মনে আছে ভারত বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া বনাম আফগানিস্তান ম্যাচের কথা? ক্রিকেট প্রেমীদের এত সহজে ভুলে যাওয়ার কথা নয়। ভুলতে পারেননি খোদ আফগান তারকা ক্রিকেটার রশিদ খানও। কেননা সেদিন এমন এক ম্যাচের সাক্ষী হয়েছিল ক্রিকেট বিশ্ব যা হয়তো কখনও কল্পনাও করেনি কেউ। সেই ম্যাচের নায়ক গ্লেন ম্যাক্সওয়েল খেলেছিলেন অতিমানবীয় এক ইনিংস।
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সেদিন আগে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়াকে ২৯২ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছিল আফগান বাহিনী। রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ৯২ রানেই গুটিয়ে যায় অজিদের ৭ উইকেট। সেখান থেকে ম্যাচ জয় করা সম্ভব, তেমনটা হয়তো অস্ট্রেলিয়ার সবথেকে আশাবাদী মানুষটিও মন থেকে বিশ্বাস করতে পারেননি। তবে সে অকল্পনীয় কাজই একা হাতে করে দেখিয়েছেন ম্যাক্সওয়েল।
রীতিমতো বিধ্বস্ত অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১২৮ বল মোকাবিলা করে ২১ চার ও ১০ ছক্কায় ২০১ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন তিনি। ম্যাচের এক পর্যায়ে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের বিষয়ে যেখানে কল্পনা করাও কষ্টকর ছিল, সেই ম্যাচ তারা জিতে নেয় ১৯ বল ও ৩ উইকেট হাতে রেখেই। প্রায় গোটা ম্যাচ চোটের সঙ্গে লড়াই করে খেলে গিয়েছিলেন ম্যাক্সওয়েল।
সেঞ্চুরি করার আগেই পায়ের চোটে পড়েন তিনি। ইনিংসের বেশিরভাগ সময় কোন প্রকার ফুটওয়ার্ক না করে জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলে গিয়েছেন ম্যাক্সওয়েল। চোটের কারণে সিঙ্গেল ডাবল নেওয়ার অনেক সুযোগ থাকলেও সেগুলো এড়িয়ে কেবল বাউন্ডারি হাকানোর দিকে মনোনিবেশ করেন তিনি। এতে করে বিশ্বকাপ ইতিহাসের দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরিও নিজের নামে করেন ম্যাক্সওয়েল।
রীতিমতো আফগানিস্তানের মুখের জয় একাই সেদিন কেড়ে নিয়েছিলেন ম্যাক্সওয়েল। কেবল ম্যাচই নয়, বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার শেষ সুযোগটিও হাতছাড়া হয়েছিল আফগানদের। অনেক ক্রিকেট বোদ্ধার মতে বিশ্বকাপের সেই ম্যাচে খেলা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ইনিংসটি ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ইনিংস ছিল। যা দীর্ঘকাল মনে গেথে থাকবে ক্রিকেট ভক্তদের।
এবার সেই অতিমানবীয় ইনিংসটির কথা ফের মনে করিয়ে দিলেন আফগানিস্তান দলের তারকা ক্রিকেটার রশিদ খান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে আইসিসির প্রতিনিধিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারত বিশ্বকাপের সেই ম্যাচের কথা বললেন তিনি। ঘুমোতে যাওয়ার আগে এখনো অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের কথা চিন্তা করার কথা জানান এই লেগ স্পিনার।
আফগান লেগ স্পিনার রশিদ খান বলেন, ‘এখনও সেই ম্যাচের কথা ভাবলে সারা শরীরে কাঁটা দিয়ে ওঠে। ঘুমাতে যাওয়ার আগে ওই ম্যাচটার চিন্তা বারবার মনে আসে। যদি ওটা জিততে পারতাম, তাহলে হয়তো আমরাও সেমিফাইনালে যেতাম। অনেক কিছু শিখেছি সেদিনের ম্যাচ থেকে।’
এবার অবশ্য বিশ্বকাপের ফরমেট ভিন্ন। এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের যাত্রা শুরু হবে আগামী ৩ জুন থেকে। বিশ্বকাপে আফগানিস্তান রয়েছে ‘সি’ গ্রুপে। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে থাকছে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড, পাপুয়া নিউগিনি ও উগান্ডা।
আরও পড়ুন: টাইব্রেকারে হৃদয় ভাঙল রোনালদোর, কিংস কাপের চ্যাম্পিয়ন আল-হিলাল
ক্রিফোস্পোর্টস/১জুন২৪/এফএএস