দুই হাত নেই। তবুও খেলছেন ক্রিকেট। পা দিয়ে করছেন বোলিং এবং ঘাড় দিয়ে করছেন ব্যাটিং। এমনই এক ‘বিস্ময় ক্রিকেটারের’ দেখা মিলেছে ভারতের কাশ্মীরে, যার নাম আমির হোসেন। তার ব্যাটিং-বোলিংয়ের ভিডিও দেখে বিস্মিত হয়েছে ক্রিকেটপাড়া। এবার সেই ‘বিস্ময় ক্রিকেটারের’ সঙ্গে দেখা করলেন ভারতের কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার।
গত মাসে আমিরের ব্যাটিং-বোলিংয়ের ভিডিও দেখেছেন শচীন টেন্ডুলকার। এরপর তার প্রশংসা করে তার সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছিলেন শচীন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে লিখেছিলেন, ‘অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন আমির। এটা দেখে আমি মুগ্ধ। এটা ক্রিকেটের প্রতি তার ভালোবাসা এবং ইচ্ছাশক্তিকে তুলে ধরেছে। আশা করি একদিন তার সাথে দেখা হবে এবং তার নামের একটি জার্সি পাব। লাখো মানুষকে অনুপ্রেরণা দেওয়া এবং খেলার প্রতি আত্মনিবেদনের জন্য অভিনন্দন।’
এবার দেখা করার ইচ্ছাকে বাস্তে রূপ দিলেন শচীন। সম্প্রতি পরিবার নিয়ে কাশ্মীর ভ্রমনে গিয়েছেন তিনি। সেখানেই ভ্রমণের এক ফাঁকে আমিরের সঙ্গে দেখা করেছেন শচীন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন এই কিংবদন্তি। সেখানে দেখা যায়, সাক্ষাতের পর আমিরকে তার অটোগ্রাফসহ একটি ব্যাট উপহার দিয়েছেন শচীন। এছড়া তার পরিবারের সঙ্গেও দেখা করেছেন তিনি।
মাত্র সাত বছর বয়সে কারখানায় কাজ করতে গিয়ে দুই হাত হারান আমির। তবে এই দুর্ঘটনা ক্রিকেটের প্রতি তার ভালোবাসাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। তার প্রবল ইচ্ছাশক্তির কারণে অসম্ভবকে সম্ভব করতে পেরেছেন। এখন তার বয়স ৩৪ বছর। বর্তমানে জম্মু ও কাশ্মীরের প্যারা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক আমির।
এত অল্প বয়সে হাত হারানোর পরও প্রবল ইচ্ছাশক্তি নিয়ে প্যারা ক্রিকেটার হওয়া প্রসঙ্গে আমির বলেন, ওই দুর্ঘটনার পরও আমি আশাহত হইনি। অনেক পরিশ্রম করেছি। আমি কারও ওপর নির্ভরশীল নই, সব নিজে নিজেই করতে পারি। দুর্ঘটনার পর কেউ আমাকে কোনও সাহায্য করেনি। তবে আমার পরিবার সবসময় আমার পাশে ছিল। আমার খেলার জন্য তাদের থেকে অনেক সহযোগিতা পেয়েছি। আমি মনে করি যে, সৃষ্টিকর্তার জন্যই আমার পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। কারণ পায়ে বোলিং করা অনেক কঠিন। কিন্তু, আমি সকল কৌশল ও দক্ষতা শিখে নিয়েছি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯৭ সালে ওয়াঘামা গ্রামে নিজেদের পারিবারিক কারখানায় কাজ করার সময় এক দুর্ঘটনায় দুই হাত চিরতরে হারান আমির। তবে আশা না হারিয়ে তার ক্রিকেটীয় প্রতিভা ফুটিয়ে তোলতে চেষ্টা চালাতে থাকেন তিনি। ২০১৩ সালে তার ক্রিকেটীয় প্রতিভা এক শিক্ষকের নজরে আসে। এরপর সেই শিক্ষক তাকে প্যারা ক্রিকেটের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের টিকিট যেন সোনার হরিণ!
ক্রিফোস্পোর্টস/২৪ফেব্রুয়ারি২৪/এমটি