জিম্বাবুয়ের মাটিতে এর আগে নারী-পুরুষদের তিন ফরমেটের ক্রিকেট মিলিয়ে সর্বমোট ৪৫৫ টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা হয়েছে। তবে ইতিহাসে এবারই প্রথম জিম্বাবুয়ের মাটিতে হারারে স্পোর্টস ক্লাব স্টেডিয়ামে আয়োজিত হলো ফ্লাডলাইটের আলোয় দিবারাত্রির ম্যাচ। ঐতিহাসিক রাতে দেখা মিলল রোমাঞ্চকর ও নাট্যকীয়তায় ভরপুর একটি ম্যাচ।
যেখানে শেষ বলে ১ উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা। রেকর্ড গড়ে যে জয়ের নাটক বনে রইলেন সিকান্দার রাজা। ম্যাচ শেষে দুই দলের অধিনায়ক অকপটে স্বীকার করেন ম্যাচটি কতটা দুর্দান্ত ছিল। আইরিশ অধিনায়ক পল স্টার্লিং বলেন, ‘ম্যাচটি আসলেই অসাধারণ ছিল। ১ রানে হারের অনেক কারণ তুলে ধরতে পারবেন, তবে ম্যাচটি উপভোগ্য ছিল।’ ম্যাচ জয়ের নায়ক সিকান্দার রাজা সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘ইতিহাসের অংশ হতে পেরে ভালো লাগছে।’
ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিকদের ১৪৮ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেয় আয়ারল্যান্ড। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নিয়মিত উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। তবে উইকেটের এক প্রান্ত আগলে রাখেন জিম্বাবুয়ে ব্যাটিং লাইন আপের অন্যতম ভরসা সিকান্দার রাজা। ম্যাচে তিনি তুলে নেন নিজের ১২তম টি-টোয়েন্টি ফিফটি। যা জিম্বাবুয়ের হয়ে সর্বোচ্চ টি-টোয়েন্টি ফিফটির রেকর্ড।
এক পর্যায়ে শেষ ১২ বলে জয়ের জন্য জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। তবে দলের জয় নিশ্চিত করার আগেই ১৮ তম ওভারের তৃতীয় বলে মার্ক এডেয়ারকে কাট করতে গিয়ে কাভারে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় রাজাকে। ৪২ বলে ৬৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন তিনি। তার বিদায়ের পর শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৯ রান।
শেষ ওভারের প্রথম তিন বলে তিন রান দেন ব্যারি ম্যাকার্থি। চতুর্থ বলে রিচার্ড এনগারাভা চার হাকালে শেষ দুই বলে প্রয়োজন থাকে দুই রান। পরের বলেও আড়াআড়ি ব্যাট চালান তিনি। বৃত্তের ভেতর থাকা ফাইন লেগকে সহজেই টপকে যাবে বলেই মনে হচ্ছিল শটটি। তবে মাথার ওপর থেকে ছোঁ মেরে উল্টোদিকে ডাইভ দিয়ে এডেয়ার নেন দুর্দান্ত এক ক্যাচ।
ক্যাচ নিতে গিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মাঠ থেকে উঠে যেতে হয় এডেয়ারকে। তবে তখনও সবার নজর থাকে শেষ বলের দিকে। যেখানে জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন হয় দুই রানের এবং হাতে বাকি থাকে কেবল ১ উইকেট। শেষ বলে ব্লেসিং মুজারাবানির ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় উইকেটকিপার লরকান টাকারের দিকে। কিন্তু সেটি মিস করে যান তিনি। এতে করে জিম্বাবুয়ান ব্যাটাররা দৌড়ে প্রয়োজনীয় দুই রান পূরণ করে ঐতিহাসিক এই ম্যাচে জয় নিশ্চিত করে।
এই ম্যাচে আইরিশ বোলার মার্ক এডেয়ার টি-টোয়েন্টিতে রশিদ খানের পর দ্বিতীয় দ্রুততম বোলার হিসেবে ১০০ টি-টোয়েন্টি উইকেট শিকার করেন। যেই রেকর্ড গড়তে এডেয়ার খেলেছেন ৭২ ম্যাচ। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয়টি অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল শনিবার একই মাঠে।
আরও পড়ুন: এবার ব্রাজিলকে দুঃসংবাদ দিচ্ছে ফিফা! সিবিএফ প্রেসিডেন্ট ছাঁটাই
ক্রিফোস্পোর্টস/৮ডিসেম্বর২৩/এসএফ/এজে