ঢাকা মেট্রো ও রংপুর বিভাগের ফাইনালের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ন্যাশনাল ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) টি-টোয়েন্টির প্রথম আসর। গতকাল মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) ফাইনালে ঢাকাকে ৫ উইকেটে হারিয়ে প্রথম আসরের শিরোপা ঘরে তুলেছে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক আকবর আলীর নেতৃত্বাধীন রংপুর।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এনসিএল টি-টোয়েন্টির ম্যাচগুলো বেশ জমজমাট হয়েছে। বিশেষ প্রথম দিকের ম্যাচগুলোতে ব্যাটাররা বেশি সুবিধা পাওয়ায় হাই-স্কোরিং ছিল। তবে ফাইনালসহ শেষদিকের ম্যাচগুলো ছিল লো-স্কোরিং। সবমিলিয়ে এই টুর্নামেন্টে ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই আধিপত্য দেখা গেছে।
সদ্য সমাপ্ত এই টুর্নামেন্টে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে উজ্জ্বল ছিলেন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন জাতীয় দলের পরিচিত মুখ মোহাম্মদ নাঈম শেখ৷ ঢাকা মেট্রোর অধিনায়ক ১০ ম্যাচে ৩১.৬০ গড় ও ১৩৫ এর বেশি স্ট্রাইকে ৩১৬ রান করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
» ২০২৫ পিএসএলের প্লেয়ার্স ড্রাফটে মুস্তাফিজুর রহমান
» চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ : সূচি ঘোষণার পরও অনিশ্চত ফাইনালের ভেন্যু
সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন আলাউদ্দিন বাবু। রংপুরের জার্সিতে খেলায় এই বোলার ৯ ম্যাচে শিকার করেছেন ১৯ উইকেট। এছাড়া টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার জিতেছেন একসময়ে জাতীয় দলে খেলা আবু হায়দার রনি। ঢাকা মেট্রোর এই বোলিং অলরাউন্ডার ব্যাট হাতে ১২৩ রানের পাশাপাশি বল হাতে শিকার করেছেন ১৩টি উইকেট।
এই তিন ক্রিকেটারের মধ্যে নাঈম ও রনি জাতীয় দলে খেললেও আলাউদ্দিন বাবুর এখনো খেলা হয়নি। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে দীর্ঘদিন ধরেই খেলছেন। তবে সব ছাপিয়ে এই অভিজ্ঞদের ভিড়ে নজরকাড়া পারফরম্যান্স করেছেন বেশ কয়েকজন তরুণ ক্রিকেটার।
তরুণদের মধ্যে ব্যাটারদের তালিকায় আছেন ২০২৩ যুব এশিয়া কাপজয়ী ক্রিকেটার জিশান আলন। এই টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। সিলেটের হয়ে ৭ ম্যাচে ৪০. ১৪ গড় ও ১৫৮.৭৬ স্ট্রাইক রেটে ২৮১ রান করেছেন তিনি। যেখানে ১টি শতকের পাশাপাশি ২টি অর্ধশতক রয়েছে। আসরের সর্বোচ্চ ২২টি ছক্কাও এসেছে তার ব্যাট থেকে।
আরও পড়ুন:
» সেঞ্চুরি করেই রেকর্ডবুকে ভারতের নারী ক্রিকেটার
» ২০২৪ যেন তারকা ক্রিকেটারদের বিদায়ের বছর
আরেক তরুণ হাবিবুর রহমান আছেন তালিকার তিন নম্বরে। রাজশাহীর হয়ে ৭ ইনিংসে ৩৭ গড় ও ১৬০.৮৭ স্ট্রাইক রেটে ২৫৯ রান করেছেন তিনি। তালিকার পাঁচ নম্বরে আছেন সদ্য অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপজয়ী অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম। খুলনার হয়ে ৯ ইনিংসে ২৬.৩৩ গড় ও ১৩৬.৯৯ স্ট্রাইক রেটে ২৩৭ রান করেছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার।
বল হাতে নজর কেড়েছেন ২০ বছর বয়সী আহমদ শরীফ। চট্টগ্রামের হয়ে ৮ ইনিংসে শিকার করেছেন ১৭ উইকেট, যা টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। শরীফের পরেই আছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী স্পিনার রাকিবুল হাসান। ঢাকা মেট্রোর জার্সিতে ১০ ম্যাচে শিকার করেছেন টুর্নামেন্টের তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৫ উইকেট।
তবে রংপুরের অধিনায়ক আকবর আলীর কথা আলাদাভাবে না বললেই নয়। এবারের টুর্নামেন্টে দলের শিরোপা জয়ে বড় অবদান রেখেছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ব্যাট হাতে ৯ ইনিংসে ৩৪.৬৭ গড় ১৪৯.৬৪ স্ট্রাইক রেটে ২০৮ রান করেছেন তিনি। আর উইকেটের পেছনে ডিসমিসাল করেছেন টুর্নামেন্ট দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩টি। আর দারুণ নেতৃত্বের জন্য বরাবরই প্রশংসিত যুব বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়ক। এই টুর্নামেন্টেও অধিনায়ক হিসেবে দুর্দান্ত ভূমিকা পালন করেছেন আকবর।
এছাড়া এবারের এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে আরো বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার ব্যাট কিংবা বল হাতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছেন। সবমিলিয়ে বেশ কয়েকজন তরুণ ক্রিকেটারকে নিয়ে বড় সম্ভাবনা জেগেছে। সামনে বিপিএল রয়েছে। সেখানে নিজেদের প্রমাণ করতে পারলে খুব শিগগিরই দেখা যেতে পারে জাতীয় দলেও।
ক্রিফোস্পোর্টস/২৫ডিসেম্বর২৪/বিটি