নাটকীয়তায় ভরপুর এক ম্যাচ দেখল মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে। নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে দারুণ কিছু মুহূর্তের সাক্ষী হল ক্রিকেটপ্রেমীরা। পিছিয়ে পড়েও যে ধৈর্য ও পরিশ্রমের মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়া যায় সেটারই নজির গড়লো নিউজিল্যান্ড। অন্যদিকে সফলতার কাছে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছে শ্রীলঙ্কা।
দুদলের জন্যই শিক্ষণীয় একটি ম্যাচ ছিল এটি। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৮ রানে হেরেছে শ্রীলঙ্কা। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৭২ রান তোলে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ১৬৪ রান তুলতে সক্ষম হয় লঙ্কানরা।
আগে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই হোঁচট খেতে থাকে স্বাগতিকরা। প্রথম ১০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৬৫ রান তুলতে পারে কিউইরা। টপ অর্ডারদের ব্যর্থতার খরা খাটিয়ে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে ব্লাক ক্যাপসরা। এ সময় ব্যাটিংয়ে ছিলেন ড্যারিল মিচেল ও মাইকেল ব্রেসওয়েল। এই দুজনের ১০৫ রানের অনবদ্য জুটিতে শেষ পর্যন্ত লড়াকু পুঁজি সংগ্রহ করেন নিউজিল্যান্ড।
আরও পড়ুন:
» তামিমের কল পেয়েই বিপিএলে শাহীন আফ্রিদি
» বিপিএলে মাশরাফির ভবিষ্যৎ কী? জানালো সিলেট স্ট্রাইকার্স
এদিন ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ১০৫ রান করে আরও একটি রেকর্ড গড়েছেন এই দুই কিউই ব্যাটার। টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডের জার্সিত এর আগে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রান ছিল ৮৫। এর আগে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম এবং লুক রনকি এই রান করেন। আর এদিন ব্যাট হাতে রেকর্ড গড়ার দিনে ম্যাচের চিত্রই পাল্টে দেন মিচেল ও ব্রেসওয়েল জুটি।
ড্যারিল মিচেল ৪২ বলে ৬২ এবং মাইকেল ব্রেসওয়েল ৩৩ বলে ৫৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন। যদিও শেষ ওভারে এসে আবারও ছন্নছাড়া পারফর্ম করে কিউইরা। শেষ ওভারে মাত্র ১ রানের বিপরীতে ৩ উইকেট হারায় কিউইরা। শ্রীলঙ্কার হয়ে ২টি করে উইকেট নেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মহেশ থিকসানা এবং বিনুরা ফার্নান্দো।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দারুণ করেছিল শ্রীলঙ্কা। ১৭৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়ে ১৩ ওভারেই ১২১ রান তোলেন কুশল মেন্ডিসরা। তবে ৩৬ বলে ৪৬ রান করে কুশল মেন্ডিস আউট হলে লঙ্কান ব্যাটিং লাইনে ধস নামা শুরু হয়। পরবর্তী ৪০ করতে গিয়ে বাকি ৮ উইকেট হারায় লঙ্কানরা। যেখানে মাত্র ১৩ বলের ব্যবধানে ৫ উইকেট বিলিয়ে দেয় তাঁরা।
ইনিংসের ১৮তম ওভার থেকে ২০ তম ওভারের মধ্যে এ সকল উইকেটের পতন ঘটে। মূলত পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিসের ব্যাটিং তাণ্ডবে পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে ৫৬ এবং ১০ ওভারে ১২১ রান তুলতে পারে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু কুশল মেন্ডিস আউট হওয়ার পরই পতন শুরু হয় লঙ্কানদের। কুশল মেন্ডিসের পর কোনো রান না করেই একে একে সাজঘরে ফেরেন কুশল পেরেরা ও কামিন্দু মেন্ডিস। সবার বিদায়ের মাঝে একপ্রান্ত আঁকড়ে ছিলেন পাথুম নিশাঙ্কা। ৬০ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৯০ রান করে আউট হলে লঙ্কানদের জয়ের আশাও ফিকে হয়ে আসে।
শ্রীলঙ্কার হয়ে দুই ওপেনার ছাড়া আর কেউ দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেনি। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৪ রান দরকার ছিল লঙ্কানদের। কিন্তু লঙ্কানরা ২ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৫ রান তুলতে সক্ষম হয়। এতে করে ২০ ওভারে ১৬৪ রানে আটকে যায় শ্রীলঙ্কা।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে ২০ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট শিকার করেন জ্যাকব ডাফি। তাছাড়া ২টি করে উইকেট নেন জাকারি ফকস এবং ম্যাট হেনরি।
একনজরে ম্যাচের ফলাফল–
নিউজিল্যান্ড: ১৭২/৮ (২০ ওভার)
শ্রীলঙ্কা: ১৬৪/৮ (২০ ওভার)
ফলাফল: নিউজিল্যান্ড ৮ রানে জয়ী
ক্রিফোস্পোর্টস/২৮ডিসেম্বর২৪/এসআর/বিটি