ব্রাজিল জাতীয় দলের বর্তমানে সময়টা মোটেই ভালো যাচ্ছে না। অন্তর্বর্তীকালীন কোচ ফার্নান্দো দিনিজের অধীনে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শেষ তিন ম্যাচেই হারের মুখ দেখতে হয়েছে নেইমার বিহীন ব্রাজিলকে। এর মধ্যে নিজেদের ঘরের মাঠে প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ হারার লজ্জার রেকর্ড গড়েছে সেলেসাওরা, তাও আবার সেই হার এসেছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার বিপক্ষে।
২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দক্ষিণ আমেরিকার পয়েন্ট টেবিলে পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের অবস্থান ষষ্ঠ স্থানে। এই অঞ্চল থেকে শীর্ষ ছয় দল সরাসরি বিশ্বকাপে সুযোগ পাবে। ফার্নান্দো দিনিজের অধীনে বর্তমান দলও নেইমারকে ছাড়াই নিজেদের মানিয়ে নিতে চেষ্টায় আছে। কিছু দিন আগেই নিশ্চিত হওয়া গেছে, হাঁটুর ইনজুরির কারণে আসন্ন ২০২৪ কোপা আমেরিকাতেও খেলতে পারবে না এই ব্রাজিলিয়ান পোস্টার বয়।
ব্রাজিলের বর্তমান পরিস্থিতি দেখলে পেলে নিজেও কষ্ট পেতেন বলে মন্তব্য করেছেন পেলের ছেলে এডিনহো। ফুটবলের রাজার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর প্রক্কালে সংবাদ সংস্থা এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন এই ফুটবল কিংবদন্তির ছেলে। পেলের সাত সন্তানের মধ্যে এডিনহো দ্বিতীয় সন্তান যিনি নিজেও একজন পেশাদার ফুটবলার ছিলেন। বাবার মত ব্রাজিলের ফুটবল ক্লাব সান্তোসে গোলরক্ষক হিসেবে খেলেছেন। ১৯৯৯ সালে পেশাদার ফুটবল থেকে অবসরে যান এডিনহো।
৫৩ বছর বয়সী এডিনহো জানান, ‘সেলেসাওদের এই সমস্যা এক রাতে হয়নি। এখানকার সমস্যাটা অনেক বড় এবং জটিল। আমাদের অবস্থান এখন নিম্নমুখী। ব্রাজিল জাতীয় দলে এখনো কয়েকজন তারকা খেলোয়াড় আছেন কিন্তু অতীতে এই সংখ্যাটা ছিল আরও বেশি।’
১৯৭৫ সালে পেলে ও তার স্ত্রী রোজমেরির মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। তখন এডিনহোও তার মায়ের সাথে নিউইয়র্কে চলে যান এবং মায়ের কাছেই বড় হতে থাকেন। যদিও বাবার শেষ বয়সের দিকে এডিনহো আবার পেলের কাছে ফিরে আসেন। কিছুটা দুঃখের সুরেই এডিনহো বলেন, ‘এই মুহুর্তে পেলে বেঁচে থাকলে ব্রাজিল জাতীয় দলের বর্তমান অবস্থা দেখে যে তিনি অনেক কষ্ট পেতেন, এতে কোন সন্দেহ নেই।’
পেলের ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছেন সান্তোসে। তার ক্লাবটিও ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ সময়পর মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ক্লাব ইতিহাসে ১১১ বছরের মধ্যে প্রথম বারের মত রেলিগেটেড হয়ে দ্বিতীয় বিভাগে নেমে গেছে তারা, ক্লাবের আর্থিক সংকটও প্রকট। সান্তোসের পরিস্থিতি নিয়েও এডিনহো মন্তব্য করেন, ‘আমি আসলে এখানে ইতিবাচক কিছু দেখছি না। ক্লাবের অন্য অনেকেই ক্লাব নিয়ে যে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল তাই এখন দেখতে পাচ্ছি। দিন শেষে এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক।’
২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন পেলে। ফুটবলের রাজার সাত সন্তান মিলে পারিবারিকভাবে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে পেলের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী তারা শুক্রবার সান্তোসে পালন করবে।
আরও পড়ুন: শনির দশা লেগেই আছে ব্রাজিল ফুটবলে, ফের ফিফার চিঠি
ক্রিফোস্পোর্টস/২৬ডিসেম্বর২৩/এমএস/এমটি