ইউরোপের পাট চুকিয়ে বছরের শুরুতে রোনালদো যখন সৌদি ক্লাব আল নাসরে পাড়ি জমান তখন কতই না সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তাকে। অথচ দিব্যি ইউরোপের ফর্ম ঠিকই সৌদি আরবেও নিয়ে এসেছেন এই পর্তুগিজ তারকা। ইতোমধ্যে কিছু দিন আগেই ক্যারিয়ারে অষ্টম বারের মত এক বছরে করে ফেলেছেন ৫০ তম গোল।
সৌদি আরবের দুই জায়ান্ট ক্লাব আল নাসর এবং আল হিলাল থেকে মোটা অঙ্কের প্রস্তাব পেয়েছিলেন রোনালদো। তবে শেষমেশ আল নাসরেই যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন ম্যান ইউনাইটেড, রিয়াল মাদ্রিদ, জুভেন্তাসে খেলা এই তারকা ফুটবলার। সে মোতাবেক ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারী আল নাসরে যোগ দেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
সৌদিতে পাড়ি দিয়ে দিব্যি সময় কাটিয়ে দিচ্ছেন রোনালদো। ইতোমধ্যে গোলের রেকর্ড তো গড়েছেনই, শিরোপা উৎসবও করেছেন। দেশের হয়ে তো গোল করেই যাচ্ছেন। দেখতে দেখতে এক বছর পূর্ণ করার পথে আছেন সিআরসেভেন।
গত মঙ্গলবার রাতেই কিংস কাপে আল শাবাবের বিপক্ষে ১ টি গোল করেন ক্রিশ্চিয়ানো। আর এই গোলের মাধ্যমেই ক্যারিয়ারে অষ্টম বারের মত বছরে ৫০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। তার আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসির ক্যারিয়ারে বছরে ৯ বার ৫০ গোল করার কীর্তি আছে।
তবে রোনালদোর সৌদিতে পাড়ি জমানো নিয়ে আগে যারা সমালোচনায় মুখর ছিলেন তারা যেন এখন নিজেদের মুখ লুকানোর জায়গা খুঁজতে ব্যস্ত। কেননা রোনালদো তো থেমে নেই, দিব্যি সময় কাটিয়ে দিচ্ছেন। সবশেষ ম্যাচে গোলের পর আল নাসর তারকা তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে লেখেন, ‘দলের জন্য দারুণ এক জয়। ২০২৩ সালে পঞ্চাশতম গোলটি করতে পেরে আমি ভীষণ রোমাঞ্চিত। আমার পরিবার, সমর্থক এবং সতীর্থদের ধন্যবাদ আমাকে সমর্থনের জন্য। এ বছর গোল সংখ্যা আরও বাড়িয়ে নেয়ার সুযোগ আছে।’
চলতি বছরে রোনালদোর পর ব্রাজিলিয়ান পোস্টার বয় নেইমারও রোনালদোর ক্লাব প্রতিদ্বন্দ্বী আল হিলালে যোগ দেন। যদিও চোটে পড়ার কারণে কয়েক মাস ধরে মাঠের বাইরেই থাকতে হচ্ছে তাকে। এখনও নতুন ক্লাবের হয়ে খুব একটা দ্যুতি ছড়াতে পারেননি তিনি।
রোনালদোর পথ ধরে আরো বেশ কয়েক জন সৌদি প্রো লিগের বিভিন্ন ক্লাবে যোগ দিয়েছেন। তাদের মধ্যে সাদিও মানে, মার্সেলো ব্রোজোভিচ, করিম বেনজেমা, এনগোলো কান্তে, রবার্তো ফিরমিনো, রিয়াদ মাহরেজের মত ফুটবলাররা আছেন।
সদ্য বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন জাদুকর লিও মেসিকেও সৌদিতে ভেড়াতে আগ্রহী ছিল আল হিলাল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মেসি ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেয়ায় তা আর সম্ভব হয়নি।
মূলত সামনে সৌদিতে বিশ্বকাপ আয়োজন এবং মানবাধিকার প্রশ্নে নিজ দেশের ভাবমূর্তি বাড়ানোর জন্য সম্প্রতি ফুটবলে প্রচুর অর্থের বরাদ্দ করেছে সৌদি সরকার। যার সুফলও তারা রাতারাতিই পেয়েছে। ২০৩৪ ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক হয়েছে দেশটি। এত কিছু ইতিবাচকতার পর ২০২৪ সালে হয়তো আরো কিছু ফুটবলারকে সৌদি লিগে ভেড়ানোর প্রচেষ্টা চালাবে সৌদি ক্লাবগুলো।
আরও পড়ুন: ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে জয় ছাড়া আর কিছু ভাবছে না পিএসজি
ক্রিফোস্পোর্টস/১৩ডিসেম্বর২৩/এমএস/এমটি