বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) গত আসর দিয়ে সবার নজরে আসেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার জাকের আলী। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের জার্সিতে ফিনিশিং রোলে বেশ কার্যকরী ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েছেন অনেকগুলো ম্যাচ। এরপরই জাতীয় দলের নির্বাচকদের নজর কেড়ে সুযোগ পেয়ে যান জাতীয় দলে।
মার্চে ঘরের মাঠে লঙ্কানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে জাতীয় দলের জার্সিতে যাত্রা শুরু হয় জাকেরের। এরপর আরে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। টাইগারদের প্রতিটি সিরিজেই সুযোগ পেয়েছেন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় অক্টোবরে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে টেস্ট অভিষেক ঘটে জাকেরের। এরপর নভেম্বরে আফগানিস্তান সিরিজ দিয়ে ওয়ানডেতেও যাত্রা শুরু করেন এই ২৬ বছর বয়সী ব্যাটার।
যদিও সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে বাদে বাকী সিরিজগুলোতে ব্যাট হাতে খুব একটা রাঙাতে পারেননি জাকের। তবে মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর আবারও জ্বলে উঠলেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ দিয়ে তিন ফরম্যাটেই নিজের জাত চিনিয়েছেন এই ব্যাটার।
আরও পড়ুন:
» এক মাসেরও বেশি সময় পর মাঠে ফিরছেন মুস্তাফিজ
» বিপিএলে থাকবে ২ বিদেশি আম্পায়ার, দেখা মিলবে আধুনিক প্রযুক্তিও
নতুন বোর্ডের অধীনে দেশের অন্যতম সেরা কোচ সালাউদ্দিনকে সিনিয়র সজকারী কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় টাইগার কোচিং প্যানেলে। জাতীয় দলের হয়ে ক্যারিবিয়ান সফরই ছিল তার প্রথম কাজ। এই সফরে টাইগারদের ব্যাটিং কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। আর কুমিল্লায় তার অধীনেই বিপিএল মাতিয়েছিলেন জাকের। আর তাকে জাতীয় দলে সুযোগ দেওয়ার ব্যাপারেও আলোচনা তুলেছিলেন সালাউদ্দিন। তাই জাকের জাতীয় দলে ভালো খেললে তার খুশি হওয়াটাই স্বাভাবিক।
জাতীয় দলের হয়ে অভিষেকের পর জাকেরের সময়টা ভালো না কাটলেও বছরের শেষদিকে এসে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে স্মরণীয় একটি সফর কাটিয়েছেন। এই মিডল অর্ডার ব্যাটারের এমন পারফরম্যান্সে উচ্ছ্বসিত সালাউদ্দিন। এবার নিজেই জানালেন তার সফলতার কারণ।
সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমি অনেকদিন ধরেই জাকেরকে চিনি। তাকে আমার বেশ বুদ্ধিমান মনে হয়েছে। সে বিভিন্ন পজিশনে খেলে অভ্যস্ত। আর মাঠে তাকে কোন ভূমিকায় কীভাবে খেলতে হবে সেটাও জানে। আর এটা হয়েছে তার নিজস্ব যোগ্যতায়। সে ওইভাবে চিন্তা করেই বড় হয়েছে এবং সে জানে কখন কী করতে হবে। তার মতো এই ম্যাচুরিটিটা আমাদের অন্যান্য ব্যাটারদের মাঝেও আসবে, আর তাহলে দল হিসেবে আমরা আরো ভালো করতে পারবো।’
জাতীয় দলের জার্সিতে এখনো এক বছর হয়নি জাকেরের। সামনে আরো লম্বা পথ পাড়ি দিতে হবে তাকে। তবে জাকেরের এই সামর্থ্য তাকে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহায্য করবে এবং আরো দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে মনে করেন সালাউদ্দিন, ‘দলের সবাইকেই ভবিষ্যতে আরও ভালো অবস্থায় দেখতে চাই। এখানে কেউ নির্দিষ্ট নয়, পুরো দলটাই তো আমার। জাকের যেভাবে খেলে যাচ্ছে, ব্যাটার হিসেবে তার যে অভিজ্ঞতাটা ও পরিস্থিতি বুঝে ক্রিকেট খেলার যে সামর্থ্যটা আছে সেটা তাকে হয়ত অনেক দূর নিয়ে যেতে পারে।’
প্রসঙ্গত, সদ্য সমাপ্ত ক্যারিবিয়ান সিরিজে তিন ফরম্যাটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক জাকের। টেস্টে ৪ ইনিংসে ১৭৬ এবং ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে সমান তিনটি করে ইনিংস মিলিয়ে যথাক্রমে ১১৩ ও ১২০ রান করেছেন তিনি। সব মিলিয়ে ৪০৯ রান এসেছে জাকেরের ব্যাট থেকে।
ক্রিফোস্পোর্টস/২১ডিসেম্বর২৪/বিটি