গতকাল মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি জিতলেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইতিহাস গড়তে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু বৃষ্টি বাধায় তা আর সম্ভব না হলেও আগামীকাল (রবিবার) একই মাঠে হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় অর্থাৎ শেষ ম্যাচটি জিতে প্রথম বারের মত কিউইদের বিপক্ষে দেশের বাইরে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের আশা বুনছেন তাওহীদ হৃদয়।
গত কয়েক ম্যাচেই ২০ ওভারের সংস্করণে বেশ ভালো ক্রিকেট খেলছে টাইগাররা। তাই শেষ ম্যাচটি জেতাও অসম্ভব নয় মনে করেন বাংলাদেশের তরুণ এই ক্রিকেটার। আজকের ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানিয়েছেন তাওহীদ।
দলের ছন্দ ধরে রেখে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইতিহাস গড়তে উদগ্রীব হয়ে আছে সাকিববিহীন বাংলাদেশ। সংবাদ সম্মেলনে এসে তাওহীদ হৃদয় বলেন, ‘ম্যাচ নিয়ে আমাদের চিন্তা-ভাবনা আগের মতই ইতিবাচক আছে। সিরিজ জয়ের এটাই আমাদের মোক্ষম সুযোগ। আশা করছি, আমরা যে ফ্লোতে আছি সেটা চালিয়ে যেতে পারবো।’
২০২৩ সালটা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দারুণ কেটেছে টাইগারদের। এ বছরে খেলা ১৩ ম্যাচে ১০ জয়ের বিপরীতে ২ টি ম্যাচে হরেছে বাংলাদেশ। বাকি এক ম্যাচে ফলাফল আসেনি। বছরের শেষ ম্যাচেও ভাল সম্ভাবনাই দেখছেন তাওহীদ হৃদয়। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা বেশ ইতিবাচক আছি। দল ভাল খেলছে, ভাল ফল আসছে। সব কিছু যখন ভাল যায় তখন সবাই সবাইকে সমর্থন করে। এমনকি দলের কোচিং স্টাফ থেকে শুরু করে আমরা প্রত্যেকেই অনেক আত্নবিশ্বাসী থাকি। গত এক বছর ধরে এই সংস্করণে আমরা ভাল করছি। আমরা বিশ্বাস রাখছি আমাদের উপর। আশা করি এটাই আমাদের শুরু। সামনে আমরা আরও দাপটের সঙ্গে খেলতে চাই, আরও ভাল খেলতে চাই।’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে আরও দাপটের সাথে খেলার প্রত্যয় শোনা যায় তাওহীদ হৃদয়ের কণ্ঠে, ‘আসন্ন বিশ্বকাপের আগে সবগুলো ম্যাচই আমাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেরও আর বেশি সময় বাকি নেই। আবার বিশ্বকাপের আগে আমাদের হাতেও খুব বেশি ম্যাচ নেই। সামনে বিপিএলের পর আমাদের হয়তো দু’একটি সিরিজ হাতে আছে। সামনের বিশ্বকাপকে সামনে রেখে এটা আমাদের প্রতিটি প্লেয়ারের জন্যই অনেক বড় সুযোগ। আমি মনে করি, সবাই সেভাবেই কাজ করছে।’
পেশির চোটে পড়ায় শেষ ম্যাচে খেলেননি প্রথম টি-টোয়েন্টি জয়ে বড় ভূমিকা রাখা লিটন দাস। শেষ ম্যাচেও যার খেলার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ। এমতাবস্থায় দলের ব্যাটিং শক্তি খর্ব হয়েছে কি না এমন প্রশ্নে হৃদয়ের জবাব, ‘দাদা (লিটন) খুব ভাল ছন্দে ছিলেন… কিন্তু ইনজুরি তো আর কারো হাতে নেই। তার চোট নিয়ে ফিজিও এবং কোচ ভাল জানেন। তিনি কাল না খেললেও দলের বাকি ক্রিকেটারদেরই দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ২-৩ জন ভাল খেলতে পারলেই ম্যাচ ঘুরে যায়। কাল আমাদের ২-৩ জন ব্যাটসম্যান ভালো শুরু এনে দিলে আশা করি আমরা ভালো খেলবো ইনশাআল্লাহ।’
দলে যেসব সিনিয়ররা খেলেছেন তারা অনেক অবদান রেখেছেন। বিভিন্ন কারণে অনেকে হয়তো এখন দলের সাথে নেই। এটা এমন জায়গা সবাই হয়তো সব সময় থাকবেন না। এখন আমরা খেলছি, একটা সময় আমরাও হয়তো দলে থাকবো না। আমাদের দায়িত্ব আমরা যারাই দলের হয়ে খেলি, দলের জন্য সেরাটাই দেয়ার চেষ্টা করি। তখন কারা দলে আছেন বা নেই সেটা মাথায় থাকে না।’
দলে এখন অনেক সিনিয়ররাই নেই এরপরও প্রথমবারের মত বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের ঘরের মাঠে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জিতেছে। তাওহীদ এর কৃতিত্ব দেন দলের কোচ হাথুরু ও অধিনায়ক নাজমুল শান্তকে। ‘অবশ্যই এর বড় একটি কৃতিত্ব কোচ এবং অধিনায়কের। কারণ তারা সব সময়ই দল ও ম্যাচ নিয়ে পরিকল্পনা সাজায়। কখন কোন বিসয়টা দলের জন্য ভাল তা নিয়ে তারা পরিকল্পনা করে। আশা করি, অন্যরা আমাদের পরিকল্পনা সামনে আরও ভালোভাবে বাস্তবায়ন করতে পারবো। আমাদের চলমান প্রক্রিয়া ভবিষ্যতেও বজায় রাখতে পারবো।’
আরও পড়ুন: সাকিব নাকি শান্ত, ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন কে?
ক্রিফোস্পোর্টস/৩০ডিসেম্বর২৩/এমএস/এমটি