ইতিহাসে একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে একশো’টি শতকের অনন্য কীর্তি রয়েছে শচীন টেন্ডুলকারের । ভারতের ‘ক্রিকেট ঈশ্বর’ হিসেবে খ্যাত শচীনের ক্যারিয়ারজুড়ে যেন রেকর্ডের কমতি নেই। এবার দীর্ঘ সময় পর শচীনের ঘরোয়া ক্রিকেটে গড়া এক কীর্তি ভেঙে দিলেন ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের তারকা ক্রিকেটার।
লিটল মাস্টারের ক্যারিয়ারের অসংখ্য রেকর্ডের মধ্যে ভারতের ঘরোয়া লিগ রঞ্জি ট্রফিতে গড়া এক কীর্তি এতদিন ধরে অক্ষুণ্ণই ছিল। রঞ্জি ট্রফিতে মুম্বাইয়ের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে সেঞ্চুরি হাঁকানোর কীর্তি ছিল শচীন টেন্ডুলকারের। এবার সেই রেকর্ডটি নিজের নামে করে নিলেন ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে বিশ্বকাপে ৭ ম্যাচে ৩৬০ রান করা মুশির খান। মুশির ভারত টেস্ট দলে সদ্য অভিষিক্ত ব্যাটার সরফরাজ খানের আপন ভাই।
তবে মজার বিষয় হলো, মুশির এই রেকর্ডটি গড়েছেন স্বয়ং এত দিন ধরে রেকর্ডটি যার দখলে ছিল সেই শচীনের সামনেই। রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে মুম্বাই-বিদর্ভের মধ্যকার ম্যাচটি দেখতে স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে উপস্থিত হন মুম্বাইয়ের দুই লোকাল বয় শচীন টেন্ডুলকার ও রোহিত শর্মা। তাদের সামনে এমন কীর্তি গড়ার সুযোগটি হাতছাড়া করেননি এই তরুণ তুর্কি।
এর আগে রঞ্জি ট্রফির ১৯৯৪-৯৫ মৌসুমের ফাইনালে মুম্বাইয়ের হয়ে পাঞ্জাবের বিপক্ষে দুই ইনিংসে শতক হাকিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন লিটল মাস্টার শচীন। তারপর থেকে এতদিন অবধি সর্ব কনিষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে সেঞ্চুরির কীর্তি শুধু শচীনের দখলেই ছিল যা কি না মুশির ভেঙে দিলেন। তবে মুশির অবশ্য দুই ইনিংসেই শতক হাঁকাতে পারেননি। প্রথম ইনিংসে ৬ রান করে সাজঘরে ফেরা এই তরুণ ব্যাটার দ্বিতীয় ইনিংসে দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান আজিঙ্কা রাহানে ও শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গে জুটু গড়ে ১৩৬ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন। সঙ্গে আইয়ারের ৯৫ ও রাহানের ৭৩ রানে ভর করে এবং প্রথম ইনিংসে পাওয়া বড় রানের লিডের কল্যাণে বিদর্ভকে ৫৩৮ রানের বড় লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছে মুম্বাই।
তৃতীয় দিনে শতক হাঁকানো মুশিরের কণ্ঠে শচীনের সামনে কীর্তি গড়ার উচ্ছ্বাস, ‘আগে থেকে জানতামও না যে শচীন স্যার গ্যালারিতে বসে খেলা দেখছেন। আমার যখন ৬০ রান তখন বিগ স্ক্রীনে স্যারকে দেখতে পাই। রঞ্জির ফাইনালে শতক হাঁকানো আমার জন্য স্বপ্নের মত। সাথে চেয়েছিলাম শচীন স্যারকে যেন আমার ব্যাটিং দিয়ে মুগ্ধ করতে পারি। পাশাপাশি, ভারতের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারের সাথে ব্যাট করতে পেরে আমি গর্বিত।’
সবশেষ ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ব্যাটে-বলে আলো ছড়িয়ে প্রথম নজর কাড়েন মুশির খান। আসরটিতে ৭ ম্যাচে বল হাতে ৭ উইকেটের সাথে ব্যাট হাতে দুই সেঞ্চুরিসহ ৩৬০ রান করেন। বিশ্বকাপে আলো ছড়ানোর পর এবার রঞ্জি ট্রফিতেও নিজের জাত চেনালেন সরফরাজ খানের সহোদর তরুণ মুশির।
আরও পড়ুন: মিলারের বিয়ে পেছানোর নেপথ্যে টাকা, দাবি ওয়াসিম আকরামের
ক্রিফোস্পোর্টস/১৩মার্চ২৪/এমএস/এমটি