ইউরোপিয়ান ক্লাসিকো কখনোই আপনাকে নিরাশ করবে না। দীর্ঘ ছয় বছর পর গতকাল ছিল (৩০ এপ্রিল) রিয়াল মাদ্রিদ বনাম বায়ার্ন মিউনিখের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে মহারণের রাত। আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হলেও রোমাঞ্চের কোন কমতি ছিল না। ভিনির জোড়া গোল এবং লেরয় সানে ও হ্যারি কেইনের গোলে শেষ পর্যন্ত কোন দলই জয়ের দেখা পায়নি।
প্রতিপক্ষের মাঠে যদিও এদিন তুলনামূলক ফেভারিট হিসেবেই খেলতে নামে রিয়াল মাদ্রিদ। কিন্তু শুরু থেকেই কার্লো আনচেলত্তির দলকে চেপে ধরে বাভারিয়ানরা। এমনকি ম্যাচের প্রথম তিন মিনিটের মধ্যেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল বায়ার্ন মিউনিখ। কিন্তু রিয়াল গোলরক্ষক আন্দ্রে লুনিন বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় সে যাত্রায় বেঁচে যায় সফরকারীরা। এভাবে প্রথম ১৫ মিনিট রিয়ালের রক্ষণভাগকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখে বায়ার্ন।
রিয়ালের সুযোগ আসে ম্যাচের ২৩ তম মিনিটে। সুযোগ আসে বলতে সুযোগ করে দেন লস ব্লাঙ্কোসদের জার্মান মিডফিল্ডার টনি ক্রুস। তার ডিফেন্স চেরা অসাধারণ থ্রু বল থেকে দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে গ্যালাক্টিকোসদের ১-০ তে লিড এনে দেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। আর এই গোলের মধ্য দিয়ে ইউসিএল সেমিফাইনালে টানা তিন ম্যাচে গোলের দেখা পেলেন এই ব্রাজিলিয়ান তারকা। প্রথমার্ধের বাকি সময়ে দুই দলই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ অব্যাহত রাখলেও কেউই আর প্রতিপক্ষের জালের দেখা পায়নি।
বিরতির পর ৫৩ তম মিনিটে লেরয় সানের আচমকা গোলে স্তব্ধ হয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ শিবির। রাইট উইংয়ে বল পেয়েই মেন্ডিকে কাটিয়ে তড়িৎ গতিতে বক্সের মধ্যে ঢুকেই আচমকা শটে রিয়ালের জাল কাঁপান এই জার্মান উইঙ্গার। বুলেট গতির শটে লুনিনকে পুরোপুরি পরাজিত করে বাভারিয়ানদের সমতায় (১-১) ফেরান সানে।
৫৭ মিনিটে ফের রিয়ালের ফুটবলার জামাল মুসিয়ালাকে ডি বক্সের মধ্যে ফাউল করে বসলে পেনাল্টি পায় স্বাগতিকরা। স্পট কিক থেকে বায়ার্নকে এগিয়ে দিতে কোন ভুলই করেননি দলের ইংলিশ স্ট্রাইকার হ্যারি কেইন। উল্লেখ্য, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চলতি আসরে সর্বোচ্চ গোল করা কেইন লস ব্লাঙ্কোসদের বিপক্ষে এই প্রথম গোলের দেখা পেলেন। এরপরও যেন আক্রমণের ধার কমছিল না বাভারিয়ানদের।
ম্যাচের ৭৫ তম মিনিটে বেলিংহাম ও ক্রুসের বদলি হিসেবে মাঠে নামেন ব্রাহিম দিয়াজ ও লুকা মদ্রিচ। এরপরই ফের নিজেদের স্বরূপে ফিরতে শুরু করে রিয়াল। ম্যাচের ৮২ মিনিটে বায়ার্নের বক্সে বল পায়ে বিপদজনক হয়ে ওঠা রদ্রিগোকে ফাউল করে বসেন ডিফেন্ডার কিম মিন জায়ে। ফলে পেনাল্টি পায় রিয়াল মাদ্রিদ। স্পট কিক থেকে নিজের দ্বিতীয় গোল করতে মোটেই ভুল করেননি ভিনি। শেষ পর্যন্ত বাকি সময়ে আর কোন বিপদ ঘটতে দেয়নি আনচেলত্তির শিষ্যরা। ফলে আক্রমণের ধার বাড়িয়েও ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বাভারিয়ানদের। ম্যাচসেরার পুরস্কার ওঠে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে জোড়া গোল করা ভিনিসিয়ুসের হাতে।
অমীমাংসিত প্রথম লেগের পর এবার সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে দ্বিতীয় লেগের লড়াইয়ে নামার অপেক্ষায় রিয়াল-বায়ার্ন। বাভারিয়ানরা কি পারবে বার্নাব্যুর দেয়াল টপকে ফাইনালে যেতে? ঘরের মাঠে রিয়ালও যে এক চুল পরিমাণ ছাড় দেবে না সেটাও তো জানা কথাই। এই সব কিছুর সমাধান মিলবে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে।
আরও পড়ুন: আইপিএলে মুস্তাফিজের শেষ ম্যাচসহ আজকের খেলা (১ মে ২৪)
ক্রিফোস্পোর্টস/১মে২৪/এসএ/এজে