এবারের আসন্ন বাফুফে নির্বাচনে সহ-সভাপতির পদ সংখ্যা ৪ টি। এই ৪ টি পড়ের বিপরীতে প্রার্থী সংখ্যা রয়েছে ৬ জন। ৬ জন প্রার্থীর মধ্যে মাত্র দুইজন হলো সাবেক ফুটবলার। তাঁরা হলেন কিংবদন্তি সাবেক ফুটবলার সৈয়দ রুম্মান বিন ওয়ালী সাব্বির এবং জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার ও কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক। বাকি ৪ জন ফুটবলের সাথে তেমন ভাবে পরিচিত নয়।
ফুটবল ফেডারশনে থাকার কথা ফুটবলের সঙ্গে ভালোভাবে যুক্ত ব্যক্তিদের। কিন্তু বর্তমানে যারা দাড়িয়েছে তাঁদেরকে তেমনভাবে কেউ চেনে না। তবে সহ-সভাপতি পদে সাবেক দুইজন ফুটবলারের নাম থাকলেও তাঁরা বাকি ৪ জন ব্যক্তির অর্থসম্পদ এবং রাজনৈতিক শক্তির কারণে এদের থেকে পিছিয়ে রয়েছে। যদিও এরই মাঝে শফিকুল ইসলাম মানিককে প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিয়েছিল। কিন্তু তিনি প্রত্যাহার করতে নারাজ। ফলে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেতে হচ্ছে এই পদের লড়াইয়ে।
বাফুফে নির্বাচনে কাউন্সিলরদের একটা বড় ভূমিকা থাকে। আর এধরনের অধিকাংশই কাউন্সিলরই দলীয় হয় থাকে। আবার কিছু লোক বিশেষ সুবিধার কারণে চুপ থাকে। তবে এবার সহ-সভাপতি পদে থাকা সাবেক দুই ফুটবলারই একই কথা বলেন যে, ‘গত ১৫ বছর ধরে আমরা বঞ্চিত হয়ে আসতেছি। আমরা বিভিন্ন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছি। এখন আমাদেরকে কাজ করার সুযোগ দেওয়া উচিত। কারণ দীর্ঘদিন ধরে ফুটবলের সাথে জড়িত আছি। এখন কাউন্সিলরদের উচিত আমাদের পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়া।’
এবার এই দুই ফুটবলারের বাইরে যারা সহ-সভাপতি পদে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন তাঁদের একজন হলো লক্ষ্মীপুর জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী (হ্যাপি)। তিনি স্থানীয় বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানির বড় ভাই। ফলে ফুটবল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি না হয়েও জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন তিনি। এছাড়াও ১৩৩ কাউন্সিলরের মধ্যে ৪ ভাগের ১ ভাগ মতো বিএনপিপন্থি হওয়ায় হ্যাপির সুযোগও বেশি নির্বাচিত হওয়ার।
এছাড়াও সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন ২০০১ সালে বিএনপির শাসনামলে ব্রাদার্স ইউনিয়নের সঙ্গে কাজ করা সাব্বির আহমেদ আরেফ। আওয়ামী লীগ শাসনামলে বাফুফে কিংবা ক্লাব কোনোটার সঙ্গেই যুক্ত থাকতে পারেননি তিনি। এছাড়াও একটা সময় তাঁকে মাঠে অপ্রীতিকর ঘটনার জেরে বাফুফে থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছিল। তিনি মূলত ঢাকা মহানগর বিএনপির সাথে যুক্ত। ফলে ব্রাদার্সের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক সভাপতি পদে লড়াই করা তাবিথকে সাব্বিরের হয়ে অনুরোধ করেছেন। ফলে সাব্বিরও এখন সহ-সভাপতির লড়াইয়ে এগিয়ে।
এছাড়াও সহ-সভাপতি পদের লিস্টে রয়েছেন স্পোর্টস ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ফাহাদ করিম। ফুটবলের তেমন কোনো জ্ঞান না থাকলেও আর্থিক সামর্থ্য তাকে এগিয়ে রেখেছে।
সহ-সভাপতি পদের অন্য একজন প্রার্থী হলেন নাসের শাহরিয়ার জামান জাহেদী। যশোরে শামসুল হুদা একাডেমির ছোট একটা পদে থাকার পরিচিতি আছে তার। তাছাড়া বিলুপ্ত ঘোষিত সংসদের ঝিনাইদহ-২ আসনের সংসদ সদস্যও ছিলেন। এছাড়াও তিনি দেশের নামকরা ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যানও। ফুটবলের জ্ঞান না থাকলেও এত এত বাইরের পরিচিতি এবং আর্থিক সামর্থ্য তাকে এগিয়ে রেখেছে।
বাফুফে সভাপতি এবং সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে ফুটবল বিষয়ে বিভিন্ন জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা থাকার পরেও শীর্ষ পর্যায়ের ইতিবাচক সংকেত থাকা লাগে।
সহ-সভাপতি পদে ফুটবলের জ্ঞানকে তুচ্ছ করে রাজনৈতিক ও আর্থিক পরিচিতিটাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। বিগত ১৬ বছরে বাদল রায়, তাবিথ আওয়াল, মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, কাজী নাবিল, আতাউর রহমান ভুইঁয়া, আরিফ খান জয় এবং ইমরুল হাসানদের ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। যদিও এই ধরনের রাজনৈতিক ও আর্থিক পরিচিতির প্রভাবের কারণে নির্বাচন থেকে নিজেদের গুটিয়ে রাখে আনোয়ারুল হক হেলাল, শওকত আলী জাহাঙ্গীর এবং আব্দুর রহিম এর দক্ষ সংগঠকরা।
আরো পড়ুন : অবসরের পর সিএ থেকে সুখবর পেলেন ওয়ার্নার
ক্রিফোস্পোটর্স/২৫অক্টোবর২৪/এসআর