বন্যার্ত মানুষের পাশে থাকছেন তিনি।
অবশ্য রাওয়ালপিন্ডির ঐতিহাসিক জয়ে আরো এক মাইলফলক অর্জন করেছেন মুশফিক। এই টেস্টের মাধ্যমে বাংলাদেশের জার্সিতে সব সংস্করণ মিলিয়ে ১৫ হাজার রানের মালিক এখন মি. ডিপেন্ডেবল। শুধু তাই নয়, ২০০৫ সালে অভিষেক হওয়া ক্রিকেটারদের মধ্যে এখনো টেস্ট খেলছেন, এমন ক্রিকেটার একজনই- মুশফিকুর রহিম।
ক্রিফোস্পোর্টস/২৭আগস্ট২৪/টিএইচ/বিটি